ক্রীড়া ডেস্ক
যোগ হওয়া সময়ে দেখা মেলে সেই মুহূর্তের- কর্নার কিক পায় বার্সেলোনা। কর্নার কিক নিতে লিওনেল মেসি ছুটে গেলেন নিজেই। দুর্দান্ত মাপা কর্নার কিক নিলেন। বক্সে থাকা লুইজ সুয়ারেজ সেটা জলে জড়ালেন। দলকে বাঁচালেন পরাজয়ের লজ্জার হাত থেকে।
কাতালানদের মূল ভরসা যে মেসি তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ফিলিপ কুতিনহোর বদলে বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে মেসির সুবাদেই ৪-৪ গোলে ড্র নিয়ে লজ্জা থেকে বাঁচল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ভিয়ারিয়ালের হয়ে গোল করেছেন সামুয়েল চুকোওজি, টোকো একাম্বি, ইবোররা ও বাক্কা। বার্সার হয়ে গোল করেছেন কুতিনহো, ম্যালকম, মেসি ও সুয়ারেজ।
ভিয়ারিয়ালের মাঠে শুরুতেই এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ম্যাচের ১২তম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান কুতিনহো প্রথম গোলটি করেন। ডান দিক দিয়ে রক্ষণ ভেঙে ডি-বক্সে ঢুকে গোলমুখে বল বাড়ান আরেক ব্রাজিলিয়ান ম্যালকম। অনায়াসে আলতো টোকায় গোলটি করেন কুতিনহো।
মিনিট চারেক পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে বার্সা। ১৬তম মিনিটে আর্তুরো ভিদালের ক্রসে হেডে বল ঠিকানায় পাঠান ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ম্যালকম।
২-০ গোলে এগিয়ে থাকার স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ থাকেনি কাতালানদের। ম্যাচের ২৩তম মিনিটে ব্যবধান কমান সামুয়েল। সতীর্থের থ্রু পাস পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে তার নেওয়া শট পোস্টে বাধা পায়। তবে ফিরতি বল কোনাকুনি শটে জালে পাঠান নাইজেরিয়ার এই মিডফিল্ডার।
প্রথমার্ধে মেসিকে নামানো হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধেও খেলবেন না এমনটি মনে হচ্ছিল, তবে ম্যাচের ৫০তম মিনিটে যখন সমতায় ফেরে ভিয়ারিয়াল। তখনই মেসিকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে।
২-২ গোলের সমতায় থাকা বার্সা আক্রমণের ধার বাড়াতে ৬১তম মিনিটে কুতিনহোর বদলি হিসেবে মাঠে নামায় মেসিকে। তবে এর পরও মিনিট তিনেক পরে গোল খেয়ে বসে তারা। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের রক্ষণচেরা পাস ডি-বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ভিসেন্তে ইবোরা।
৩-২ গোলে পিছিয়ে বার্সেলোনাকে তখন দিশেহারাই মনে হচ্ছিল। কাতালানদের বুকে আরও একবার ছুরি চালিয়ে বসল ভিয়ারিয়ালের খেলোয়াড়েরা। বার্সেলোনা পিছিয়ে পড়ে ৪-২ গোলে। মাঝমাঠের অনেক আগে থেকে সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে গোলটি করেন কলম্বিয়ার ফরোয়ার্ড বাক্কা।
মনে হচ্ছিলো হেরেই যাবে বার্সা। তবে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে মেসির আরেকটি দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে গোল। হারের শঙ্কায় পড়ে যাওয়া বার্সেলোনা শিবিরে নতুন করে আশা জাগে।
তবে এখনও মেসিরা ১ গোলে পিছিয়ে রয়েছে। তাহলে কি হেরেই মাঠ ছাড়তে হবে কাতালানদের। কিন্তু না, ম্যাচে যখন মেসি থাকে তাহলে এত সহজের হতাশ হওয়াটা মানায় না। তাই হলো, ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে তারই প্রমাণ দিলেন মেসি। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে স্বাগতিকদের হতাশায় ডুবিয়ে কর্নার থেকে স্কোরলাইন ৪-৪ করেন সুয়ারেজ। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ফাঁকায় পেয়ে নিচু জোরালো শটে জালে পাঠান উরুগুয়ের স্ট্রাইকার। এই গোলটির অবদান যে মেসির, কেননা একদম মেপেই কর্নার করেন তিনি। যার ফল হিসেবে সুয়ারেজ গোলটি করেন। এতেই আরও একবার বার্সেলোনাকে লজ্জার হার থেকে বাঁচালেন এই আর্জেন্টাইন।
ড্র করলেও পয়েন্টে তেমন একটু প্রভাব পড়েনি বার্সার। ৩০ ম্যাচে ২১ জয় ও সাত ড্রয়ে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭০। অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ৮ পয়েন্ট কম নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদ ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিন নম্বরে।
ওডি/ এএপি