• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিদ্যুৎ পাচ্ছে শরীয়তপুরের দুই উপজেলার ২০ হাজার মানুষ

  শরীয়তপুর প্রতিনিধি

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৫৪
শরীয়তপুর
বিদ্যুৎ সং‌যো‌গ উদ্বোধনকালে (ছবি : দৈনিক অধিকার)

৭০ বছর পর সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাচ্ছে পদ্মা নদী বেষ্টিত শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার নওপাড়া, চরআত্রা ও কাঁচিকাটা ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবার।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নড়িয়ার চরআত্রা ও নওপাড়ায় এ বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ এ. কে. এম এনামুল হক শামীম।

জানা গেছে, নওপাড়া ও চরআত্রা ইউনিয়ন পড়েছে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়। আর কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পড়েছে ভেদরগঞ্জ উপজেলায়। এ তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৭২ হাজার মানুষ বসবাস করে।

গত সংসদ নিবার্চনে এ. কে. এম এনামুল হক শামীম ওই চরগুলোতে নির্বাচনি গণসংযোগে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবি তোলেন স্থানীয়রা। নির্বাচিত হতে পারলে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে এমন প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। পরে সংসদ নির্বাচনের পর এনামুল হক শামীম ওই তিন ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন।

এ সময় সিদ্ধান্ত হয় মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। পরে শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে এনামুল হক শামীম সভা করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদী দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেওয়া হবে। পরে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওই তিনটি ইউনিয়নের কার্যক্রম মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে হস্তান্তর করা হয়। সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়।

২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে এ বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদনের ভিত্তিতে কাজ শুরু করেন মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সাবমেরিন ক্যাবলের কাজ শেষ।

এর পর আজ শনিবার নড়িয়ার চরআত্রা ও নওপাড়ায় সামেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্বোধন করা হয়। নওপাড়া, চরআত্রা ও কাঁচিকাটা ইউনিয়নের পরিবারগুলো পাচ্ছে বিদ্যুৎ। তাই তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৭২ হাজার মানুষ এখন আনন্দে ভাসছে।

ইউনিয়নবাসী জানান, চারদিক দিয়ে পদ্মা ও মেঘনা নদী। মাঝে ছোট-বড় অসংখ্য চর। ৭০ বছর আগে থেকে ওই চরে মানুষ বসবাস শুরু করেছে। তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে চরগুলোর অবস্থান। চরের মানুষ হারিকেন ও প্রদীপের আলো ছাড়া কখনো বিদ্যুতের আলো পায়নি। কিন্তু এবার পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সেই চরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। আজ তারা বিদ্যুতের আলো পাচ্ছে।

নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ আজগর সোহেল মুন্সী বলেন, আমাদের ইউনিয়নটি দুর্গম চর। পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে এখানে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে তা কখনো ভাবিনি। এলাকায় বিদ্যুৎ আসায় আমরা আনন্দিত।

শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক জুলফিকার রহমান বলেন, পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে শরীয়তপুরের তিনটি চরে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে। চর তিনটি আমাদের এরিয়ায় পরেছে। তবে মুন্সিগঞ্জ জেলা কাছে এবং সুবিধা বেশি হওয়ায় ওই জেলা থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ওই চরে একটি সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক এএইচএম মোবারক উল্লাহ বলেন, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার ছিপাইপাড়া থেকে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নওপাড়ার দূরত্ব প্রায় ২৪ কিলোমিটার। আর নওপাড়া ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র হচ্ছে।

বলেন, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে তিনটি ইউনিয়নে (৩৩ কেবি) বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। যা ২০ হাজার পরিবার ভোগ করতে পারবেন। শনিবার আপাতত এক হাজার পরিবারকে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ এ. কে. এম এনামুল হক শামীম বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা তার ঘোষণা বাস্তবায়ন করছি। নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি ছিল দ্রুত সময়ের মধ্যে চরবাসীদের বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। পদ্মার দুর্গম চর হওয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাচ্ছে তারা।

উপমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুজিববর্ষের বিশেষ উপহার হিসেবে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দুর্গম চরের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। তাছাড়া পদ্মা বহুমুখী সেতু দৃশ্যমান এখন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান এবং স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। এটাই তার বড় প্রমাণ।

ওডি/এমবি

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড