ক্রীড়া ডেস্ক
খেলার মাধ্যমে বুদ্ধির চর্চা করায় আধুনিক বিশ্বে দাবার জনপ্রিয়তা যেন লাগামহীন। দাবার কথা উল্লেখ রয়েছে প্রাচীন চর্যাপদেও। কিন্তু এত কিছুর পরেও বাংলাদেশে এর নেই তেমন কোনো চর্চার সুযোগ কিংবা সাফল্য। অর্থ আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে পথ চলছে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন।
১৯৭৪ সালে উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ দাবাড়ু কাজী মোতাহার হোসেনের হাত হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল 'বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন'। এতদিনে পথ চলায় আমরা পেয়েছি মাত্র পাঁচজন গ্র্যান্ডমাস্টার। তাদেরকেও করা হয়নি তেমন কোনো পৃষ্ঠপোষকতা। মাত্র ১১ লাখ টাকা বাৎসরিক বরাদ্দে চলছে ফেডারেশন। আর এই অর্থের সীমাবদ্ধের মধ্যেই আয়োজন করতে হচ্ছে ৫ টি জাতীয় ইভেন্ট ও তিনটি জাতীয় দাবা লিগ।
এই ইভেন্টগুলো পরিচালনা করতে প্রায়শ অর্থের অভাবে ভুগতে এই সংগঠনটিকে। আর এই অর্থের অভাবে হাত পাততে বিভিন্ন কোম্পানির স্পন্সরশিপের জন্য বা ব্যক্তিগত অনুদানের জন্য। অনেক ক্ষেত্রে তাও পাওয়া যায় না।
দাবা ফেডারেশনের ইভেন্ট ম্যানেজার জনাব হারুন দৈনিক অধিকারকে বলেন, 'অর্থের অভাবে জাতীয় ইভেন্টগুলো পরিচালনা করতেই আমাদের হিমশিম খেতে হয়। তাই প্রয়োজন হয় প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর স্পন্সরশিপের। অনেক ক্ষেত্রে তাও পাওয়া যায় না।'
প্রতি বছর ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ৫ টি ইভেন্ট হলো-
১. জাতীয়-এ চ্যাম্পিয়নশিপ ২. জাতীয়-বি চ্যাম্পিয়শিপ ৩. জাতীয়-নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ৪. জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ (অনূর্ধব-২০) ৫. জাতীয় জাতীয় সাব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ (অনূর্ধব-১৬)
এই ইভেন্টগুলো ছাড়াও বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত হয় তিনটি জাতীয় দাবা লিগ প্রতিযোগিতা। এই তিনটি দাবা লিগ হলো-
১. প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগ ২. ফার্স্ট ডিভিশন লিগ ৩. সেকেন্ড ডিভিশন লিগ
১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন আন্তর্জাতিক দাবা সংগঠন 'ফিদে'র সদস্যপদ পায়। এর ৯ বছর পর আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার। ১৯৮৭ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার হন নিয়াজ মোর্শেদ। এরপর ১৯৭৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পেয়েছেন মোট পাঁচজন।
নাম |
রেটিং |
বিশ্ব র্যাংকিং |
জিএম নিয়াজ মোর্শেদ |
২৪০৬ |
২৯৯৩ |
জিএম জিয়াউর রহমান |
২৪৬৮ |
১৪০৬ |
জিএম মোল্লাহ আব্দুল্লাহ রাকিব |
২৪৭৭ |
১২৮৩ |
জিএম এনামুল হোসেন |
২৪৩৭ |
২০১১ |
জিএম রিফাত বিন সাত্তার |
২৪৩৭ |
২০২৮ |
যদিও দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার পেয়েছে বাংলাদেশ তবুও নেই তেমন কোনো সাফল্য। এর কারণ নিয়ে দাবা ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি সৈয়দ শাহবুদ্দিন শামিম দৈনিক অধিকারকে বলেন, ' দাবা নিয়ে আমাদের বড় কোনো সাফল্য নেই। এর কারণ আমাদের আর্থিক বরাদ্দ নেই। অর্থের অভাবে বিগত ১০ বছর ধরে আমাদের ফেডারেশনে কোনো অফিশিয়াল প্রশিক্ষক নেই। এই সমস্যার মূলে রয়েছে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের হস্তক্ষেপ এবং সরকারি অপর্যাপ্ত অনুদান।'
এই বিষয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পাওয়া জিয়াউর রহমান বলেন, 'খেলাটি ব্যক্তিগত হওয়ায় সরকারি অনুদান তেমন পাওয়া যায় না। এছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের খেলোয়াড়দের অবস্থান তেমন ভালো না হওয়া কারণ আমাদের টুর্নামেন্টের অভাব।'
ওডি/কেএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড