• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

৪৪ বছর পরে রেশমের সর্বোচ্চ দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরা

  চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

২৫ জুন ২০১৯, ০৯:১৮
গুটিপোকা
বাড়ির উঠানে গুটিপোকা শুকাচ্ছে চাষিরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

আম, কাঁসা ও রেশমে পরিচতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। এ জেলায় সব চেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় শিবগঞ্জে। আর রেশমের চাষ হয় সীমান্তবর্তী ভোলাহাট উপজেলায়। এক সময়ে ভোলাহাট উপজেলাকে রেশম চাষের উপজেলা হিসেবেই মানুষ চিনতো। কিন্তু কালের বিবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে রেশমের ঐতিহ্য। স্থানীয় রেশম বিভাগের উদাশীনতা ও নায্যমূল্য না পেয়ে চাষিরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল রেশম চাষ থেকে। ফলে ৩শ বিঘা থেকে রেশম চাষ নেমে আসে প্রায় ১শ বিঘাতে।

ভোলাহাট রেশম সম্প্রসারন কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি বছরে শুধু মাত্র ভোলাহাট উপজেলাতে ৩শ ৫০জন চাষির মাধ্যমে রেশম চাষ হয়েছে প্রায় ২শ ১৭ বিঘা জমিতে। এর মধ্যে রেশম বোর্ডের জমিতে হয়েছে ৬৭ বিঘা ও উপজেলাতে চাষিরা চাষ করেছেন ১শ ৫০ বিঘাতে। তাদের মধ্যে একজন যাদুনগর গ্রামের মুন্টু আলী। তিনি প্রায় ৪২ বছর ধরে রেশম চাষে জড়িত। তার সংসারে রয়েছে ৩ ছেলে ৩ মেয়ে ও স্ত্রী। যুবক বয়স থেকেই তিনি জড়িয়ে পড়েন রেশম চাষে।

মুন্টু আলী বলেন, ১৯৭৫সাল থেকে রেশম চাষ করে আসছি। প্রথমে ভালো দাম পাওয়ায় প্রায় ৫ বিঘা জমিতে রেশম চাষ করি। কিন্তু পরবর্তীতে রেশমের দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ি। তার পরেও ছাড়েনি এই পেশা। বর্তমানে রেশমের দাম ভালো পাওয়ায় এবার ২ বিঘা জমিতে রেশম চাষ করেছি। চলতি বছর ১শ ৫০টি ডিম নিয়েছিলাম ভোলাহাট রেশম সম্প্রসারন কার্যালয় থেকে। তা থেকে ৩ মণ গুটি পেয়েছি। গুটিগুলো প্রতি মণ ১৪হাজার টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি। সরকারিভাবে বিনা মূল্যে ডিম, তুত গাছ, চাষের জন্য প্রতি ৫ কাঠায় ৩ হাজার টাকা, ডালা, নেট ইত্যাদি পাওয়ায় রেশম থেকে আয় হচ্ছে ভালো। এ ছাড়া সরককারি উদ্দ্যোগে রেশম ঘর বানানোর জন্য জন প্রতি ৩০ হাজার করে টাকাও দিয়েছে সরকার।

রেশম চাষি মুন্টু আলী আরও বলেন, আমি ৭৫ সাল থেকে রেশম চাষ করে আসছি। কিন্তু ১৯ সালে এসে যে ফলনটা পেয়েছি এর আগে কোনদিনই পাইনি। বর্তমানে আমি পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোই আছি। রেশম চাষিদের প্রতি সরকারের এমন সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকলে ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ভোলাহাটের রেশমের হারানো ঐতিহ্য আবারও ফিরে আসবে।

ভোলাহাট রেশম রেশম সম্প্রসারন কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক (জোনাল কার্যালয়) মো. মাসুদ রেজা জানান, ভোলাহাটে এক সময় অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরাই রেশম চাষে জড়িত ছিল। কিন্তু বিএনপি সরকারের সময় ভারত ও চীন হতে সুতা আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে দেয়ায় বাংলাদেশের রেশম চাষিরা সুতার দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে।

যার কারণে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় রেশম চাষ। কিন্তু বর্তমান সরকার রেশমের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নানান উদ্দ্যোগ গ্রহণ করায় এবং চাষিদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ায় আবারও সম্প্রসারিত হচ্ছে রেশম চাষ। আশা করা হচ্ছে আগামীতে ভোলাহাটে সেই আগের মতই রেশম চাষে আগ্রহী হবে চাষিরা।

ওডি/এসজেএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড