সিনহা হত্যা : গণশুনানিতে ৯ প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ

কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় গণশুনানিতে ৯ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার উৎস ও কারণ উল্লেখ করে ২৩ আগস্টের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।

এ দিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এ সময় সরকার নির্ধারিত সময় ২৩ আগস্টের মধ্যেই সিনহা হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনা তদন্তে অনুষ্ঠিত গণশুনানি শেষে আজ রবিবার (১৬ আগস্ট) কক্সবাজারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন তিনি।

টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ক্যাম্প ইনচার্জের (সিআইসি) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে আজ ৯ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৬০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে তদন্ত কমিটি। এছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তিনবার।

তদন্ত কমিটির প্রধান আরও জানান, সিনহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার উৎস এবং কারণ যেমন তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা থাকবে। এরকম ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য বেশ কিছু সুপারিশও দেওয়া থাকবে তদন্ত রিপোর্টে।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রবিবার ঘটনাস্থলের কাছেই এই গণশুনানির আয়োজন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। সকালে শুরু হওয়া এই গণশুনানিতে ১১ জন প্রত্যক্ষদর্শী নিজেদের নাম নিবন্ধন করেন। এরমধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় মেজর সিনহার বোনের করা মামলায় পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং ২ নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে। তারা ছাড়াও আরও সাতজনকে এজহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে।

আলোচিত এই মামলায় অন্য আসামিরা হলো- এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এএসআই টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।

এই মামলার ৪ আসামি ও পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ সাতজন র‌্যাব হেফাজতে ৭ দিনের রিমান্ডে রয়েছে। প্রধান আসামি পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং ২ নম্বর আসামি টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত জেলা কারাগারে রয়েছেন।

আরও পড়ুন : সিনহা হত্যা : রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা

এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ গত ২ আগস্ট চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার কারণ ও উৎস অনুসন্ধান করবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মতামত দেবে। মন্ত্রণালয় প্রথমে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বললেও অতিরিক্ত আরও সাত কর্মদিবস সময় দিয়েছে।