নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত কৃষি। ব্যাপক সম্ভাবনার সঞ্চার হওয়ায় বর্তমানে এই খাতে ঝুঁকছে শিক্ষিত বেকার যুবকরাও।
বাংলাদেশ কৃষি নির্ভরশীল দেশ হওয়ায় মোট জনগণের একটি বড় অংশ জীবনধারণের জন্য কৃষির ওপর নির্ভর করে। তবে ধান, গম, পাট ও চা দেশের প্রধান অর্থকরী ফসল হলেও এর পাশাপাশি টমেটো, সরিষা ও সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষিরা।
এরই ধারাবাহিকতায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ফরিদপুরের অনেক কৃষক। ফরিদপুরে সূর্যমুখী ফুলের চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে নানা প্রণোদনা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যেই কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এই খাতে কৃষির অপার সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে। জেলা সদরের ডোমরাকান্দিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে বিএডিসির ডাল ও তৈল বীজ খামার ভরে উঠেছে এই সূর্যমুখীর হলুদ গালিচায়।
এছাড়াও সূর্যমুখী চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের সাব্বির উদ্দিন।
সূর্যমুখী ফুল চাষে আশার হলুদ ফুলের সৌরভ ছড়াচ্ছে। গাছে গাছে ফুটেছে ফুল। পুরো মাঠ হলদে ফুলে সুশোভিত। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ দেখে দূর থেকে তাকালে যে কারও মনে হতে পারে প্রকৃতি যেন হলুদ গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে, যেখানে সাময়িক সময়ের জন্য হারিয়ে যেতে মন চায়। বিস্তৃত সূর্যমুখী বাগানের এই হলুদভাব দৃশ্যটি যে কারও মনকে আকৃষ্ট করে তুলে, যা পর্যটকদের কাছে টানছে এক অমোঘ আকর্ষণে।
কুলাউড়া কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ২০ বিঘা জমিতে কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। একই সঙ্গে সূর্যমুখী চাষ করে বেশি লাভবান হয়েছেন উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের সিংগুর গ্রামের সাব্বির উদ্দিন।
অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে হাইসান-৩৬ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়।
এছাড়া মৌলভীবাজারে সূর্যমুখী চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন সৈয়দ জামাল হোসেন। এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন তিনি। ইতোমধ্যে গাছে ফুল ধরতেও শুরু করেছে।
সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকরা এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে নেই টমেটো চাষিরাও। এবার চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভায় টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে।
টমেটোর ফলনে চাষিদের মুখে খুশির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। তবে খেত থেকে টমেটো তুলে বাজারজাত করার সময় চাষিদের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। টমেটো বাজারজাতকরণে সাহায্যের পাশাপাশি সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে হিমাগার নির্মাণের দাবি জানাচ্ছেন চাষিরা।
কৃষকরা জানায়, কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে টমেটো আবাদের পর খেত থেকে তা তোলা শুরু হয় মাঘ মাসের শেষের দিকে। দোহাজারী পৌরসভার দিয়াকুল, লালুটিয়া, রায়জোয়ারা, কিল্লাপাড়া, বেগম বাজার, চাগাচর এলাকায় শঙ্খ নদী তীরবর্তী চরে 'রাজা-১', 'হিরু প্লাস', 'রংধনু', ও 'ওয়ান্ডারফুল' জাতের টমেটোর চাষ করেছেন কৃষকরা। এছাড়া ঈদ পুকুরিয়া, জামিজুরী, বড়ুয়া পাড়া এলাকার চরেও টমেটোর চাষ করতে দেখা গেছে।
এ দিকে ঝিনাইদহের মহেশপুরের সীমান্তবর্তী কুসুমপুর মাঠপাড়া এলাকায় প্রথমবারের মতো ক্যাপসিকাম চাষ করে সফল হয়েছেন মামা সুলতান মাহমুদ ও ভাগ্নে আলমগীর কবির। ইতোমধ্যে বাগানের সবজি বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন তারা। সামনে আরও লাভের আশা তাদের।
ক্যাপসিকাম চাষি মামা সুলতান মাহমুদ জানান, বিদেশি এই ফসলের জন্য তাপমাত্রা লাগে ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এখানে অনেক সময় কম-বেশি হয়েছে তবুও আমাদের ফলনের কমতি হয়নি। এখানে তিন একর জমিতে ১৫শ চারা রোপণ করা হয়।
আরও পড়ুন : টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ব্রুনাই হাই কমিশনারের শ্রদ্ধা
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় বাহারি রকমের ফুলের চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন হাজারো কৃষক। সন্ধ্যা নদীর তীর ঘেঁষা নান্দনিক পরিবেশে গড়ে ওঠা এসব বাগানে রয়েছে দেশি বিদেশি নানা প্রজাতির ফুল ও ফলের চারা।
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের বাহারি রকমের ফুল ও ফলের চারা বা টব বিক্রিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার নার্সারি ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে সূর্যমুখী, টমেটো ও ক্যাপসিকাম ছাড়াও সরিষা, পান, লাউ, চাইনিজ কমলা, মাল্টা ও তরমুজ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষিরা। কৃষকরা জানান সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে এবং সার-বীজের দাম কম হলে কৃষি আরও ত্বরান্বিত হবে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড