ক্রীড়া ডেস্ক
খেলার মাঠে হাজারো দর্শক থাকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ প্রদানের জন্য। কিন্তু তাদের মধ্যে দুএকজনই নজর কাড়তে পারেন। গত কয়েক বছর ধরে যারা মাঠে গিয়ে কিংবা টেলিভিশনে খেলা দেখেন তারা অবশ্যই বাংলাদেশের খেলায় একজন দর্শককে দেখেই থাকেন। দেশের মাঠে কিংবা বিদেশে বাংলাদেশের খেলা চললেই তাকে দেখা যায়। বাঘের বেশে প্রতিটা খেলায় মাঠে হাজির হন তিনি। নাম তার শোয়েব আলী বুখারী।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের আইকনিক ফ্যান শোয়েব আলী সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপ, শ্রীলঙ্কা ও সদ্য শেষ হওয়া ভারতে বাংলাদেশের দলকে সাপোর্ট করতে বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন। তবে সবগুলো ম্যাচই তিনি দেখেন নিজের অর্থায়নে।
দেশকে ভালোবাসেন, দেশের ক্রিকেটকে ভালোবাসেন বলে তিনি সবকিছু বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশ দলের সাথে দেশ বিদেশে ঘুরেন ওয়ার্কশপে কাজ করা শোয়েব আলী। সদ্য শেষ হওয়া ভারত সফরে যেখানে ক্রিকেটাররা আকাশ পথে উড়াল দেন, সেখানে তিনি দীর্ঘ সময় ট্রেনে চড়ে পাড়ি দেন ভারতে। বিদেশ সফরে যে পরিমাণ খরচ হয় তার; এসব টাকাই পরিশোধ করতে আজ আইকনিক এই ফ্যান চালাচ্ছেন ‘উবার’।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ভিক্তিক একটি সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মোটরগাড়ি ঠিক করার একটি ওয়ার্কশপ ছিল শোয়েবের। খেলা দেখার পাগলামিতে সেটি বন্ধ করতে হয়েছে। বিশ্বকাপ, শ্রীলঙ্কা আর ভারত সফরের পর মাথায় ঋণের বোঝা। বাধ্য হয়ে শোয়েব এখন উবার চালকের ভূমিকায়।
দেশের একজন আইকনিক ক্রিকেট সমর্থককে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস উবারের কার চালাতে দেখা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। তবে অস্বাভাবিক ঠেকল তার জীবনচিত্র। খেলা দেখার তাড়নায় অনেক টাকা ঋণ করেছেন। এবার তাই বিপিএলের মত বড় টুর্নামেন্ট ফেলে অর্থের পেছনে ছুটতে হচ্ছে তাকে।
গত বিপিএলেও নিজে গ্যালারিতে ছিলেন শোয়েব, আর এবার তিনি অন্য সমর্থকদের ট্রিপে করে নামিয়ে আসেন মিরপুর স্টেডিয়ামের সামনে।
শোয়েবের অবশ্য আক্ষেপ নেই; তিনি জানান, 'গাড়ি তো কেউ শখ করে চালায় না। পেটের জন্য চালায়। সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে আসলে আল্লাহ একটা রাস্তা খুলে দেন। খেলা দেখতে গেলে ওয়ার্কশপের কাস্টমাররা ফিরে যেত, পরে আর আসতো না। খেলা দেখতে গিয়ে আজকে ওয়ার্কশপও নেই, অবস্থাও অতটা ভালো নেই।'
আরও পড়ুন : সুযোগ পেয়েই দুই আর্জেন্টাইনের বাজিমাত
শোয়েব আরও বলেন, 'খেলা দেখতে গিয়ে অনেক টাকার ঋণ হয়েছি। স্পন্সর পাওয়া যায় না। বিশ্বকাপ দেখতে ইংল্যান্ড যাওয়ার সময় একটা প্রতিষ্ঠান স্পন্সর হল, কিন্তু সেই টাকা এখনো পাইনি। প্রতি সপ্তাহে ওদের কাছে যাই। মিডিয়ায় বলতে গেলে হয়ত যা পাওয়ার কথা সেটাও পাব না, বা তারা রাগ করবে।'
শোয়েব প্রথম মাঠে গিয়ে খেলা দেখেন ২০০৪ সালে; নিউজিল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের সময়। আফতাব আহমেদ ৫ উইকেট নিলেন, কিন্তু ম্যাচ হেরে গেল বাংলাদেশ। সে সময় তার মনে হয়েছে, গ্যালারিতে বসে এমন কিছু করা দরকার, যাতে খারাপ সময়েও খেলোয়াড়রা উৎসাহ পান। সেই থেকেই শুরু।
ওডি/এএপি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড