ক্রীড়া ডেস্ক
রোজারিও। এই শহরটি আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের সবচেয়ে বড় শহর। যেখানে জন্ম নিয়েছেন ফুটবলের মহারাজা লিওনেল মেসি। এই শহরের অলি-গলিতে কেটেছে মেসির শৈশব। নানান সময়ে মেসির মুখ থেকে এই শহরটির কথা শোনা গেছে। ফুটবলের রাজত্ব করা মেসির জন্মস্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে ভিন্নধর্মী পদক্ষেপ নিয়েছে রোজারিওবাসী। রঙ-তুলির আঁচড় আর গ্রাফিতিতে সাজিয়ে উৎসবে মেতেছে গোটা শহর।
পারানা নদীর তীরে রোজারিও শহর। উনিশ শতকে স্বাধীন হওয়ার পর যাকে মানুষ সবচেয়ে বেশি চিনেছে একটি কারণেই। এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় ফুটবল তারকা মেসির জন্মস্থান যে এই রোজারিওতে।
শৈশব থেকে মেসির তারকা হয়ে ওঠার গল্পের শুরু এখানেই। পরম মমতায় তাই এলএমটেনকে আগলে রাখতে চায় আর্জেন্টিনার এই শহর। মেসির ছেলেবেলাকে স্মরণীয় করে রাখতেই তাকে নিয়ে উৎসবে মেতেছে রোজারিওবাসী। নানা রঙে সাজানো হয়েছে গোটা শহরকে। দৃষ্টি মেলতেই চারিদিক মেসিময়।
মেসির প্রথম স্কুল, প্রথম ক্লাব আবান্ড্রাদো গ্রোনডোলি সব কিছুই সেই স্মৃতিগুলোকে মনে করিয়ে দিতে যেন কয়েক বছর পিছিয়ে গেছে। তুলির আঁচড় আর নানা রকম গ্রাফিতিতে তা ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টার কমতি নেই শিল্পীদের। মেসির ছোটবেলার বন্ধুদের কাছেও বিষয়টি গর্বের, ভালবাসার।
একবার এক সাক্ষাৎকারে কিং মেসি রোজারিও নিয়ে বলেছিলেন, এই শহরটি আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের সবচেয়ে বড় শহর। আমরা এই শহরের উত্তর দিকের ব্যারিও লাস হেরাসে খুব সাধারণ কিন্তু সুন্দর একটি বাড়িতে বাস করতাম। আমার থেকে বয়সে বড় পাঁচ ভাই আর কাজিনদের সঙ্গে আমি ছোটবেলায় খেলতাম। আমার এখনো মনে পড়ে, আমাদের ছেলেদের সেই ছোট দলটি প্রতি সপ্তাহের শেষে নিয়ম করে ফুটবল খেলত। আমি অনেক ছোটবেলায় প্রথম ফুটবল উপহার পেয়েছিলাম। তখন আমি অনেক ছোট; আমার বয়স মনে হয় তিন কিংবা চার হবে। সেটি আমার জন্য সবচেয়ে বড় উপহার ছিল।
রোজারিওর স্মৃতি মনে করে মেসি আরও বলেছিলেন, আমাদের বাড়ির চারপাশে সবুজ উদ্যান ছিল। কিন্তু ফুটবল খেলার জন্য কোনো মাঠ ছিল না। আমাদের বাড়ি থেকে খুব কাছেই একটি পরিত্যক্ত সামরিক ক্যাম্প ছিল, যেটি আমাদের কাছে ব্যাটালন নামেই পরিচিত ছিল। সেই ক্যাম্পে বেশ কটি বড় সবুজ ঘাসের উদ্যান ছিল। আমরা তারের বেড়া ডিঙিয়ে চুপি চুপি চোরের মতো সেই ক্যাম্পে চলে যেতাম। তারপর সারা দিন ফুটবল নিয়েই পড়ে থাকতাম।
ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ২০০০ সালে মেসি রোজারিও ছেড়ে স্পেনের বার্সেলোনায় পাড়ি জমান। তখন বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। বাকি গল্পটা সবার জানা। শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকা এক কিশোরের সুপারস্টার মেসি হয়ে ওঠার পেছনে অসামান্য অবদান ক্লাব বার্সেলোনার। যার জন্য এখানকার মানুষের আলাদাভাবে টান আছে বার্সেলোনার প্রতি।
ছোটবেলায় এই বাড়িতে মেসি থাকতেন
কি অর্জন করেননি মেসি ফুটবল ক্যারিয়ারে! সর্বকালের সেরা ফুটবলার বলা হয় তাকে। ব্যক্তিগত সবরকম শিরোপাই জিতেছেন এই যাদুকর। জিতেছেন রেকর্ড ব্যালন ডি'অর, হয়েছেন ষষ্ঠবারের মতো ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়।
তবে একটা সময় হয়তো ফুটবলকে বিদায় জানাবেন মেসি। রোজারিওবাসীর স্বপ্ন একদিন মেসি ঘরে ফিরবে। মেসির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তার জন্মস্থানের লোকেরা। তাদের ভাষ্যমতে, মেসি বড় হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমাদের ভোলেনি। সে আমাদেরই একজন। এটা ভাবতেই ভীষণ গর্ব হয়।
ভবিষ্যতে এই শহরে মেসিকে নিয়ে যাদুঘর নির্মাণ করতে চায় রোজারিওবাসী।
ওডি/এএপি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড