রিয়াজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ার নিত্যপণ্যের মূল্যের দাম ঊর্ধ্বগতি, থামার কোনো লক্ষণ তো নেই উল্টো দফায় দফায় বাড়ছে দাম। এতে বেকায়দায় পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষগুলো। এর মধ্যে ভালো খাবার তো এখন নাগালের বাইরে। অবস্থা এমন যে- মাছ-মাংস ছুঁয়ে দেখতে পারছেন না মধ্য ও নিম্নবিত্তরা। ফলে বিপাকে পরেছেন তারা।
এসবের বাইরে সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। আর চিনি, আটা, ময়দা বাড়তি দামে আটকে রয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে বেড়েছে ডিম, তৈল, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম।
আজ সোমবার (০৮) সকালে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন এলাকার বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চিনি ১৩০ টাকা, সোয়াবিন তৈল ১৯৮ টাকা, লিটার, জিরা ৭৫ টাকাসহ বিভিন্ন মসলার দাম বেড়েছে দফায় দফায়। মাংসের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। খাসির মাংসের দাম প্রতিকেজি ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকা।
এ দিকে টানা অস্থির ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা লেয়ার মুরগি সোনালী মুরগিকে টপকে ৩৫০ টাকা ও সোনালী মুরগি ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ দিকে ডিমের দাম লাফিয়ে ৪৮ -৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সেই উত্তাপ ছড়িয়েছে মাছের বাজারেও। প্রকারভেদে সাধারণ চাষের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত।
অন্য দিকে ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশি পদের (উন্মুক্ত জলাশয়ের) মাছগুলোর দাম বেড়েছে ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত। তেলাপিয়া মাছ ২২০টাকা, রুই ২৮০-৩৫০টাকা, কাতলা ২৮০-৩৫০ টাকা, টাকি ৩২০, বাটা ২২০ টাকাসহ বিভিন্ন মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও সবজির বাজার যেন আকাশছোঁয়া দাম, প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, রসুন ১৬০, পেঁয়াজ ৬০, ভেন্ডি ৬০, করলা ৭০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, আলু ৩০ টাকাসহ বিভিন্ন সবজির দাম নাগাল ছাড়া।
বাজারে সাধারণত গরিব ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা ব্রয়লার মুরগি ও মাছের ওপর নির্ভরশীল। তাদের মধ্যে অনেকে এসব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবে ভেবে পাচ্ছিনা। এন এস রোড এর রিকশাচালক সোহেল বলেন, একটা দিন যে ভালো-মন্দ খাবো এখন সেই উপায় নেই। এগুলো দেখার কেউ নেই। আমাদের নিয়ে কেউ ভাবে না।
তিনি আরও বলেন, দিনে ৪৫০-৫০০ টাকা কামাই, এরমধ্যে যদি ২৫০ টাকায় মাছ কিনি, তাহলে অন্য খরচ কী দিয়ে হবে? সংসার ছেলে মেয়ে কিভাবে চালাবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মিউনিসিপালিটি বাজারের কাঁচা বাজার আড়ৎদার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, অতি খরা ও আবহাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের সবজির গাছ মরে যাচ্ছে ও ফলন কম হওয়ায় বাজারে মালের দাম বেড়েছে।
কুষ্টিয়া চেম্বার কমার্সের পরিচালক এস এম কাদেরী শাকিল বলেন, বাজার মনিটরিং টিমকে বাজারে নামতে হবে দেখতে হবে তাদের কি-না রেট কত আর বিক্রি করছে কত টাকায়। এটা ইচ্ছা করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়ানো হচ্ছে কি-না এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের বাজার মনিটরিং কমিটি আরও কঠোর মনিটরিং করলে নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রীর দাম নিয়ন্ত্রণ আসবে।
ভোক্তা বিকারের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মণ্ডল বলেন, আসলে কৃষি পণ্যগুলো ভোক্তা অধিকার দাম নির্ধারণ করে না এগুলোর দাম নির্ধারণ করতে পারে কৃষি অধিদপ্তর। সোয়াবিনের তৈল লিটারে ১২ টাকা বেড়েছে। আর চিনি সরকার নির্ধারিত রেটের থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। দু-এক দিনের ভিতরেই আমরা অভিযান চালাব।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমাদের বাজার মনিটরিং টিম আছে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তারা দেখবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড