ক্রীড়া ডেস্ক
ফুটবল ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। গেল ১৫ বছর ধরে বিশ্ব ফুটবলে রাজত্ব করে চলছেন তিনি। তবে আজকের এই রোনালদো হওয়ার পিছনের গল্প কত যন্ত্রণার, কতটা ত্যাগ-তিতিক্ষার তা হয়তো অনেকে জানে, আবার অনেকেই জানে না।
বেশ কিছু দিন আগে এক ব্রিটিশ টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রোনালদো তার অতীতের দিনগুলোর কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন নিজের কষ্টের সময়গুলোর কথা। আইটিভিতে জনপ্রিয় ব্রিটিশ টিভি তারকা পিয়ার্স মরগানকে দেয়া সাক্ষাৎকারটিতে উঠে এসেছে রোনালদোর উঠে আসার দিনগুলোর গল্প।
রোনালদোর বাবার সঙ্গে আদর্শ সম্পর্ক না থাকার হতাশা, ব্যক্তিগত জীবন, ফুটবলার হিসেবে চাওয়া পাওয়ার গল্পগুলো। এর মাঝে অনন্য হয়ে আছেন তিন নারী যারা রোনালদোকে আজকের রোনালদো হিসেবে গড়ে তোলায় কিছুটা হলেও ভূমিকা রেখেছেন।
রোনালদো বলেন, ‘আমি যখন ১১ বা ১২ বছরের ছিলাম, তখন আমাদের কাছে কোনো অর্থ ছিল না। আমরা লিসবনের ওই অংশে থাকতাম যেখানে বাকি সব কিশোর ফুটবলাররা থাকত। আমার পরিবার ছিল মাদেইরাতে, ওদের সঙ্গে তিন মাস পর পর দেখা হতো। এটা ছিল খুব কঠিন। পরিবার ছাড়া এভাবে থাকা খুব কঠিন।’
ঠিক ওই কঠিন সময় রোনালদোর মতো অন্য কিশোর ফুটবলারদের দিনটা উজ্জ্বল হয়ে উঠত তিন অসাধারণ মানুষের জন্য। খুব সাধারণ মানুষ তারা, খেটে খাওয়া মানুষ সবাই। তারা কাজ করতেন বিশ্বখ্যাত ফাস্ট ফুড চেইন ম্যাকডোনাল্ডসে। রোনালদোর সে দিনগুলো নিয়ে বলেন, ‘রাত একটু গভীর হলে, ধরেন সারে দশটা বা এগারোটা বাজলে ক্ষুধা লাগত। যে স্টেডিয়ামের পাশে আমরা থাকতাম সেখানেই একটা ম্যাকডোনাল্ডস ছিল। প্রায়ই আমরা পেছনের দরজায় গিয়ে নক করতাম আর বলতাম, কোনো বার্গার আছে? এডনা ও বাকি মেয়ে দুজনের মমতা ছিল অবিশ্বাস্য।’
তার কয়েক বছর পর বদলে যায় রোনালদোর জীবন। ১৮ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে পা রাখার পর থেকে আর অর্থের অভাব হয়নি তার। তবে কখনো এডনাদের কথা ভোলেননি। এডনাদের খুঁজে পাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন সিআরসেভেন। রোনালদো বলেন, ‘আমি তাঁদের আর খুঁজে পাইনি। আমি পর্তুগালে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি, খোঁজার চেষ্টা করেছি তারা কোথায় কারণ আমি তাদের হদিস পাচ্ছি না। ওরা সেই ম্যাকডোনাল্ডটা বন্ধ করে দিয়েছে। আশা করছি এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আমি তাদের খুঁজে পাব। আমি তাহলে খুব খুশি হব। কারণ আমি এডনাকে তুরিন বা লিসবনে দাওয়াত দিতে চাই। আমার বাসায় এসে আমার সঙ্গে ডিনার করুক সেটা চাই। ওদের খুঁজে পেতে চাই কারণ আমি ওই গুরুত্বপূর্ণ সময়ের ঋণ কিছুটা হলেও শোধ করতে চাই। আমি কখনো এটা ভুলব না।’
রোনালদোর সাক্ষাৎকার নেয়া পিয়ার্স মরগান জানিয়েছেন, এর মাঝেই এডনার খোঁজ পেয়েছেন তারা!
ওডি/এসএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড