ক্রীড়া ডেস্ক
গত বছর এই সময়ে ভারত সফরের ঠিক আগে আন্দোলনের ডাক দেন দেশের ক্রিকেটাররা। সাকিব-তামিমদের নেতৃত্বে সে আন্দোলনে অংশ নেন দেশের সকল ক্রিকেটাররা। ঘরোয়া ক্রিকেটের পারিশ্রমিক বাড়ানো, নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, ক্রিকেটারদের প্রতি বিসিবির দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোসহ মোট ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেন দেশের সব পেশাদার ক্রিকেটার।
পরবর্তীতে সেই দাবির সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন চাওয়া। যুক্ত হয় আরও দুটি দাবি। সব মিলিয়ে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কাছে ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেন সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ।
ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক ও সুবিধা নিয়ে গুলশানে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা নতুন করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এবার সাকিব-তামিমরা কথা বলেননি। তাদের পক্ষে কথা বলেন তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। ক্রিকেটারদের মুখপাত্র ব্যারিস্টার মোস্তাফিজ বলেন, আজকেই সম্ভব হলে বোর্ডপ্রধানের সঙ্গে কথা বলবেন, না হলে বৃহস্পতিবার সকালে কথা বলবেন। যথাসম্ভব দ্রুত ক্রিকেটারদের বোর্ডের সঙ্গে মীমাংসা করতে কাজ করেও যাচ্ছেন তিনি।
এক. কোয়াবের কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য পেশাদার ক্রিকেট সংগঠনের স্বাধীনতা থাকে, কিন্তু যেহেতু তারা ক্লাব বা স্পন্সরের প্রতিনিধিত্ব করে, তাই অবস্থানের কারণে তারা কাজ করতে পারছে না। তাই কোয়াবের কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে হবে। একই সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছে এমন ক্রিকেটারদের কেউ পেশাদার ক্রিকেট সংগঠন তৈরি করবে। যারা বাংলাদেশের ক্রিকেটের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে।
দুই. ঢাকা ক্রিকেট লিগের যে অবস্থা ছিল সেই অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে হবে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলোয়াড়রা কোন ক্লাবে খেলবে, কী পারিশ্রমিক পাবে সেটা নির্ধারিত হতো।
তিন. বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি বাদ দিয়ে এবার বিসিবি চালাবে। ক্রিকেটাররা চায়, আগের ব্যবস্থায় যেন বিপিএল ফিরে আসতে পারে। বিপিএলে খেলোয়াড়দের দাম নির্ধারণে বৈষম্য করা হয়। বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যাতে দেশি ক্রিকেটারদের দাম নির্ধারণ করা হয়। বিদেশিদের চেয়ে যেন কম পারিশ্রমিক না পায়।
চার. প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে জাতীয় লিগের এক লাখ টাকা থাকতে হবে। বেতন বাড়াতে হবে এবং প্রতি বছর সেটা বাড়বে।
পাঁচ. ১২ মাস কোচ, ট্রেইনার নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদেরও বেতন বাড়াতে হবে। ডেইলি অ্যালাউন্স বাড়াতে হবে।
ছয়. কেন্দ্রীয় চুক্তিতে খেলোয়াড়দের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
সাত. লোকাল কোচ, গ্রাউন্ডসম্যানদের বেতন বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে যে বিদেশি কোচ আসে, তাদের স্থানীয় কোচদের যেন নিযুক্ত করা হয়।
আট. লিস্ট এ ম্যাচের সংখ্যা বাড়াতে হবে, টুর্নামেন্টের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিপিএল ছাড়াও আরেকটি টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট করতে হবে।
নয়. নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার থাকতে হবে। ক্যালেন্ডার থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এই দিকে জোর দিতে হবে। যাতে করে ক্রিকেটাররা তাদের জীবনযাপনে পরিকল্পনা করে চলতে পারে তাই নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার থাকতে হবে।
দশ. যে কোনো লিগে খেলোয়াড়দের পাওনা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মেটাতে হবে।
এগারো. একটা বাংলাদেশি ক্রিকেটার বিদেশি দুইটার বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলতে পারেবে না এমন নিয়ম বাতিল করতে হবে। সেটা দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও জাতীয় লিগের সাপেক্ষে।
বারো. ক্রিকেটের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দরকার। ক্রিকেটারদের কারণে বিসিবি যে বাণিজ্যিক রেভিনিউ পাচ্ছে, তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।
তেরো. বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের ক্ষেত্রেও ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। নারী ক্রিকেটারকে সমান সুযোগ, সমান পারিশ্রমিক দিতে হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড