• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিশ্বকাপ জয়ী শাহীনকে নিয়ে যা বললেন তার মা

  হুমায়ুন কবির সূর্য্য, কুড়িগ্রাম

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:৪৬
বিশ্বকাপ জয়ী শাহীন আলম
অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপ জয়ী শাহীন আলম (ছবি : দৈনিক অধিকার)

অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় কুড়িগ্রামের সন্তান শাহীন আলম ইতিহাসে নিজের নাম স্থান করে নিয়েছেন। তাকে নিয়ে এখন পুরো জেলায় চলছে নানা আলোচনা। শাহীনের গ্রামের ছোট্ট বাড়িতে এখন উচ্ছ্বসিত মানুষের ভিড়। যারা কখনো শাহীন আলমের খেলা দেখেননি তারাও এখন বাড়িতে এসে অভিনন্দন জানাচ্ছেন তার বাবা ও মাকে।

শাহীন আলমের এই উত্থানে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কুড়িগ্রাম জেলার সহকারী কোচ বিজন কুমার দাস।

তিনি জানান, শাহীন ২০১৫-১৬ সালে কুড়িগ্রামের অনূর্ধ্ব-১৬ জেলা টিমে প্রথম অংশগ্রহণ করে। প্রায় ৬ ফিট লম্বা এই ছেলেটির দুরন্ত বোলিং দেখে তাকে দলে নেওয়া হয়। এর আগে গ্রামেগঞ্জে সে টেপ টেনিস দিয়ে খেলাধুলা করত। দুই বছর খেলোয়াড়ি জীবনে সে অর্থের অভাবে সাইকেলে করে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কুড়িগ্রামে আসত। ২০১৭-১৮ সালে বিকেএসপির হান্টিং দলে ক্রিকেট কোচ রুশো তাকে মনোনয়ন দেন। এরপরই সে পাড়ি জমায় বিকেএসপিতে। বিকেএসপিতে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলে সে সবার নজরে পড়ে। ইতোমধ্যে সে বয়সভিত্তিক খেলায় বাংলাদেশের হয়ে শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডে খেলে এসেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে জায়গা করে নেয়।

শাহীন আলমের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের যমুনা পাইকপাড়া এলাকায়। বাবার নাম শাহাদত হোসেন এবং মায়ের নাম শাতিনা বেগম। তিন ভাই-বোনের মধ্যে শাহীন আলম সবার ছোট। বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। শাহীনের বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালান। নিজের বলতে ভিটা বাড়িসহ ২ শতক জমি রয়েছে।

ছেলের এ সাফল্যে শাহাদত হোসেন এখনো বুঝতে পারেননি তার সন্তান কী ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যুব বিশ্বকাপ জয়ের পরদিনও অভাবের তাড়নায় তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করতে যান। বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে যখন তার খোঁজখবর নিচ্ছিলেন তখন একটু আনন্দ ও গর্ব অনুভব করছিলেন তিনি।

ছেলের এমন সাফল্যে ভীষণ আনন্দ অনুভব করছেন শাহীনের মা। সকলকে বলছেন, ‘মোর ছওয়াটার জন্যে তোমরাগুলা দোয়া করবেন। ওই যাতে আরো ভালো খেলবার পায়।’

টেলিফোনে এই প্রতিবেদককে শাহীন আলম জানান, যুব বিশ্বকাপ বিজয়ী দলের সদস্য হতে পেরে আমি ভীষণ গর্বিত। যদিও আমি একটি ম্যাচও খেলতে পারিনি। তারপরও এই টিমের সদস্য হতে পেরে ভীষণ খুশি। এই সাফল্য ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করব।

আরও পড়ুন: প্রক্সি দিতে গিয়ে ধরা খেল যুবক, সাজা ১ বছর

কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হাসান লোবান জানান, অল্প সময়ে সে জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে জায়গা করে নিয়েছে। পারিবারিক অনটনের কারণে অনেক কষ্ট করে তাকে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়ামে এসে প্র্যাকটিস করতে হয়েছে। বিকেএসপিতে যাওয়ার মতো অর্থও তার ছিল না। অনেকে তাকে ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করায় সে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে। সে এখন বাংলাদেশের পাশাপাশি আমাদের জেলারও গর্ব।

ওডি/এসএএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড