• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কৃষি জমিতে ইটভাটা, বিপর্যয়ের মুখে গ্রামীণ পরিবেশ

  হারুন আনসারী, ফরিদপুর

১৪ অক্টোবর ২০১৯, ২১:০৭
ইটভাটা
কৃষি জমিতে গড়ে উটছে ইটভাটা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ফরিদপুর শহর ঘেঁষে বিভিন্ন গ্রাম এলাকার কৃষি জমিতে একের পর এক গড়ে উঠছে ইটের ভাটা। পদ্মা নদী থেকে সারাবছর ধরে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালি ও কৃষি জমির উপরি ভাগের মাটির সহজলভ্যতার কারণে এরই মধ্যে শহর সংলগ্ন ডিগ্রিরচর ইউনিয়নের সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় গড়ে উঠেছে এক ডজনেরও বেশি ইটের ভাটা। এর মধ্যে একেবারেই গ্রামীণ এলাকা আইজদ্দিন মাতব্বরের ডাঙ্গিতে মাত্র দু’শ গজের মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে তিনটি ইটভাটা।

এভাবে কৃষি জমি ধ্বংস করে একের পর এক ইটের ভাটা গড়ে ওঠায় কমে যাচ্ছে ফসলি জমি। গ্রামীণ সড়কে দিনরাত চলছে এসব ভাটার ইট, বালি ও খড়ির ট্রাক। সেই সঙ্গে নিরিবিলি গ্রামীণ পরিবেশগুলো বাইরে থেকে আসা শ্রমিকদের কারণে ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকায় পরিণত হচ্ছে। সেখানে বসবাসরতদের জন্য শিক্ষা ও চিকিৎসার সুব্যবস্থা হচ্ছে না। ইট ভাটার চিমনির ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরণের রোগ বালাই ছড়াচ্ছে। ফলে ধোঁয়া ও ধুলার দূষণে বিষাক্ত হচ্ছে পরিবেশ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আইজদ্দিন মাতব্বরের ডাঙ্গিতে কৃষি জমি ধ্বংস করে পাশাপাশি তিনটি ইটের ভাটা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে চান মিয়া ও লিয়াকত মাতব্বরের দুটো পুরনো ভাটার পাশাপাশি আরশাদ ব্যাপারী মালিকানাধীন এবিবি ব্রিক নামে নতুন আরও একটি ইটের ভাটা স্থাপন করা হয়েছে।

আইজদ্দিন মাতব্বরের ডাঙ্গির স্থানীয় বাসিন্দা নিরু ফকির অভিযোগ করে বলেন, অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে এসব ভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ইট ভাটার ধুলাবালি ও বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। কৃষি জমিতে এভাবে ইট ভাটা করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

সিদ্দিক মিয়া নামের আরেকজন গ্রামবাসী বলেন, এসব ইটভাটায় কাজ করার জন্য বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা এসেছে। তারা ভাটায় ক্লাবঘর করেছে। সেখানে নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয়। এরই মধ্যে যশোরের এক শ্রমিক স্থানীয় এক নারীকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ভাগিয়ে নিয়ে গেছে। এসব কারণে এলাকায় সামাজিক অবস্থানের অবনতি হচ্ছে। আমরা খুব বিপদে আছি।

এ ব্যাপারে এবিবি ভাটার মালিক আরশাদ ব্যাপারী বলেন, আমাদের দুই পাশে দুটি ভাটা থাকায় আমার জমিতে ফসল হচ্ছিল না। এলাকার লোকেরা সেখানে গরু ছাগল চড়াতো। এ কারণে আমিও নিরুপায় হয়ে সব জায়গা থেকে অনুমতি নিয়েই এই ইটভাটা দিয়েছি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ড. মো. লুৎফর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কৃষি জমি ও ঘনবসতিপূর্ণ জমিতে ইট ভাটার জন্য সাধারণত ছাড়পত্র দেওয়ার নিয়ম নেই। তবে অনেক ক্ষেত্রে স্ব স্ব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে কিছু ছাড়পত্র দেওয়া হয়ে থাকে। তবে বাস্তবে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো ইটভাটাকে অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ওডি/এএসএল

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড