• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঝিনাইদহে জনবল সংকট : খুড়িয়ে চলছে মৃত্তিকা ইনস্টিটিউট

  শাহারিয়ার রহমান রকি, ঝিনাইদহ

০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:৪৩
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট
ঝিনাইদহ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ঝিনাইদহে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জনবল সংকটে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। এতে ব্যাহত হচ্ছে ঝিনাইদহ, যশোর ও মাগুরা জেলার মাটি পরীক্ষা কার্যক্রম। ফলে প্রতিষ্ঠানটি থেকে সুফল বঞ্চিত হচ্ছেন চাষিরা।

মাটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ঝিনাইদহ জেলা শহরের মুরারীদহ এলাকায় ৯৯ শতাংশ জমির ওপর ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটি।

(ছবি : দৈনিক অধিকার)

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে গবেষণা কাজে ব্যস্ত গবেষক (ছবি : দৈনিক অধিকার)

প্রতিষ্ঠাকালে প্রকল্পের আওতায় থাকলেও পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালে রাজস্বখাতে হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে মাটিতে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, লবনাক্ততা, জৈব পদার্থসহ ১৩ টি পুষ্টি উপাদানের বিষয়ে পরীক্ষা করে চাষিদেরকে পরামর্শ প্রদান করা হয়।

একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাসহ মাত্র ৪ জনকে দিয়ে চলছে এই প্রতিষ্ঠান। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকেই পরীক্ষা কার্যক্রমসহ প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করতে হয়। এতে করে পরীক্ষা কার্যক্রম চালাতে হাতে থাকে না পর্যাপ্ত সময়।

লোকবল না থাকায় ইনস্টিটিউটের অনেক কক্ষই তালাবন্ধ করে রাখা হয়। পড়ে থাকে চেয়ার-টেবিল। এতে নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্রসহ মূল্যবান সামগ্রী।

সাধারণত চাষি কিংবা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাটির নমুনা সংগ্রহ করে সেটা ল্যাবে পরীক্ষা করে চাষিদেরকে ফলাফল দেওয়া হয়। যেখানে মাটির একটি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দিতে সময় লাগে ৫-৭ দিন, সেখানে সময় লাগছে ২০-২৫ দিন। ফলে অনেক চাষিই মাটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারাচ্ছে। কেননা এক মৌসুম শেষে অন্য মৌসুমের ফসল লাগানোর আগে মাটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগায় পরবর্তী ফসল চাষের সময় থাকে না। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঝিনাইদহ, যশোর, মাগুরা জেলার চাষিদের।

(ছবি : দৈনিক অধিকার)

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ল্যাব রুম (ছবি : দৈনিক অধিকার)

মুরারীদহ এলাকার চাষিরা বলেন, এখন আর আমরা মটি পরীক্ষার জন্য সেখানে যেতে আগ্রহী না। কেননা আমাদের অনেক সময় ক্ষেপণ হয়। ফসল আবাদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। যদি সময় কম লাগতো তাহলে ভালো হতো।

প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী ফেরদৌস আলম বলেন, আমাদের লোকবলের কিছু অভাব রয়েছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা আমরা দতে পারি না। লোকবল পূরণ হলে কাজে আরও গতি আসত।

একমাত্র ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট হারুন অর রশিদ জানান, চাষিদের কাছ থেকে সংগৃহীত মাটি বিভিন্ন উপাদান দিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু আমাদের অনেক সময় লেগে যায়। এক একটি মাটির নমুনার পরীক্ষা ফলাফল দিতে ২০-২৫ দিন সময় লাগে। আরও নিজেদের গবেষণা কাজ ব্যাহত হয়।

প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও একমাত্র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম জানান, মাটির স্বাস্থ্য ভাল রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মাটির ১৩টি উপাদানের ওপর পরীক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে চাষিদের পরামর্শ কার্ড দিচ্ছি।

(ছবি : দৈনিক অধিকার)

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের অফিস কক্ষ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

তিনি আরও জানান, আমরা প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় গবেষণার ফলাফল চাষিদের ঠিকমত দিতে পারি না। সঠিকভাবে সেবা দানের জন্য প্রতি মাসেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে জানাচ্ছি শূন্যপদ পূরণ সহ নতুন করে লোকবল নিয়োগের জন্য। লোকবল আসলে আমরা পূর্ণাঙ্গরুপে সেবা দিতে পারব।

এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ২ জনের স্থলে ১ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ২ জন ল্যাবরেটরি অ্যাটেনডেন্ট এর পরিবর্তে ১ জন আছে, ১ জন অফিস সহকারী ও ১ জন কম্পিউটার অপারেটর রয়েছে।

গেল বছরে প্রতিষ্ঠানে জমা পড়েছে এক হাজারেরও বেশি মাটির নমুনা, ফলাফল দেওয়া হয়েছে মাত্র অর্ধেক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড