অধিকার ডেস্ক ০৬ মার্চ ২০১৯, ১০:৪১
রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন্স রিয়াল মাদ্রিদকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগেই থামিয়ে দিল ডাচ ক্লাব আয়াক্স আমস্টারডাম। ম্যাচের আগেই রিয়ালকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আয়াক্স কোচ টেন হ্যাগ। কিন্তু কে জানতো এমন অঘটনের কথা! দুঃস্বপ্নের রাত পার করেছে লস ব্লাঙ্কোসরা।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মঙ্গলবার রিয়ালকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিল আয়াক্স। দুই লেগে ৫-৩ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ ষোলোতে তিনবারের টানা ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করে ইতিহাস গড়লো আয়াক্স।
২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে টানা তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়েছিল রিয়াল। কেবল দুটি ম্যাচ হেরে এই মৌসুমেও তারা ছিল ফেভারিট। আয়াক্সের মাঠে আগের লেগ ২-১ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখে তারা। কিন্তু ডাচ ক্লাব চমকে দেয় তাদের। এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে ঘরের মাঠে সবচেয়ে বাজে হারের তেতো স্বাদ পায় মাদ্রিদ ক্লাব।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাতটি ভুলে যেতেই চাইবে রিয়াল। কেননা, পরিসংখ্যান বিবেচনায় আয়াক্সের থেকে এগিয়ে তারা। ইউরোপের সেরা ক্লাব প্রতিযোগিতায় এই ম্যাচের আগে ১২ বার তারা মোকাবেলা করেছে আয়াক্সকে। সেখানে গ্যালাক্টিকোসদের ৭ জয়ের বিপরীতে হার ৪টিতে। ড্র হয়েছে বাকি ম্যাচটি। তবে তাতে কিসের কি? পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকলেও উল্টো ঘরের মাঠে ডাচ দলটির বিপক্ষে স্রেফ উড়ে গেল সান্তিয়াগো সোলারির শিষ্যরা।
আয়াক্সের এমন ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক ডুসান তাডিচ। তিনি একটি গোল করার পাশাপাশি দুটি গোলে সহায়তাও করেছেন। রিয়ালকে উপহার দিয়েছেন তাদের উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে ঘরের মাঠে সবচেয়ে বাজে হার।
২০১০ সালের পর এই প্রথম শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিল রিয়াল। ২০১০ সালের পর তারা টানা আটবার সেমিফাইনালে উঠেছিল। সার্জিও রামোসবিহীন রিয়াল মঙ্গলবার রাতে ঘরের মাঠে ম্যাচের ৭ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে। এ সময় ডুসান তাডিচের সহায়তায় হাকিম জায়িচ গোল করে এগিয়ে নেন আয়াক্সকে। ১৮তম মিনিটের মাথায় আয়াক্স এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। এ সময় ফাঁকা জালে বল জড়ান ডেভিড নেরেস। এই গোলেরও যোগানদাতা ছিলেন ডুসান।
৬২ মিনিটে ডুসান ট্যাডিকের গোলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আয়াক্স। ৭০তম মিনিটে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার সের্হিও রেগিলনের পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন আসেনসিও। বল পোস্টের ভিতরের কানায় লেগে জালে জড়ায়। বার্নাব্যুতে যেন আবার প্রাণ ফিরে আসে।
তবে তাদের আশা নিরাশায় রূপ নিতে দুই মিনিটও লাগেনি। বাঁ দিক থেকে অসাধারণ এক ফ্রি-কিকে ক্রসবার ঘেঁষে দূরের পোস্ট দিয়ে বল লক্ষ্যে পাঠান ডেনমার্কের মিডফিল্ডার লেসে শুন। ঝাঁপিয়ে পড়েও গোলের নাগাল পাননি কোর্তোয়া।
এই হারে চ্যাম্পিয়নস লিগে বিদায় নিতে হলো রিয়ালকে। সেই সঙ্গে বলাই যায়, এই মৌসুমটা বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ যাবে। কেননা এর আগে স্পেনের ঘরোয়া ফুটবলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসর কোপা দেল রে থেকেও বিদায় নেয় দলটি। আর লা লিগাতেও শীর্ষে থাকা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা থেকে বেশ পিছিয়ে রয়েছে তারা। নিশ্চিত শিরোপা শূন্য একটি মৌসুমে শেষ করতে যাচ্ছে রিয়ালের।
এদিকে দিনের আরেক ম্যাচে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছে টটেনহ্যাম হটস্পার। দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে হ্যারি কেইনের একমাত্র গোলে দ্বিতীয় লেগ জিতেছে তারা। দুই লেগে ৪-০ গোলের অগ্রগামিতায় কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সেরা চারে থাকা দলটি।
এএপি