• বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯  |   ২২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

৩৫ বছর ধরে হাটবাজারে গান করে সংসার চালান ভুট্টু মিয়া

  মাজেদুল ইসলাম হৃদয়, ঠাকুরগাঁও

০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪০
৩৫ বছর ধরে হাটবাজারে গান করে সংসার চালান ভুট্টু মিয়া

ছোট বেলার স্বপ্ন থেকে ১০ বছর বয়সে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার হাটবাজারে বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই গলার সুর ও টিনের কৌটার ভিতরে সাইকেলের চাকার বল ঢুকাইয়ে বাজনা বাজায় ও মুখ দিয়ে শিস বাজিয়ে বাঁশির সুর তোলেন এবং দর্শকদের গান গেয়ে শোনান। এতে দর্শকরা খুশি হয়ে যা টাকা দেন তা দিয়েই সংসার চালান তিনি।

এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া চাপাতি গ্রামের মৃত নিমাইঞ্জুর ছেলে ভুট্টু মিয়ার (৪০) কথা। ছোট বেলায় বাবা-মাকে হারান। তার পর থেকে কাজ করে খেতেন তিনি। কাজ করতে করতে দুর্ঘটনায় ডান হাতের হাড় ভেঙে যায় তার। বর্তমানে হাড় জোরা নিলেও হাত দিয়ে ভারি কোন কাজ করতে পারছেন না। তাই গানকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।

গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঠাকুরগাঁও শহরের তিতুমীর সড়কের পাশে ইউসিবি ব্যাংকের নিচে গান গাইতে দেখা যায় তাকে। জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় আব্দুর রহিম নামে এক দর্শক জানান, ভুট্টু মিয়াকে বিভিন্ন হাটবাজারে দেখেছি হাত দিয়ে কৌটা বাজিয়ে গান গাইতে। কিছু দিন আগে রোড বাজারে আমাদের দোকানের সামনেও গান করেছেন তিনি। কোনো বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই তার গলার সুর ও গান মুগ্ধ করে মানুষজনকে। তার প্রতিভা ভালো। এই প্রতিভাকে পুঁজি করেই তিনি সংসার চালাচ্ছেন।

এস এম মৌমিদ হাসান নামে এক যুবক বলেন, আমি রাস্তা দিয়ে হাটে যাচ্ছিলাম। অনেক মানুষজনের সমাগম দেখে আমিও দাড়িয়ে গান শুনছিলাম তার। তার গান গাওয়ার প্রতিভা দেখে সত্যিই আমি মুগ্ধ।

জয়নাল নামে আরেক দর্শক বলেন, তার গান যে কোনো মানুষকে মুগ্ধ করে। তাই খুশি হয়ে মানুষ ১০-২০ টাকা দেন। এতে তার সংসার চলে।

নওসেদ নামে আরেক দর্শক তার গান শুনে বলেন, মানুষটির প্রতিভা আছে। সহযোগিতা পেলে তিনি হয়তো ভালো কিছু করতে পারবেন।

ভুট্টু মিয়া বলেন, আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে সংসারে আমরা স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তান। রাস্তা ঘাটে ও বিভিন্ন হাটবাজারে গান গেয়ে দৈনিক ৩ থেকে ৪’শ আয় হয় ও আমার স্ত্রী দিন মজুরি দিয়ে যা আয় করেন তাতে করে কোন মতে সংসার চলে। যদি সহযোগিতা পেতাম তাহলে অন্তত তবলা বা ঢোল ও একতারা কিনতে পারতাম। টাকার অভাবে এসব কিনতে পারছি না। ভবিষ্যৎ ইচ্ছার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইত্যাদিতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে আমার। আর ইত্যাদিতে যাইতে পারলে সেখান থেকে হয়তো হানিফ সংকেত আমাকে কিছু না কিছু সহায়তা করবেন বলে আশা করছি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড