• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুন্সীগঞ্জে মিলল ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন

  রিয়াদ হোসাইন, মুন্সীগঞ্জ

০৯ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৫০
মুন্সীগঞ্জ
খননকৃত অংশ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

মুন্সীগঞ্জের রঘুরামপুর ও নাটেশ্বরে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজের সময় পিরামিড আকৃতির সমাধি পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের অধ্যাপক এবং বিক্রমপুর প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা কর্মসূচির গবেষণা পরিচালক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।

এছাড়াও ঐতিহাসিক বল্লাল বাড়িতে উৎখননে প্রাচীন বসতির আলামতসহ নানা ধরনের মৃৎপাত্র, ধাতব ও পাথরের প্রত্নবস্তু, উদ্ভিজ্জ ও প্রাণিজের অবশেষ ইত্যাদি আবিষ্কৃত হয়েছে। যা বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জের প্রাচীন ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করবে ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাবে।

মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা কর্মসূচির ২য় পর্যায় ২০১৮-১৯ এ আবিষ্কৃত প্রত্নবস্তু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলনে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ঐতিহাসিক বল্লাল বাড়িতে উৎখনন ছাড়াও এর আগে আবিষ্কৃত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা কর্মসূচির গবেষণা পরিচালক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনা এতে উপস্থিত ছিলেন- মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আশফাকুজ্জামান, টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জগলুল হালদার ভুতু, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদ, টঙ্গীবাড়ীর ইউএনও হাসিনা আক্তার, প্রমুখ।

এ সময় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালেদ বলেন, রঘুরামপুর ও নাটেশ্বরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। রঘুরামপুর ও নাটেশ্বরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজের মাধ্যমে ঐতিহ্য সমৃদ্ধ হবে। খনন করে যে সব প্রত্নসম্পদ পাওয়া গেছে তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। এতে এখানে পর্যটকদের আগমন বাড়বে।

ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বছরের খনন কাজের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার হল পিরামিড আকৃতির স্তূপ। যা দেশের এ ধরনের সবচেয়ে বড় স্তুপ। যার একটি বাহুর দৈর্ঘ্য ৪৩.৫ মিটার। অনুমান করে জানা যায়, এর উচ্চতাও ৪৩.৫ মিটার। এই স্তূপ হলো মূলত বৌদ্ধ ধর্মের সমাধি এবং বৌদ্ধ ধর্মচর্চার কেন্দ্র। রঘুরামপুরে যে খননকাজ হচ্ছে এটি হচ্ছে বিক্রমপুরী বৌদ্ধবিহার। এর অংশবিশেষ খনন করে এই স্তূপ আবিষ্কার করেছি। দুই বছরের মধ্যে এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যায়, ২০১০-১৩ সাল পর্যন্ত ৯টি প্রত্নতত্ত্বস্থানে পরীক্ষামূলক খনন কাজ পরিচালিত হয়। রামপাল ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামে ছয়টি ভিক্ষু কক্ষ, একটি মণ্ডপ ও স্তূপ আবিষ্কৃত হয়।

২০১৩ সাল থেকে নাটেশ্বর দেউলে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে বৌদ্ধ মন্দির, অষ্টকোণাকৃতি স্তূপ, ইট নির্মিত রাস্তা, ইট নির্মিত নালা আবিষ্কৃত হয়। ২০১৩-২০১৮ সাল পর্যন্ত খননে পাঁচ হাজার বর্গমিটারের বেশি এলাকা উন্মোচিত হয়।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে পরীক্ষামূলক খননে বল্লাল বাড়ি থেকে প্রাচীন বসতির আলামত পাওয়া গেছে। নাটেশ্বরে পূর্ব-পশ্চিম প্রলম্বিত উত্তর বাহুটি ৪৩ দশমিক পাঁচ মিটার পাওয়া গেছে। নাটেশ্বর পিরামিড আকৃতির বাংলাদেশের বৃহত্তর বৌদ্ধ স্তূপটি ভারতবর্ষের বড় বড় স্তূপ যেমন, সাঁচি, ভারহুত, অমরাবতী এসবের সমগোত্রীয়। বৌদ্ধ স্তূপ বৌদ্ধধর্ম চর্চার কেন্দ্র।

উল্লেখ্য, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ও অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বিক্রমপুর প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা কর্মসূচিটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা কেন্দ্র ঐতিহ্য অন্বেষণ বিক্রমপুর প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা কাজ করে আসছে।

ওডি/এমবি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড