• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জেল থেকে বের হয়ে পুলিশ সেজে ছিনতাই করত ওরা

  হারুন আনসারী, ফরিদপুর

২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:৩৮
ফরিদপুর
আটককৃতরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

গাজীপুরের কাশেমপুর কারাগার থেকে পরিচয়। বের হয়ে সংঘবদ্ধভাবে মোটরসাইকেল ছিনতাই করতো এই চক্র। সাথে নগদ টাকা ও মালামাল।

টার্গেট ছিল দামি ও নতুন মোটরসাইকেলের দিকে যেখানে চালক একাই থাকত এবং গন্তব্য থাকত দূরবর্তী কোথাও। দলের সবাই সাভারের আশুলিয়া এলাকায় গাড়ির চালাত। সামনের গাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করার সময় পেছনে থাকত আরও একটি প্রাইভেট কার।

সাথে আরও থাকত ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাপ ও পুলিশের বিশেষ পোশাক। কাজ শেষে প্রাইভেটকারে করে পালাত ওরা। এমন একটি ঘটনার অভিযোগ পেয়ে সংঘবদ্ধ এই ছিনতাইকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের নিকট হতে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারসহ হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি, পুলিশের বিশেষ পোশাক ও লাঠি উদ্ধার হয়েছে।

রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন সরকার ও কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল জলিল উপস্থিত ছিলেন।

আটককৃতরা হলো- মধুখালীর বাগাটের জাকির হোসেন বিশ্বাসের ছেলে জুয়েল রানা (৩১), তার ভাই আল আমীন (৩০), আলফাডাঙ্গার কামার গ্রামের রবিউল আলমের ছেলে বাবুল আক্তার (৪৩), বালিয়াকান্দির আড়পাড়া গ্রামের বাল্লুক মৃধার ছেলে অশিক মৃধা (৩৭) ও আশুলিয়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে ইমরান হোসেন (২৩)।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জামাল পাশা জানান, মুন্নু শেখ (৩৫) নামে একজন এনজিও কর্মী ৯ সেপ্টেম্বর মোটরসাইকেলে ঢাকার বাড্ডা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাত ৯টার দিকে পাঁচ ছিনতাইকারী কানাইপুরের করিমপুর হাইওয়ে ব্রিজের ওপর থেকে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে ফেলে। তারপর প্রথমে তার সাথে থাকা বেতনের ৩৫ হাজার টাকা ও বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকা সাড়ে ১৯ হাজার টাকাসহ তার মোটর সাইকেলটি ছিনিয়ে তাকে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে ঘটনার শিকার মুন্নু শেখ বলেন, ছিনতাইকারীরা প্রথমে তার মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নিতে গেলে তার সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পরে তাকে পাজাকোলা করে গাড়িতে তুলে চোখ বেঁধে ফেলে। তার সাথে থাকা টাকা পয়সা কেড়ে নেওয়ার পর তাকে বাড়ি থেকে ফোন করে ২ লাখ টাকা পাঠানোর জন্য বলতে বলে। এরপর তিনি বাড়িতে ফোন করে যতো টাকা পারে পাঠাতে বলেন।

তিনি বলেন, টাকা পয়সা নেওয়ার পর ছিনতাইকারীরা চোখ বেঁধে তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিতে চাইলে তিনি তাদের চোখ খুলে নামিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।

উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এই চক্রের মূল মাস্টার মাইন্ড হচ্ছে জুয়েল রানা। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ১৬টি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় সাড়ে চার বছর সাজা খেটে কোরবানির ইদের আগে সে জেল হতে বেরে হয়। তার ভাই আল আমীন ছিনতাইকৃত টাকার ব্যবস্থাপনা করত। চক্রের কেউ গ্রেফতার হলে তাকে টাকা পয়সা খরচ করে বের করার দায়িত্বও ছিল আল আমীনের ওপর।

তিনি আরও বলেন, এই চক্রের অপর সদস্য বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা রয়েছে। সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুতে একটি ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে জুয়েল ও বাবুল জেলে যায়। সেখান থেকে তাদের সাথে অন্যদের পরিচয় হলে গত বছর জেলে বসেই তারা সংঘবদ্ধ এই দল গঠন করে।

আরও পড়ুন : কালিয়াকৈরে খুঁটিতে বেঁধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ

রাতের বেলায় একাকী মোটরসাইকেলে দূরবর্তী গন্তব্যে বের না হতে প্রেস ব্রিফিংয়ে সকলকে অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা।

ওডি/এফই

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড