• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রোনালদোকে বিনা মূল্যে বার্গার দিতেন এক নারী

  ক্রীড়া ডেস্ক

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:০৫
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পলা লেকার সন্ধান পেলেন রোনালদো (ছবি : সংগৃহীত)

কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে ক্রিশ্চিয়ানো জানিয়েছিলেন দারিদ্র্যে ভরা তার কৈশরের দিনগুলোর কথা। বর্তমানে বিত্ত-বৈভবের কোনো অভাব নেই সি আর সেভেনের। ফুটবল ইতিহাসে সেরাদের একজন সে। সম্মান-প্রতিপত্তি কোনো কিছুর কমতি নেই। অর্জনও কম করেননি। পাঁচবার ফিফা বর্ষসেরা, পাঁচবার ব্যালন ডি অর ও পাঁচটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও একটি ইউরো কাপ জেতেন তিনি। অথচ একটা সময় ক্ষুধা-দারিদ্র্যের কষ্টে ম্যাকডোনাল্ডসের একটা দোকানের সামনে রাতে বসে থাকতেন ক্ষুধার্ত রোনালদো ও তাঁর সঙ্গী কিশোর ফুটবলাররা। যে সব বার্গার বিক্রি হয়নি তা খাওয়ার জন্য।

ম্যাকডোনাল্ডসের কয়েক জন কর্মী তখন দয়াপরবশ হয়ে রোনালদোসহ অন্যদের খেতে দিতেন। এত দিন পরেও সেসব দিনগুলোর কথা মনে রেখেছেন। রোনালদোর চরম দুঃসময়ে ম্যাকডোনাল্ডসের যে কর্মীরা তাকে বিনা মূল্যে খেতে দিতেন, সে কর্মীদের একজনের খোঁজ পেলেন সি আর সেভেন। রোনালদোর ডাকে সাড়া দিয়ে তার দাওয়াত গ্রহণ করেছেন পলা লেকা নামের সেই নারী।

নিজের উঠে আসার সময়ে কতটা কষ্ট ও আত্মত্যাগ করতে হয়েছিল, পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে সেটা জানিয়েছেন রোনালদো- ‘রাত একটু গভীর হলে, ধরুন সাড়ে দশটা বা এগারোটা বাজলে ক্ষুধা লাগত। যে স্টেডিয়ামের পাশে আমরা থাকতাম সেখানেই একটা ম্যাকডোনাল্ডস ছিল। প্রায়ই আমরা পেছনের দরজায় গিয়ে নক করতাম আর বলতাম, কোনো বার্গার আছে? এডনা ও বাকি মেয়ে দুজনের মমতা ছিল অবিশ্বাস্য।’

এডনাদের কথা কখনো ভোলেননি রোনালদো। মরগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাদের খুঁজে পাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন, ‘আমি তাদের আর খুঁজে পাইনি। আমি পর্তুগালে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি, খোঁজার চেষ্টা করেছি তারা কোথায় কারণ আমি তাদের হদিস পাচ্ছি না। ওরা সেই ম্যাকডোনাল্ডটা বন্ধ করে দিয়েছে। আশা করছি এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আমি তাদের খুঁজে পাব। আমি তাহলে খুব খুশি হব। কারণ আমি এডনাকে তুরিন বা লিসবনে দাওয়াত দিতে চাই। আমার বাসায় এসে আমার সঙ্গে ডিনার করুক সেটা চাই। ওদের খুঁজে পেতে চাই কারণ আমি ওই গুরুত্বপূর্ণ সময়ের ঋণ কিছুটা হলেও শোধ করতে চাই। আমি কখনো এটা ভুলব না।’

সে তিনজনের এক নারীর হদিস পাওয়া গেছে। যার নাম পলা লেকা। পর্তুগিজ গণমাধ্যম রেডিও রেনাঁসেসাঁকে এজন্য কৃতিত্ব দিতে হবে। সেসব দিনগুলো মনে করতে গিয়ে বলেছেন, ‘ওরা দোকানের কাউন্টারের সামনে এসে ভিড় জমাত। অতিরিক্ত বার্গার আছে কি না জানতে চাইত। আমরা তখন আমাদের দোকানের ম্যানেজারের অনুমতি নিয়ে অতিরিক্ত অবিক্রিত বার্গারগুলো দিয়ে দিতাম। ছেলেদের মধ্যে একজন ছিল রোনালদো। ও সবার চেয়ে রোগাপটকা ছিল। প্রায় প্রতি রাতেই এই ঘটনা ঘটত।’

এই ঘটনা লেকার পরিবারের সবাই জানেন, ‘ঘটনাটা মনে পড়লে আমার এখন হাসি পায়। আমি আমার ছেলেকে ঘটনাটা বলেছি। ও বিশ্বাসই করতে চায় না যে ওর মা এককালে রোনালদোকে ফ্রি বার্গার খাওয়াত। ও ভাবে আমি মিথ্যে বলছি। তবে আমার স্বামী ব্যাপারটা জানে। সে তখন রোনালদোকে সামনাসামনিও দেখেছিল। তখন দিনের শেষে আমার স্বামী আমাকে নিতে আসত। তখনই সে রোনালদোকে দেখেছিল।’

এত দিন পরে এসেও রোনালদো যে সে সব দিনের কথা ভোলেননি, তাতে বেশ অভিভূত লেকা- ‘এত দিন পরেও ঘটনাটা মনে রেখেছে, তাতেই বোঝা যায় ও মানুষ হিসেবে কতটা উঁচুমানের। ও আমাদের দাওয়াত দিয়েছে, আমি দাওয়াত গ্রহণ করলাম। ওর সঙ্গে দেখা হলে আমি ওকে ধন্যবাদ জানাব। সেসব দিনের কথা স্মরণ করব।’ পিয়ার্স মরগান অবশ্য দাবি করেছেন লেকা সেই তিনের একজন নন।

ওডি/এনএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড