• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঘুষের টাকা ফেরত, সেই এসআই ক্লোজড

  পাবনা প্রতিনিধি

২২ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৪৩
মিন্টু দাশ
অভিযুক্ত এসআই মিন্টু দাশ ( ফাইল ফটো )

গাঁজা সেবনের অভিযোগে দুই প্রবাসীকে আটক করেছিলেন পাবনার ফরিদপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিন্টু দাস। এরপর তাদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে পরিবারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেন তিনি। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই প্রবাসীকে ৭ দিন করে কারাদণ্ড দিলে ক্ষিপ্ত হয় তাদের পরিবার। পরে তারা ওই এসআইকে অবরুদ্ধ করে ঘুষের টাকা ফেরত চান। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ঘুষের টাকা ফেরত দিতে হয়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাতে এসআই মিন্টু দাসকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।

ফরিদপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার উপজেলার দেওভোগ বিলের মাঠে বসে কিছু ব্যক্তি গাঁজা সেবন করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর থানার এসআই মিন্টু দাস সেখানে অভিযান চালান। এ সময় গাঁজা সেবনকারীদের কয়েকজন পালিয়ে গেলেও সৌদি প্রবাসী মুন্নাফ হোসেন (২৮) ও মালয়েশিয়া প্রবাসী রাসেল হোসেনকে (৩০) আটক করা হয়।

মুন্নাফ হোসেন উপজেলার পারফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং একই গ্রামের রাসেল হোসেন।

মুন্নাফ ও রাসেলের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, এসআই মিন্টু দাস সোমবার সন্ধ্যায় দেওভোগ বিলের পাড় থেকে তাদের মাদক সেবনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে জানিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে দুই দফায় মোট ২০ হাজার টাকা উৎকোচ নেন এসআই মিন্টু দাশ।

পরে মঙ্গলবার দুপুর ১টায় মুন্নাফ ও রাসেলকে ফরিদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহম্মদ আলী ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের ৭ দিনের কারাদণ্ড দেন। এতে দণ্ডপ্রাপ্তদের স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষোভ করেন এবং উপজেলায় এসআই মিন্টু দাসকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে ফরিদপুর থানার অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স এসে তাকে উদ্ধার করে।

এ সময় রাসেলের চাচা মুনসুর আলী এসআই মিন্টু দাসকে তাৎক্ষণিক ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এসআই মিন্টু থানায় গিয়ে টাকা ফেরত দিতে রাজি হন। কিন্তু উপস্থিত জনতা আরও ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে মঙ্গলবার বিকালে এসআই মিন্টু ২০ হাজার টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন।

গ্রেপ্তারকৃত রাসেলের মা সুজাতা জানান ‘আমার ছেলে ৫ দিন আগে বিদেশ থেকে এসেছে। টাকার জন্য তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। মিন্টু পুলিশ আমার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে এসআই মিন্টু বলেন, আমি মাদকের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযান চালাই। তাই আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি কারও কাছ থেকে কোনো ঘুষ গ্রহণ করিনি। তাহলে কিসের টাকা ফেরত দিলেন এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আবুল কাশেম আজাদ জানান, এসআই মিন্টুর ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি জানা নেই। তবে সে অপরাধী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহম্মদ আলী জানান, ‘দুজন মাদক সেবনকারী তাদের দোষ স্বীকার করলে তাদের প্রত্যককে ৭ দিনের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে অবশ্য অনেককে বিক্ষোভ করতে দেখেছি।

আরও পড়ুন: বন কর্মকর্তাকে মারধর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ

এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা এখনো পরিষ্কার না। তবে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসআই মিন্টু দাসকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সহকারী পুলিশ সুপারকে (ফরিদপুর সার্কেল) বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ওডি/এসএএফ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড