• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুন্সীগঞ্জে তৈরি হচ্ছে কারুকার্যময় কাঠের ঘর

  রিয়াদ হোসাইন, মুন্সীগঞ্জ

০৭ জুলাই ২০১৯, ১৫:৫৭
কাঠের ঘর
কারুকার্য খচিত কাঠের ঘর (ছবি : দৈনিক অধিকার)

মুন্সীগঞ্জে কাঠ ও টিনের তৈরি ঘরের চাহিদা অন্যতম। এ জেলার অধিকাংশ মানুষ কাঠ ও টিনের তৈরি ঘরে বসবাস করে থাকেন। জেলায় প্রতিটি এলাকায় নকশা খচিত ঘর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কাঠ ও টিনের তৈরি ঘরের প্রতি বিশেষ দুর্বলতা তা যে কেউ এই জেলায় ভ্রমণ করলে বুঝতে পারবে। এলাকার ধনী, গরিব নির্বিশেষে প্রায় সবার বাড়িতেই দেখা মিলবে এই ঘরের।

(ছবি : দৈনিক অধিকার)

কাঠের ঘর তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

তাই এই চাহিদাকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন জাগায় গড়ে উঠেছে ঘরের মেলা বা ঘর বিক্রির ব্যবসা। তবে এই ব্যবসা শুরু হয় গত শতকের নব্বইয়ের দশকে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় নতুন ঘর তৈরি করে রাখা হয়। ক্রেতারা এসে পছন্দ অনুযায়ী ঘর কিনে নিয়ে যায়। একটি রেডিমেড ঘর বাড়িতে নিয়ে ‘সেট’ করতে দুই থেকে চার দিন সময় লাগে।

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার কাটাখালী, হাতিমারা, টংগিবাড়ি উপজেলার চূড়াইন, বজ্রযোগনী, পাইকপাড়া, বেতকা, সিরাজদিখানের মালখানগর, লৌহজংয়ের কাঠপট্টি এলাকায় দেখা যায় বিক্রির উদ্দেশ্যে নকশা খচিত নতুন নতুন ঘর দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। দোচালা, তিন চালা, চার চালা, সাত চালা ঘর তৈরিতে সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করেন এ জেলার কাঠমিস্ত্রিরা। নকশা ভেদে আড়াই থেকে ২০ লাখের অধিক টাকা পর্যন্ত একেকটি ঘর বিক্রি হয়।

চূড়াইনের কাঠমিস্ত্রি রাজা ও দুলাল জানান, ঘর তৈরিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার ফলে আগের থেকে এখন আমাদের ঘর তৈরিতে কষ্ট কম হয়। এখানে প্রতিদিন কাঠমিস্ত্রি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পান আবার কেউ কেউ মাস হিসেবে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা বেতনভুক্ত। টিন ও কাঠের দৃষ্টিনন্দন ২৩ বন্দরের (২৩/১৩ ফুট) ও বারান্দাসহ একটি ঘর তৈরি করতে ২০ জন মিস্ত্রির দুই থেকে তিনদিন সময় লাগে।

(ছবি : দৈনিক অধিকার)

তৈরিকৃত কাঠের ঘর (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বজ্রযোগনী এলাকার কাঠমিস্ত্রি পিন্টু ঘোষ বলেন, মানুষের চাহিদা দিনদিন বেড়ে চলেছে। এখন সবাই উন্নতমানের কাঠ দিয়ে ঘর তৈরি করছেন। নাইজেরিয়া, শাল ও লোহাকাঠ দিয়ে ঘর বানাচ্ছেন।

বটতলা এলাকার কাঠমিস্ত্রি প্রতোষ চন্দ্র জানান, একটি ২৩ বন্দর (২৩/১৩ ফুট) ঘর চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা, ২১ বন্দর (২১/১১ ফুট) ঘর তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ, আর ১৭ বন্দরের (১৭/৯ ফুট) ঘর দেড় থেকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। আগে শুধু একতলা ও দোতলা ঘর তৈরি করে বিক্রি করা হতো, এখন তিনতলা ঘরও তৈরি করা হয়। ক্রেতারা ঘর কেনার পর কয়েকটি অংশ আলাদা করে নিয়ে যায়। বাড়িতে ভিটে তৈরি করে অংশগুলো জোড়া লাগালেই হয়ে যায় বসবাসের উপযোগী।

স্থানীয়রা জানান, কাঠ ও টিনের তৈরি ঘর দেখতে সুন্দর ও টেকসই হওয়ায় এই এলাকায় এর কদর বেশি। টিন ও কাঠের তৈরি একতলা বা দুইতলা বিশিষ্ট এ ঘরগুলো কেউ সৌখিন আবার অনেকেই কিনছেন তাদের সামর্থ্য বুঝে। তৈরি এ ঘরগুলো দেখতে অনেক সুন্দর ও কারুকার্য খচিত। ঘরের এক একটি অংশ আলাদা আলাদা করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া যায়।

এছাড়া কারিগরদের নিপুণ শৈল্পিক হাতের ছোঁয়ায় ঘরগুলো তৈরি হয়ে থাকে। নদী ভাঙন প্রবণ এলাকার অনেক মানুষ এ ঘরগুলো কিনে থাকেন।। ভাঙনের শিকার হলে সহজেই সরিয়ে নেওয়া যায় এই ঘর। তা ছাড়া বিপদ-আপদে ঘর বিক্রি করে নগদ অর্থও পাওয়া যায় তাই এই অঞ্চলে এই ঘরের চাহিদা আকাশ ছোঁয়া।

ওডি/এএসএল

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড