• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

৩৫ বছরেও এমপিও ভুক্ত হয়নি স্কুল

  কবির হোসেন, কাপ্তাই রাঙ্গামাটি

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:৩৪
রাঙ্গামাটি
চন্দ্রঘোনা কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয় (ছবি : দৈনিক অধিকার)

প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৩৫ বছর পরও এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় হতাশ রাঙ্গামাটি জেলার চন্দ্রঘোনা কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবকরা। ফলে বিদ্যালয়ের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়ালেখার ভবিষ্যৎ শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যান, রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার কেপিএম শিল্প এলাকা হিসাবে সুপরিচিত চন্দ্রঘোনা কেপিআরসি এলাকা। ১৯৫৩ সালের কর্ণফুলী পেপার মিলস লি. (কেপিএম) এবং পরবর্তী ১৯৬৭ সালের কর্ণফুলী রেয়ন মিলস (কেআরসি) প্রতিষ্ঠার পর এ দুই শিল্প কারখানায় কর্মরত-কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারীদের সন্তানদের পড়ালেখার জন্য গড়ে উঠে ঐতিহ্যবাহী কেপিএম স্কুল এবং কেআরসি স্কুল।

বাংলাদেশ কেমিক্যালস ইন্ড্রাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসির) নিয়ন্ত্রণে এ দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ, বেতন ভাতাসহ যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হতো। কিন্ত কেপিএম স্কুলের কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে চললেও ২০০২ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন কেআরসি মিল সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিসিআইসি কর্তৃক প্রতি মাসে, মাসে দেওয়া স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতাসহ সকল সুযোগ সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়।

আরও জানা যায়, স্বনামধন্য শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ২০০২ সালের আগে রাঙ্গামাটি জেলার মধ্যে ফলাফলের দিক দিয়ে তিনবার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান গৌরভ অর্জন করা এ প্রতিষ্ঠানটি এরপর হতে তার ঐতিহ্য হারিয়ে বর্তমানে কোনো রকমে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এ সংকটের কারণে ২০০২ সালের পর থেকে একে, একে চাকরি ছেড়ে অন্য নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলে গেছে অত্র স্কুলের শিক্ষকরা।

স্কুলের ছাত্র নাঈম, ফয়সাল এরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাবান্ধব শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেক কিছুই করে চলছে। আমরা চাই আমাদের এ প্রতিষ্ঠানটি অতিদ্রুত এমপিও ভুক্তকরে আমাদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিবেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম জানান, বর্তমানে ছয় জন মহিলা শিক্ষক এবং চারজন পুরুষ শিক্ষক ৬ষ্ঠ হতে ১০শ্রেণি পর্যন্ত ৩শ ৫৪জন শিক্ষার্থীদেরকে পাঠদান করানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের থেকে প্রদত্ত সামান্য টিউশন ফি দিয়ে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের বেতনের হার এতো কম যে যা দিয়ে ওই শিক্ষকের পরিবারতো দূরের কথা নিজের হাত খরচও মিটে না। তিনি অতিদ্রুত কেআরসি স্কুলকে এমপিও ভুক্ত করার জন্য সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানান।

কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক দীর্ঘ দিন যাবৎ ধরে এ স্কুলের পরিচালনা কমিটির সাথে জড়িত আছেন। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয় এমপিও ভুক্ত হওয়া খুবই জরুরী, না হলে অচিরেই বন্ধ যাবে ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

তিনি আরও বলেন, রাঙ্গামাটির জেলার সাংসদ দীপংকর তালুকদার এ স্কুলের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বছর, বছর অনুদান দিয়েছেন। স্কুলের পাঠদান যাতে ব্যাহত না হয় তার জন্য তিনি তার তহবিল হতে নগদ অনুদান দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

কাপ্তাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাদির আহমেদ জানান, অনেকটা স্বেচ্ছাশ্রমে শিক্ষার্থীদের সামান্য বেতন নিয়ে পাঠদান করছেন। কিন্তু এ বেতন দিয়ে একজন শিক্ষকের পরিবার চালানো বর্তমান সময়ে অসম্ভব, তাই এ স্কুলটি দ্রুত এমপিও ভুক্ত হওয়া জরুরী বলে মন্তব্য করেন।

ওডি/এমবি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড