• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মঠবাড়িয়ায় শিক্ষকের দোকান ও বসতঘর ভাংচুরের ঘটনায় মামলা

  মো. রুম্মান হাওলাদার, মঠবাড়িয়ায়

২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৫৯
পিরোজপুর
শিক্ষকের দোকান ও বসতঘর ভাংচুর (ছবি : দৈনিক অধিকার)

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী বাজারে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ'র ডিসিআরকৃত ভোগদখলীয় দোকানঘর ও বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

ভাংচুরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের স্ত্রী আফরোজা বাদী হয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর মঠবাড়িয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার ১ নং আসামি মেহেদী হাসান মেরিন মিরুখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য।

(বৃহস্পতিবার) ৯ সেপ্টেম্বর নাপিতখালী মৌজার জে এল নং-২৬, খতিয়ান নং- ৭৩/১০৪ দাগ নং- ১১৮৭/১১৮৮/১১৮৯ এ মাসুম বিল্লাহ'র ভোগদখলীয় দোকানঘর ও বসতঘরে প্রতিপক্ষরা অনধিকার প্রবেশ করে হামলা ও ভাংচুর চালায়। আত্মরক্ষা করতে গিয়ে নারীরা শ্লীলতাহানির শিকার হয়। মাসুম বিল্লাহ আমুয়া এ সি গার্লস হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক এবং মিরুখালী গ্রামের মৃত. আলহাজ্ব আবুল হাসেম হাওলাদারের ছেলে।

সরেজমিনে জানা যায়, উপরোক্ত তফসিলভুক্ত সম্পত্তি মাসুম বিল্লাহ তার পিতা জীবিত থাকতেই ২০ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছে। ঢাকায় বসবাসরত মাশরিকুল আযম রবি ওরফে মিলন আরেক জনের ডিসিআরভুক্ত ভোগ দখলীয় ওই সম্পত্তি অনধিকারভাবে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের ভুল বুঝিয়ে ও প্রভাবিত করে ৮০ বর্গ মিটারের মধ্য থেকে ২০ বর্গমিটার অর্থাৎ ০.৫০ (দশমিক পাঁচ শূন্য) শতাংশ জমি ডিসিআর নেয়। ডিসিআর নিয়ে ৭ আগস্টের দিকে মাসুম বিল্লাহ'র ভাড়াটিয়া দোকানদারকে জোরপূর্বক নামিয়ে দেয়। এরপর তারা ৯ আগস্ট হামলা ও ভাংচুর চালায়। এতে উভয় পক্ষের একাধিক লোক জখম হয়।

মিরুখালী বাজারে বিরোধীয় ওই জমির পশ্চিমে এলজিইডি সড়ক,পূর্বে বাজারের রাস্তা,উত্তরে হাসানের দোকান, দক্ষিণে লতিফের দোকান। স্থানীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাশরিকুল আযম রবি ওরফে মিলন এবং মেহেদী হাসান মেরিন গংদের ওই জমিতে কখনোই কোন ভোগ দখল ছিল না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পূর্ব বিরোধের জের ধরে ভোগদখলীয় ডিসিআরভুক্ত জমির মধ্যে ফাঁক ফোকর খুঁজে নিজের নামে ডিসিআর নেওয়া মাশরিকুল আজম রবি ওরফে মিলন ঢাকায় বসবাস করেন। কোটি কোটি টাকার মালিক রবি বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। মিরুখালীতে তার কোটি টাকার বিলাসবহুল একটি বাড়ি। এতকিছু থাকতেও একজন স্কুল শিক্ষকের মাথা গোঁজার ঠাঁই ডিসিআরভুক্ত বসত ঘর ও দোকান ঘরের একাংশ ডিসিআরের নামে দখল করার চেষ্টাকে মেনে নিতে পারছে না অনেকেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সমাজ বিরোধী অনৈতিক কার্যাবলীর জন্য রবির বাবা আ. গফফার ০৫.০৯.১৯৯৫ খ্রি. তারিখে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে মাশরিকুল আজম রবি ওরফে মিলনকে সকল প্রকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত রাখেন। বিভিন্ন অভিযোগে ২৭.০৮.১৯৯৫ খ্রি. তারিখে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে ঢাকায় বসবাস করেন।

এদিকে ৯ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় রবি ওরফে মিলনের পক্ষে মৃত আবুল হাসেমের ছেলে মো. মহিউদ্দিন বাদী হয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. মাসুম বিল্লাহকে ১ নং আসামি করে মঠবাড়িয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- সিআর ২৯৭/২০২১। মামলাটি আমলে নিয়ে ১ নং আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেয় বিজ্ঞ আদালত।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান মেরিন জানান, ওই জমিতে মাশরিকুলদেরও অধিকার আছে। মাসুম বিল্লাহ গং শালিস ব্যবস্থ্যা অমান্য করায় এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি হয়। আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ১ নং আসামি হয়েছি। তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও মিলনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

অন্যদিকে মাসুম বিল্লাহ'র স্ত্রী আফরোজা জানান, মাশরিকুল আযম ওরফে মিলনের ৩১ (এম) ২০২০-২১ ডিসিআর বাতিল চেয়ে ১৭.০৬.২০২১ খ্রি. তারিখে সংশ্লিষ্ট অফিসে আবেদন করেছি। এর মধ্যেই ৯ সেপ্টেম্বর আমাদের দোকান ঘর ও বসত ঘরে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। নিজেদের অপরাধ ঢাকতে আমাদের নামে কোর্টে একটি মিথ্যা মামলা দেয়।

আরও পড়ুন : সরিষাবাড়ীতে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহা. নুরুল ইসলাম বাদল জানান, এ ঘটনায় উভয় পক্ষই মামলা করেছে। এরমধ্যে এক পক্ষের মামলা কোর্টে এবং আরেক পক্ষের মামলা থানায় দায়ের করেছে।

ওডি/এফই

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড