• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাখির কলকাকলিতে মুখরিত সাতছড়ি উদ্যান

  আবুল হাসান ফায়েজ মাধবপুর, হবিগঞ্জ

১০ মে ২০১৯, ১৬:২৩
হবিগঞ্জ
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বিভিন্ন প্রজাতি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হবিগঞ্জের সাতছড়ি উদ্যান। ২০০ এর অধিক প্রজাতির বৃক্ষরাজিতে অবস্থানকারী পাখিদের ডাকে মুগ্ধ হয় জাতীয় উদ্যানে আসা পর্যটকরা।

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর ও চুনারুঘাট এই দুই উপজেলার সীমান্তে অবস্থিত রঘুনন্দন পাহাড়। ওই পাহাড়ের ৬হাজার ২শত ৫ হেক্টর সংরক্ষিত বনভূমির অভ্যন্তরে ২শত ৪৩ হেক্টর বনভূমি নিয়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৫ সালে।

নিসর্গ নামক এনজিও বনবিভাগের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করে আসছে সাতছড়ি উদ্যানের। পাহাড়ি ৭টি ছড়া এই বনভূমির ভিতর দিয়ে প্রবহমান আছে বিধায় এর নামকরণ করা হয়েছে সাতছড়ি।

বন্য কুকুর, কাল ভল্লুক, চিতা বিড়াল এবং বনরুইসহ জীব বৈচিত্রে অত্যন্ত সমৃদ্ধ এ বনাঞ্চলটি পাখি প্রেমীদের জন্য এটি একটি স্বপ্নভূমি। ১৯৮৩সালে রোপনকৃত ৫হাজারেরও বেশি পামগাছ ছাড়াও সেগুন, গর্জন, চাপালিশসহ এ বনে রয়েছে দুর্লভ প্রজাতির ঔষধি বৃক্ষ, লতা গুল্ম এবং অর্কিড সমৃদ্ধ অসংখ্য প্রজাতির উদ্ভিদকুল। উদ্ভিদকে আকরে ধরে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে এ বনে অবস্থান করছে বানর, হরিণ, অজগর, কিং কোবরার মত বিষাক্ত সাপও।

রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়। চোখে পড়ে নয়নাভিরাম নানা রং এর প্রজাপতি। উদ্ভিদ ও প্রাণী কূলের সমন্বয়ে সাতছড়ি হয়ে উঠেছে ভ্রমণ পিপাসুদের আত্মতৃপ্তি ও শিক্ষণীয় এক অনন্য স্থান।

প্রাণীকূলের খাদ্য সরবরাহের জন্য বনবিভাগ গত অর্থ বছরে বনের ভিতর ১৫ হেক্টর পশুখাদ্য উপযোগী ফল ফিডার ও মিশ্র বাগান তৈরি করেছে। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বনের অপূর্ব সংমিশ্রণ রয়েছে সাতছড়িতে। এ অর্থ বছরে আরও ২০ হেক্টর পশু খাদ্য উপযোগী ফলবাগান করা হবে বলে সাতছড়ি বিট কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম সামসুদ্দিন জানিয়েছে। ভ্রমণ পিপাসুদের আনন্দদান ও শরীর চর্চার অংশ হিসেবে এখানে রয়েছে ট্রি অ্যাডভেঞ্চার।

বিশালাকৃতির বৃক্ষরাজি সমৃদ্ধ ঘন বনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাষ্ঠখণ্ড পরিণত হয়েছে জীবাশ্মতে, অতি দুর্লভ প্রজাতির উল্লুকের ডাক এবং বনে বসবাসরত ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি উপভোগ করতে পর্যটকরা নিতে পারবেন প্রশিক্ষিত ইকো-ট্যুও গাইডের সহায়তা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের রাত্রি যাপনের জন্য রয়েছে ডরমেটরি। দেশি বিদেশী পর্যটকদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ঢাকার উত্তরা থেকে ঘুরতে যাওয়া এক পর্যটকের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, সাতছড়ির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করেছে। বনের ভিতরে কিংবা আশপাশে কোন কটেজ না থাকায় ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঢাকায় ফিরে যেতে হবে। তিনি আক্ষেপের সাথে আরও জানান, চা বাগান বেষ্টিত সাতছড়িতে ভাল কোন টি স্টলও পাওয়া গেলনা।

পশু পাখি ও বৃক্ষরাজির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আশা দেশি বিদেশী পর্যটকদের কাছ থেকে ২০১৭-১৮অর্থ বছরে ১১লাখ ৮৪হাজার ৪শত ২৫টাকা রাজস্ব আদায় হলেও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১৪ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাহ্মুদ হোসেন জানান। তিনি আরও জানান আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় পাম প্রক্রিয়াকরণ কিংবা তেল উৎপাদন আমাদের দেশে আজও সম্ভব হয়নি। ৫ হাজারেরও বেশি পামগাছের ফলগুলো থেকে তেল উৎপাদন করা গেলে এ থেকে অনেক টাকা আয় করা যেত।

ওডি/এমবি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড