• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সাকিব-রশিদে ফাইনালে হায়দ্রাবাদ

  অধিকার ডেস্ক    ২৬ মে ২০১৮, ০৯:৫৯

দিনেশ কার্তিকের উইকেট নিয়ে উচ্ছ্বসিত সাকিব আল হাসান

দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হওয়ার আগে সাকিব আল হাসান ব্যাট করছিলেন দেখেশুনেই। তার বিদায়ের পর খেই হারিয়ে ফেলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন রশিদ খান। অবিশ্বাস্য এক ঝড়ো ইনিংসে। তাতে লড়ার মতো পুঁজি পায় তারা। জবাবে ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে কলকাতা নাইট রাইডার্স ছিল জয়ের পথেই। তবে কেকেআর অধিনায়ক দিনেশ কার্তিককে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু দিলেন সাকিব। সেটাকে কাজে লাগালেন লেগ স্পিনার রশিদ। দুই জনের অলরাউন্ড পারফর্ম্যান্সে কলকাতাকে ১৪ রানে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট পেল সানরাইজার্স।

শুক্রবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১৭৪ রান তুলেছিল সানরাইজার্স। জবাবে সাকিব-রশিদের ঘুর্ণিতে কলকাতার ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১৬০ রানে। ফলে তিন বছরের মধ্যে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের অভিযানে হায়দ্রাবাদ।

ম্যাচ সেরা হয়েছেন আফগানিস্তানের বিস্ময় বোলার রশিদ। এই ম্যাচের প্রতিটি পরতে পরতে লেখা যার নাম। ১৮.১ ওভারে ১৩৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছে হায়দ্রাবাদ, তখনই জ্বলে উঠলেন তিনি। ১০ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করলেন ২ চার ও ৪ ছয়ে! তাতে শেষ দুই ওভারে হায়দ্রাবাদ পেল ৩৬ রান। এরপর বোলিংয়ে নিলেন ৩ উইকেট। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রানে। অবদান রাখলেন নিতিশ রানার রানআউটে। শেষ ওভারে ধরলেন দুর্দান্ত দুইটি ক্যাচ।

কম যাননি সাকিবও। ব্যাট করতে এসেছিলেন চার নম্বরে। ২৪ বলে করলেন ২৮ রান। তাতে চারের মার ছিল ৪টি। বল হাতে কলকাতার ইনিংসের এগারোতম ওভারে কার্তিককে যখন ফেরালেন, তার আগে ৪৯ বলে ৬৭ রান দরকার ছিল স্বাগতিকদের। হাতে ৭ উইকেট। লক্ষ্যটা সহজই। কিন্তু কার্তিকয়ের বিদায়ের পর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে কলকাতা। ৩ ওভারে ১৬ রান দিয়ে মূল্যবান ১ উইকেট সাকিবের। তাতে বাংলাদেশের তারকার হাতে উঠল 'স্টাইলিশ প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ'এর পুরস্কার। সঙ্গে সাকিব উপযুক্ত জবাব দিলেন গেল আসরের উপেক্ষার। কলকাতার হয়ে যে মাত্র একটি ম্যাচেই মাঠে নামতে পেরেছিলেন!

আগের চার ম্যাচে টানা হার। কলকাতার বিপক্ষে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচের হার। হায়দ্রাবাদ ম্যাচটা শুরু করেছিল মানসিকভাবে কিছুটা পিছিয়ে থেকেই। তবে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় তারা। ঋদ্ধিমান সাহা আর শিখর ধাওয়ানের ব্যাটিংয়ে। ২৭ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন ঋদ্ধিমান। ধাওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৩৪ রান। এরপর সাকিব ২৮ করে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নিলে মড়ক লাগে হায়দ্রাবাদের ব্যাটিংয়ে। ২৫ রানে ৪ উইকেট হারায় তারা। এরপর রশিদ ম্যাজিকে ৭ উইকেটে ১৭৪ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে তারা। কলকাতার কুলদীপ যাদব ২৯ রানে নেন ২ উইকেট।

জবাব দিতে নেমে ক্রিস লিন আর সুনিল নারিনের ব্যাটে চড়ে উড়ন্ত সূচনা পায় কলকাতা। বিধ্বংসী হওয়ার আগেই নারিনকে ফেরান সিদ্ধার্থ কাউল। ১৩ বলে দুইশ স্ট্রাইক রেটে ২৬ রানে সাজঘরের পথ ধরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা। রানাকে সঙ্গে নিয়ে এরপর রানের গতি বাড়িয়ে খেলছিলেন লিন। দুই জনের ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন রানা। ১৬ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলে। এরপর রবিন উথাপ্পাও ফিরে যান দ্রুতই। কিন্তু কলকাতাকে মূল ধাক্কাটা দেন তাদেরই সাবেক খেলোয়াড় সাকিব। অধিনায়ক কার্তিককে বোল্ড করে। দলীয় ১০৮ রানে।

কার্তিক ফেরার পর কোনো রান যোগ না হতেই লিনও ফেরেন সাজঘরে। রশিদের এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। লিনের ৩১ বলে ৪৮ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ২টি ছয়ের মার। ১০ রানের ব্যবধানে রশিদ যখন আন্দ্রে রাসেলকে আউট করেন, তখন কলকাতার জয়ের আশা কার্যত শেষ হয়ে যায়। শেষদিকে অবশ্য লড়াই করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন শুভমান গিল। কিন্তু তার ২০ বলে ৩০ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।

আগামী রোববার ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে মাঠে নামবে হায়দ্রাবাদ। মুম্বাইয়ে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়।