নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষির এক পর্যায়ে চাপা পড়ে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। রবিবার (২৯ জুলাই) এ নিহতের ঘটনার পরদিন সোমবার (৩০ জুলাই) থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা। গতকাল মঙ্গলবারও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে তাঁরা।
নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ ও ঘাতকদের ফাঁসিসহ নয় দফা দাবিতে রাজধানীর কয়েকটি স্থানে বাসে আগুন এবং যানবাহন ভাঙ্গচুরের কারণে বাস সরিয়ে নিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ কর্মমুখী যাত্রীরা।
আজ বুধবার সকালে মিরপুর ১, মিরপুর ১০, পল্লবী, মিরপুর ১২, কালশী, ইসিবি চত্ত্বর, বিশ্বরোড, কুড়িল, মহাখালী, বিজয় সরণি, উত্তরা, ফার্মগেট, শ্যামলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। কয়েকটি বাস এলেও তাতে সবাই উঠতে পারছেন না। বিক্ষোভে সড়ক আটকে থাকায় রাজধানীবাসীর চলাচল যেমন থমকে গেছে, তেমনি পথে পথে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সকালে অফিসমুখী যাত্রী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পায়ে হেঁটে ও রিকশায় যেতে হচ্ছে। রাজপথের সড়ক ছিল ফাঁকা। তবে দূরপাল্লার বাস ও ট্রেন চলতে দেখা গেছে।
বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা অফিসগামী যাত্রী দৈনিক অধিকারকে বলেন, অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু বাস পাচ্ছি না। অফিসে যেতে দেরি হচ্ছে।
আরেক যাত্রী বলেন, দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অবশ্যই যৌক্তিক। তারা যেই দাবির লক্ষ্যে আন্দোলন করছে সেটাও যৌক্তিক। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষরা তো ভোগান্তিতে পড়ছি। সরকারের উচিত দ্রুত একটা সমাধান করা।
অফিসমুখী আরেক যাত্রী বলেন, বাসে সব সময়ই চলাচল করি। প্রত্যেকটা বাসই রাস্তায় প্রতিযোগিতা করে। কে কার আগে যাবে, এই প্রতিযোগিতা তাদের দৈনন্দিন ব্যাপার। শিক্ষার্থীরা যেই দাবিতে আন্দোলন করছে সেটা যৌক্তিক। সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত মেনে নেয়া এবং আমাদের সাধারণ জনগণদের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করা।
এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, আর কতদিন এইভাবে বাস চাপায় মানুষ মরবে। আমরা এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। আজ পরিবহন মালিকরা বাস বন্ধ করে দিসে। কি চায় তাঁরা, বন্ধ করে পাবলিকরে ভোগান্তিতে ফেলে বুঝাতে চায়, ওরাই সেরা।
তিনি বলেন, দেখি ওরা কত পারে? এইসব করে তাঁরা শিক্ষার্থীদের দাবি থেকে এড়িয়ে যেতে পারবে না। সড়কে বাসের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আর চলতে দেওয়া যাবে না, আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, এই পরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
উল্লেখ্য রবিবার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে ‘জাবালে নূর’ পরিবহন নামের দুই বাসের রেষারেষির এক পর্যায়ে চাপা পড়ে প্রাণ হারায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নামের দুই শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার পর ওই কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও শিক্ষার্থীরা মতিঝিল শাপলা চত্বরসহ যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ২০টি পয়েন্ট অবরোধ করে ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গাড়ি ভাঙচুর করে।
রাজপথে আন্দোলনরত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ ও ঘাতক চালকের বিচারের নিশ্চয়তা না পেলে তারা রাজপথ ছাড়বে না।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড