সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা প্রসূতি সিঁড়ি থেকে নেমে মেঝেতেই সন্তান প্রসবের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) প্রসূতি মরিয়মের (২৫) আত্মীয় উম্মে আয়েশা সকাল ১০টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। মরিয়ম জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের খাজাসাতবাড়িয়া গ্রামের শাহিন আলমের স্ত্রী।
উম্মে আয়েশা জানান, আমার আত্মীয় প্রসূতি মরিয়মকে সকাল দশটার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর স্থান পায় মেঝেতে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সারা দিনে রোগীকে দেখতে একবারও কোন ডাক্তার আসেননি। সকাল থেকেই ডাক্তারদের অবহেলা আর দায়সারা ভাব লক্ষ করেছি। সন্ধ্যার পর ডাক্তার মোছা. আফরোজা খাতুন রোগীকে দেখতে এসেই বলেন, সিজার করাতে হবে। ডাক্তারের কথা মতো রক্ত পরীক্ষা থেকে শুরু করে আলট্রাসনোগ্রাফি ও অতিরিক্ত রক্তের ব্যবস্থা করি। রাত ৯টার দিকে আমার রোগী মরিয়মকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এরপর হঠাৎ ডাক্তার বলেন এ রোগীর অবস্থা ভালো না। এই অবস্থায় সিজার করলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। রোগীকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ডের ছাড়পত্র হাতে ধরিয়ে বলেন, রোগীকে নিয়ে যান।
আয়েশা অভিযোগ করে আরও বলেন, আমার রোগী নিয়ে এসেছি সকালে। তারা সন্ধ্যার পর বলেন সিজার করতে হবে আর এখন রাত দশটায় বলছেন, রোগীর অবস্থা ভালো না রোগী মারা যেতে পারে। এ কেমন আমাদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা।
অসহায় প্রসূতি মরিয়ম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি সকল দশটায়, রাত দশটায় আমাকে রেফার্ড করা হয় বগুড়া মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে। তীব্র যন্ত্রণায় আমাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ডাক্তাররা এতোটুকুও চেষ্টা করেনি। তীব্র ব্যথা নিয়েই পায়ে হেঁটে নীচতলা পর্যন্ত যাই। এ সময় আমার প্রচণ্ড ব্যথা আর পায়খানার চাপ দেয়, তখন আমি আর সহ্য করতে না পেরে মেঝেতে শুয়ে পড়ি। ততক্ষণে আমার সন্তানের মাথার কিছুটা অংশ বেরিয়ে আসে। কিন্তু চাপ দেওয়ার মতো এতটুকুও শক্তি আমার ছিল না। এ সময় শাহজাদপুর থেকে আমার সঙ্গে আসা বৃদ্ধা করিমুন্নেসা (৬৫) তখন হাত দিয়েই বাচ্চাটিকে বের করে নিয়ে আসেন।
উল্লেখ্য, এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক হিসেবে ডাক্তার মোছা. আফরোজা খাতুনের সাথে ডা. ফারহান তানজীব ও ডা. বনশ্রী শাহা ছিলেন।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড