• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

খোকসার ভূঁইমালী ২৫ পরিবার পাইনি সরকারি সহায়তা

  মনিরুল ইসলাম মনি ও ওবাইদুর আকাশ

১৩ এপ্রিল ২০২০, ২৩:০৪
খোকসা
খোকসার ভূঁইমালী সম্প্রদায়ের একাংশ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

আমাদের কী খেঁত-খামার আছে? জোন (মজুর) খাটে, কিনে খাই। কাম নাই তো খাওয়া নাই। এভাবেই নিজেদের দুরাবস্থার কথা জানালেন করোনায় ঘরবন্দি খোকসার সীমান্তবর্তী সেনগ্রামের ভূঁইমালী সম্প্রদায়ের গৃহবধূ তিন সন্তানের জননী মিনা রানী।

তাদের সম্প্রদায়ের ২৫ পরিবারের কেউ এ পর্যন্ত সরকারি সহায়তা পায়নি। পরিবারগুলো খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। খোকসা ও পাংশা উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম সেনগ্রাম। এই গ্রামের ভূঁইমালীদের বাড়িগুলো ভাগ হয়ে গেছে দুই উপজেলার আমবাড়িয়া ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নে।

প্রতিটি দূর্যোগকালীন সময়ে সীমান্তবর্তী ভূঁইমালী সম্প্রদায়ের এই পরিবারগুলো সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিন সপ্তাহ ধরে তারা ঘরবন্দি। ছেলে-মেয়েরা কাজে যেতে পারছে না। আয় রোজগার না থাকায় তাদের সম্প্রদায়ভুক্ত প্রায় ৩৫০ জনের অনেকেই একবেলা পর একবেলা খেয়ে দিন পার করছেন।

কিন্তু সহায়তা তো দূরের কথা জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক ব্যক্তি বা সরকারি কর্মকর্তা তাদের খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি বলে অভিযোগ করেন চায়না রানী, ভারতী রানী, স্মৃতি রানীরাসহ অনেকেই।

খোকসা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরের পদ্মা নদী তীরের সেনগ্রামের ভূঁইমালী পল্লী। প্রায় তিন সপ্তাহ পর সোমবার (১৩ এপ্রিল) সকালে এই পল্লীর ছেলেরা বাজারে কাজে গিয়েছিল। কিন্তু সেনগ্রাম ও কালীতলা বাজারে ম্যাজিস্ট্রটের সঙ্গে সেনাবাহিনী আসায় সেলুনের দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিলে এলো।

তখন সকাল ১১ টার একটু বেশি বাজে। বাজারের কাজ ছেড়ে আসা ৩ যুবকের পরিবার আগামীকাল কী খাবে তা জানে না তারা। কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসা যুবকদের সাথে কথা বলার সময় ঘটনাস্থলে হাজির হন একজন মহিলা জনপ্রতিনিধির স্বামী।

তিনি দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ভূঁইমালী পল্লীতে সহায়তা দিয়েছেন। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ করে ওঠেন ভারতী রানীসহ ৭/৮ জন নারী। অবশেষে নিজের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেন জনপ্রতিনিধির স্বামী আব্দুল আজিজ।

বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য শিল্পী পারভীন জানান, আওয়ামী লীগের নেতারা ওদের কিছু ত্রাণ দিয়েছেন বলে শুনেছেন। এর বেশি আর কিছু জানে না বলে জানান।

আমবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম খান বিষু জানান, পরিষদের সচিব অসুস্থ থাকায় ভূঁইমালীদের মধ্যে ত্রাণ পৌঁচ্ছানো সম্ভব হয়নি। আগামী রবিবারে ত্রাণ দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী জেরীন কান্তা বলেন, আমবাড়িয়া ইউনিয়ন অংশের যতগুলো ঘর ভূঁইমালী সম্প্রদায় আছে তাদের বিষয়ে তার কাছে নোট আছে। ওই ইউনিয়নে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু হলে ভূঁইমালী সম্প্রদায়ের লোকেরা ত্রাণ পেয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, জমিদার জোদ্দারী আমলে ভূঁইমালী সম্প্রদায় তাদের ফসল ঘরে তোলার কাজ করত। কালের বিবর্তনে এই সম্প্রদায়ের লোকেরা স্ব পেশা বদলাতে বাধ্য হয়েছে। তারা এখন মাঠে ক্ষেতে খামারে কৃষি শ্রমিকের কাজ করে। তাদের সম্প্রদায়ের অল্প সংখ্যক লোকেরা বাজারে হাটে সেলুনের কাজ করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড