• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুমিনুলের সেঞ্চুরির পর নাঈম-তাইজুলের দৃঢ়তা

  অধিকার ডেস্ক    ২২ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:২৭

মুমিনুল হক
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে সেঞ্চুরি হাঁকালেন মুমিনুল; (ছবি আইসিসি : টুইটার)

বাংলাদেশের পক্ষে রেকর্ড ছোঁয়া অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকালেন মুমিনুল হক। তাকে ভালোই সঙ্গ দেন ইমরুল কায়েস ও সাকিব আল হাসান। কিন্তু চা বিরতির ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল এলোমেলো করে দেন টাইগারদের। ফলে ১৩ রানের মধ্য ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তবে মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার দিনে শেষ বিকালে দৃঢ়তা দেখান অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা নাঈম ইসলাম ও তাইজুল ইসলাম। এই দুই স্পিনারের কল্যাণে প্রথম দিনে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছাড়াল তিনশ রান।

বৃহস্পতিবার টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ৩১৫ রান তুলে খেলা শেষ বাংলাদেশ। নানান নাটকীয়তার ম্যাচের প্রথম দিনে খেলা হলো ৮৮ ওভার। উইকেটে আছেন নাঈম ২৪ ও দুবার রিভিউ নিয়ে জীবন পাওয়া তাইজুল ৩২ রানে। ২৫৯ রানের মাথায় বাংলাদেশের অষ্টম উইকেটের পতন ঘটার পর এই দুই টেলএন্ডার ৯৫ বলে ৫৬ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে ক্রিজে আছেন।

লিটন দাসের পরিবর্তে এ ম্যাচে ওপেনিং করতে নেমে 'ডাক' মারেন সৌম্য সরকার। এরপর দিনের প্রথম ওভারে উইকেটে আসা মুমিনুল ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ১৬৭ বলে ১২০ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। ফিফটি পূরণ করেন মাত্র ৬৯ বলে। আর তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগারে পৌঁছাতে খেলেন ১৩৫ বল। ৪৯তম ওভারে দেবেন্দ্র বিশুর শেষ ডেলিভারিতে মিড উইকেটের ওপর ছয় হাঁকিয়ে ৯৮ রানে পৌঁছে যান তিনি। রোস্টন চেজের করা পরের ওভারের তৃতীয় বলে চার মেরে সেঞ্চুরি পেয়ে যান তিনি।

গ্যাব্রিয়েলের বলে উইকেটের পেছনে শেন ডাওরিচের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ইনিংস সাজান তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে কায়েসের সঙ্গে ১০৪ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন তিনি। এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ৪৮ ও টাইগার দলনেতা সাকিবের সঙ্গে ৬৯ রানের আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন মুমিনুল।

মুমিনুলের বিদায়ের পর দ্রুত আরও ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। চা বিরতির পর মাত্র ৬ ওভারের মধ্যে। সবগুলো উইকেট যায় উইন্ডিজের গ্যাব্রিয়েলের ঝুলিতে। দিন শেষে তিনিই সফরকারীদের সেরা বোলার। ৬৯ রানের বিনিময়ে পান ৪ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৩১৫/৮ (৮৮ ওভারে) (কায়েস ৪৪, সৌম্য ০, মুমিনুল ১২০, মিঠুন ২০, সাকিব ৩৪, মুশফিক ৪, মাহমুদউল্লাহ ৩, মেহেদী ২২, নাঈম ২৪*, তাইজুল ৩২*; রোচ ১/৫৫, গ্যাব্রিয়েল ৪/৬৯, চেজ ০/৪২, ওয়ারিকান ২/৬২, বিশু ১/৬০, ব্র্যাথওয়েট ০/১৯)।

নাঈম-তাইজুলের ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশের তিনশ

২৫৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের স্কোর তিনশ পর্যন্ত পৌঁছাবে কি-না তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল শঙ্কা। কিন্তু মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে জ্বলে উঠলেন বোলাররা! অভিষিক্ত নাঈম ইসলাম ও তাইজুল ইসলামের ব্যাটিংয়ের কল্যাণে তিনশ ছাড়াল টাইগারদের ইনিংস।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮৪ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৫ রান। উইকেটে আছেন নাঈম ২৩ ও তাইজুল ২৪ রানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ৪৬ রান।

'তৃতীয়' জীবন পেলেন তাইজুল

ভাগ্যটা দারুণ সহায়তা করছে তাইজুল ইসলামকে। রানের খাতা খোলার আগে একবার জীবন পেয়েছিলেন। দেবেন্দ্র বিশুর বলে রিভিউ নিয়ে। ফের তিনি বাঁচলেন রিভিউয়ের কল্যাণে! এবারেও দুর্ভাগা বিশু!

৮০তম ওভারের প্রথম বলে এলবিডাব্লিউয়ের সিদ্ধান্তের বিপরীতে রিভিউ নেন তাইজুল। হক-আইতে দেখা যায়, বল বিশাল টার্ন নিয়ে লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। তখন ১৩ রানের ব্যাট করছিলেন তাইজুল।

রিভিউ নিয়ে তাইজুলের রক্ষা মাঠের আম্পায়ার এলবিডব্লিউ আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে দ্বিতীয় জীবন পান তাইজুল ইসলাম। ৭৪তম ওভারে দেবেন্দ্র বিশুর তৃতীয় বলটি সুইপ করতে চেয়েছিলেন টাইগার বাঁহাতি স্পিনার। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে প্যাডে লাগে। কিন্তু আম্পায়ার তার বিপক্ষে আউটের সিদ্ধান্ত দেন। মুহূর্ত দেরি না করে রিভিউ নেন তাইজুল। সেখানে দেখা যায়, বল প্যাড ছোঁয়ার আগে ব্যাটে লেগেছে। বেঁচে যান তাইজুল। তখনও রানের খাতা খোলা হয়নি তার।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় ৭৪ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৬৫ রান। উইকেটে আছেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা নাঈম হাসান ৮ ও তাইজুল ইসলাম ১ রানে।

শেষ ভরসা মেহেদীও ফিরলেন

চা বিরতির পর প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ দলের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। তার ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছিল তিনশ ছুঁয়ে ফেলার। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিকানের দুর্দান্ত এক ডেলিভারি সেটা হতে দিল না!

৩১ বলে ৩ চারে ২২ রান করে সাজঘরে ফিরলেন মেহেদী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ারিকানের ৭২তম ওভারের প্রথম ডেলিভারিটি লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পড়ে দুর্দান্তভাবে বাঁক খায়। তাতে ড্রাইভ করতে গিয়ে মেহেদী পরাস্ত হন। বল গিয়ে আঘাত করে মিডল স্ট্যাম্পে। ফলে প্রথম দুই সেশন দারুণ কাটানো বাংলাদেশ দলীয় ২৫৯ রানে অষ্টম উইকেট হারাল।

হঠাৎ এলোমেলো বাংলাদেশ

দ্বিতীয় সেশনে মাত্র ৮ রান তুলতে পতন ঘটছে বাংলাদেশের তিন উইকেট! শ্যানন গ্যাব্রিয়েল একাই নিয়েছেন চারটি উইকেট। ৬৮ বলে ৩৪ রানে ফিরে গেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

দীর্ঘ বিরতির পর দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাকিব। মুমিনুল-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর একমাত্র ভরসা সাকিব। চেষ্টাও করেছিলেন দলকে এগিয়ে নেওয়ার। কিন্তু গ্যাব্রিয়েলে শিকার হতে হয়েছে তাকে।

৮ রানে টাইগারদের পতন তিন উইকেট!

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছিলেন সেঞ্চুরি। সেই তিনিই ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে আউট হয়েছেন মাত্র ৩ রানে। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের একে একে তুলে নিলেন টাইগারদের গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট। দৃঢ় ভিত গড়ে দেওয়া মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিমের পর মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় সেশনে মাত্র ৮ রান তুলতে পতন ঘটছে তিন উইকেট। এতেই বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ।

মুমিনুলের পর মুশফিক

১২০ রানে আউট হয়ে ফিরেছেন মুমিনুল হক। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন রেকর্ড গরা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। যিনি একমাত্র উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান টেস্টে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। তিনি হচ্ছেন মুশফিকুর রহিম।

দলের বিপর্যয়ে সব সময় ব্যাট হাতে জবাব দিয়ে যান মুশফিক। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দারুণ খেলা এই উইকেটকিপার ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে নেমেই ফিরে যান দলের পক্ষে মাত্র চার রান যোগ করে।

শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে এলবিডাব্লিওতে আউট হয়েছেন তিনি। যদিও রিভিও নিয়েছিলেন কিন্তু তা আর মুশফিকের পক্ষে আসেনি। ফলে ৩ বলে ৪ রা করে ফিরে গেছেন তিনি।

ফিরলেন মুমিনুল

সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে মুমিনুল হকের ঝলমলে ব্যাটিংয়ে ইনিংসে দুই সেশন দারুণ কাটিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সেই শুরু থেকেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। করেছেন টেস্টে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।

কিন্তু দলকে বেশিক্ষণ দিতে পারেননি। আউট হয়েছেন ১২০ রানে।

ইনিংসের ৬০তম ওভারের শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের দ্বিতীয় ওভারে আউট হয়েছেন মুমিনুল। গ্যাব্রিয়েল এনে দিয়েছেন ক্যারিবয়দের সেরা সাফল্য। ১২০ রান করতে খেলেছেন ১৬৭ বল। যেখানে ছিল দশটি চারের মার।

মুমিনুল-সাকিবের জুটিতে পঞ্চাশ

টেস্টে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সঙ্গে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়লেন মুমিনুল হক। ৫৮ বলে ছুঁয়েছে জুটির পঞ্চাশ। তাদের জুটিতে বাংলাদেশ ছুঁয়েছে দুইশ রান।

এই দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের দাপুটে ব্যাটিংয়ে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ।

মুমিনুলের সেঞ্চুরি

দুই জন একে একে ফিরে গেছেন সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস শেষে মোহাম্মদ মিঠুন। কিন্তু আঠার মতো আটকে থেকে ক্রিজে টিকে আছেন মুমিনুল হক। চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ঝলমলে এক ইনিংস খেলে করে ফেলেছেন সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে অষ্টম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট শুরুর দিন প্রথম সেশনে ঝলমলে ইনিংস খেলেছেন মুমিনুল। লাঞ্চ বিরতির আগে ইমরুল বিদায় নিলে দ্বিতীয় সেশনে মিঠুনের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়েন তিনি। মিঠুন ২০ রানে দেবেন্দ্র বিশুর শিকার হয়েছেন। ক্রিজে মুমিনুলের সঙ্গে আছেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মুমিনুল। ১৪০ বলে ১০৮ রানে ক্রিজে আছেন তিনি।

বাজে শটে আউট মিঠুন

টেস্টে এমন করে আউট হওয়াটাকে আসলে কি বলে হয়তো কারও জানা নেই। এমন বাজে আউট হবেন মোহাম্মদ মিঠুন নিজেও হয়তো কল্পনা করেননি। কিন্তু তাই হয়েছে। একদম বাজে বলা যায় অপ্রয়োজনীয় এক শটে আউট হন তিনি। ৫০ বলের মোকাবেলায় মাত্র ২০ রানে সাজঘরে ফিরেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

ইনিংসের ৪৩তম ওভারের দেবেন্দ্র বিশুর ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে মিঠুন চেয়েছিলেন ছক্কা মারতে। কিন্তু ব্যাটেই ঠিক মতো লাগেনি। ব্যাটের মাঝে বল লেগে উঠে যায় ক্যাচ। উইকেটরক্ষক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে নিজেই বলটি তালুবন্দি করেন। ফলে মুমিনুলকে একা করে মিঠুন ফিরে গেছেন সাজঘরে।

এগিয়ে চলছে বাংলাদেশের রানের চাকা

শুরুতে সৌম্য সরকারের বিদায়ের হোঁচট পাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ইমরুল কায়েসের সঙ্গে শতরানের ছাড়ানো জুটি গড়ার পথে ঝলমলে ইনিংস খেলেছেন মুমিনুল হক। কিন্তু ইমরুলের ক্রিজে থাকাটা বেশিক্ষণ টেকসই হল না! ফিফটির দ্বারপ্রান্তে থেকে ফিরে গেছেন আরেক ওপেনার ইমরুল। ৮৭ বলে ৪৪ রান করেছিলেন তিনি।

ইমরুলের বিদায়ের পর মুমিনুলকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ মিঠুন। তাকে সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে রানের চাকা এগিয়ে নিচ্ছেন টেস্টে টাইগারদের নির্ভরশীল ব্যাটসম্যান মুমিনুল।

এরই মধ্যে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুমিনুল। সব মিলিয়ে ১৩তম হাফসেঞ্চুরি তার। ফিফটি ছাড়িয়ে সেঞ্চুরির পথে হাঁটছেন তিনি। ১০২ বলে ৭২ রানে ব্যাট করছেন মুমিনুল।

ইমরুলের বিদায়ে শেষ প্রথম সেশন

মুমিনুল হক ও ইমরুল কায়েসের জুটিতে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু জোমেল ওয়ারিকানের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে গেছেন ওপেনার ইমরুল। ৮৭ বলে ৪৪ রান করে ফিরে গেছেন তিনি। তার বিদায়ের পরই প্রথম সেশনের খেলা শেষ হয়।

চট্টগ্রাম টেস্টে ২ উইকেটে ১০৫ রানে প্রথম সেশন শেষ করেছে বাংলাদেশ।

ইমরুল-মুমিনুলের জুটি ভাঙলেন ওয়ারিকান

গরম গরম একদম তাজা তাজা রান আসছিল ওপেনার ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকে। কিন্তু ফিরতে হয়েছে তাকে ৪৪ রানে। সকালের ধাক্কাটা সামলে নিচ্ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা হল না ইমরুলের। যদিও সাজ সকালে তিনটি জীবন পেয়েছিলেন তিনি। তবে এবার আর শেষ রক্ষা আর হয়নি।

ইনিংসের ২৭তম ওভারের জোমেল ওয়ারিকানের পঞ্চম বলটি ছিল মিড উইকেটে। এমন আউট সচরাচর হয়নি টাইগারদের। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে দাঁড়িয়ে থাকা সুনীল আমব্রিসের কাছে ক্যাচ ওঠে। খুব সহজে বলটি তালুবন্দি করেন তিনি। এতেই বাংলাদেশের ১০৫ রানের জুটি ভাঙল।

ফিফটি করলেন মুমিনুল

রান মেশিন মুমিনুল হক টেস্টে প্রথমবারের মতো ফিফটির দেখা পেলেন! অবাক হবেন না। এমনটি নয়। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের হয়ে নিজের ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি করেছেন তিনি। এর আগেও টেস্টে ফিফটি করেছেন অনেকবার। কিন্তু চট্টগ্রামে এই প্রথম।

ইনিংসের ২৪তম ওভারের রোস্টন চেজ সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এই অর্ধশত রানের মাইলফলক করেন মুমুনিল। ৭১ বলের দেখায় সাতটি চারের মারে ফিফটি করেন তিনি।

মুমিনুল-ইমরুলের ব্যাটে প্রতিরোধ

চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে মাত্র ৩ বল খেলে উইকেট (সৌম্য সরকার) হারায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ১ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দলকে ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক। এরই মধ্যে দলীয় ফিফটি রান পেরিয়েছে টাইগারদের।

যদিও এর মধ্যে দুইবার জীবন পেয়েছেন ইমরুল। ইনিংসের শুরুতে কিছুটা দেখে শুনে খেললেও এখন ঠিকই ব্যাট কথা বলছে ইমরুলের। এই দুই জনের (ইমরুল-মুমিনুল) ব্যাটিংয়ে উইন্ডিজ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়েছে স্বাগতিকরা। ৮০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন।

দু'দুবার জীবন পেলেন ইমরুল

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হকের ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠছে বাংলাদেশ। ঠিক এমন সময়ে বিপদের হাত থেকে রক্ষা পায় ইমরুল। ইনিংসের ১৩তম ওভারে জোমেল ওয়ারিকানের দ্বিতীয় বলে দ্বিতীয়বারের মতো জীবন পেলেন ইমরুল। কিন্তু এই যাত্রায়ও রক্ষা পান। নো বল হওয়াতে রক্ষা বাংলাদেশের।

বড় বাঁচা বেঁচেছেন ইমরুল

স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে কেমার রোচের চতুর্থ বলে প্রায় আউট হয়ে গিয়েছিলেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। রোচের বলটি ডিফেন্সিভভাবে খেলতে গিয়েছিলেন ইমরুল। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে থাকা রোস্টন চেজের হাতে গেলে ক্যাচটি মিস করেন তিনি। বলা যায় এই যাত্রায় বেঁচে গেলেন ইমরুল।

শূন্য রানে শুরুতেই আউট সৌম্য

সদ্য শেষ হওয়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট দলে জায়গা হয়নি সৌম্য সরকারের। তার জায়গাতে রাখা হয়েছিল লিটন দাসকে। তবে ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে লিটনের জায়গায় সুযোগ দেওয়া হয়েছে তাকে (সৌম্য)। কিন্তু তেমন কিছুই করতে পারেননি।

কেমার রোচের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে শূন্য রানে আউট হয়ে ফিরে গেছেন সৌম্য। হালকা বাউন্সে থাকা বলটি ব্যাটে কিস করে উইকেটরক্ষকের হাতে বলটি গেলে খুব সহজে তালুবন্দি করে শেন ডাওরিচ।

টস

আগের দিন তার খেলা নিয়ে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে টস করতে নামলেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়ক টস জিতে অনুমিতভাবেই নিলেন ব্যাটিং। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু সকাল সাড়ে নয়টায়।

অভিষেক হয়েছে নাঈমের

চমক দেখিয়ে চলতি বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছিলেন নাঈম হাসান। কিন্তু কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়েই বাদ পড়েছিলেন। তবে সম্প্রতি শেষ হওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে ফের দলে ফিরেছেন তিনি।

১৭ বছরের ৬ ফুট লম্বা উদীয়মান অফ স্পিনার নাঈমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হচ্ছে ক্যারিবয়দের বিপক্ষে। টেস্টে বাংলাদেশের ৯৩তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয়েছে তার।

বদলা নিতে মরিয়া বাংলাদেশ

চলতি বছরের মাঝামাঝি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে নিজেদের সর্বনিম্ন ৪৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পাঁচ মাস আগে সফর করে আসা বাংলাদেশ এবার ক্যারিবিয়ানদের পেয়েছে নিজেদের আঙিনায়। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায়। চার মাসের ব্যবধানে ক্যারিবীয়ানরা এবার বাংলাদেশের মাটিতে। বদলা নিতে পারবে কী বাংলাদেশ?

বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল: ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), কিয়েরন পাওয়েল, শাই হোপ, শিমরন হেটমায়ার, রোস্টন চেজ, সুনীল আমব্রিস, শেন ডাউরিচ, দেবেন্দ্র বিশু, কেমার রোচ, জোমেল ওয়ারিকান, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।