পলিথিন দিয়ে পেট্রল ও ডিজেল তৈরি করলেন কাঠমিস্ত্রি

ক্ষতিকর বর্জ্য পলিথিন দিয়ে পেট্রল ও ডিজেল তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন গাংনীর হেমায়েতপুরের কাঠমিস্ত্রি জসিম উদ্দিন টুটুল। প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহার করেছেন টিনের তৈরি ড্রাম, প্লাস্টিকের মুখ ও কয়েকটি বোতল। আর ওই পেট্রোল ও ডিজেল দিয়ে চলছে মোটরসাইকেল ও ইঞ্জিনচালিত সেচ পাম্প। তবে প্রযুক্তিগত সহায়তা না থাকায় তিনি পেট্রোল ও ডিজেল বাজারজাত করতে পারছেন না। তিনি সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন।

টুটুল জানান, সম্প্রতি ইউটিউবে পলিথিন থেকে কীভাবে পেট্রোল তৈরি করা যায় তা দেখে উদ্বুদ্ধ হন। পরে বাজারের উচ্ছিষ্ট পলিথিন কুড়িয়ে জমা করেন। বাজার থেকে একটি টিনের ড্রাম ও কয়েকটি বোতল জোগাড় করেন। বাড়িতে বসে তিনি স্থানীয়ভাবে নির্মিত চুলার ওপরে টিনের ড্রাম বসিয়ে তাতে পলিথিন ভরে তাপ দেন। ড্রাম থেকে সংযুক্ত পাইপের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে ফোটায় ফোটায় তেল। এক কেজি পলিথিন থেকে প্রায় ৭৫০ গ্রাম জ্বালানি উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে ৩০০ গ্রাম পেট্রল আর ৪৫০ গ্রাম ডিজেল।

তিনি আরও বলেন, সরকার যদি প্রতিটি জেলায় তেল পরিশোধন মেশিন দিয়ে সহায়তা করে তাহলে আমার মতো অনেক যুবকই এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হতে পারবে।

টুটুলের স্ত্রী ফেন্সি জানান, মাঝে মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্ভাবনী বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। সম্প্রতি দেশের উত্তরাঞ্চলে পেট্রল তৈরির বিষয়ে অবগত হন। তারপর শুরু হয় পেট্রল ও ডিজেল তৈরির কার্যক্রম।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকায় অনেকে হাসি তামাশা করলেও এখন অনেকেই বাহবা দিচ্ছেন। কেউবা অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

স্থানীয় এক মোটরসাইকেল চালক জানান, তিনি এ পেট্রল ব্যবহার করেছেন। এতে মোটরসাইকেল চললেও মাঝে মাঝে একটু সমস্যা হচ্ছে। তেলটি রিফাইন করা হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। একই কথা জানালেন সেচ পাম্প মালিক আব্দুল মান্নান। তিনি তার তিনটি সেচ পাম্প চালাচ্ছেন এই ডিজেল দিয়ে।

গাংনী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম জানান, এটি একটি চমকপ্রদ ব্যাপার। এ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন ঘটিয়ে পলিথিন বর্জ্যরে সঠিক ব্যবহার করে এবং তা থেকে তেল উৎপাদনের মাধ্যমে জ্বালানির চাহিদা মেটানো সম্ভব।

ওডি/এমবি