পঞ্চগড় প্রতিনিধি
দেশের সর্ব উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চা আবাদের পাশাপাশি বেগুন চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এখানকার স্থানীয় চাষিরা। এ জেলায় শুরুতেই বেগুনের দামও ভাল পাওয়া যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এলাকার প্রয়োজন মিটিয়ে এ বেগুন চলে যায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
বেগুন চাষি আশরাফুল ইসলাম। বাড়ি তেঁতুলিয়ার টাইয়াগছ। গ্রামটি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ৪ নম্বর শালবাহান ইউনিয়নের। ওই ইউনিয়নের তাইয়াগছ এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম।
তিনি গত দুই বছর বেগুন চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছিল। তবু এ বছর দুই একর জমিতে বেগুন চাষ করেন। এ বছর বাজারে বেগুনের চাহিদা বেশি। তাই খরচের দ্বিগুণ টাকার বেগুন বিক্রি করে লাভবান হন তিনি।
বিভিন্ন আবাদ করে ভালো ফলন না পেয়ে যখন লোকসানের মুখে জর্জরিত, ঠিক তখনি বেগুন চাষ করে লাভের মুখ দেখেন এ কৃষক।
জানা যায়, চাষি আশরাফুলের দেখাদেখি এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক বেগুন চাষ শুরু করেছেন। এসব বেগুন স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকাররা কিনে নিয়ে যান। প্রথমে প্রতি কেজি বেগুন পাইকারি ২৫ টাকা দরে বিক্রি করলেও এখন ১৬-১৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আশরাফুল ও তার বাবা বাজারে বিক্রির জন্য ক্ষেত থেকে বেগুন সংগ্রহ করছেন।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিন বছর পূর্বে বাৎসরিক ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে কেরামত আলী নামে এক বৃদ্ধার কাছ থেকে এক বিঘা জমি বর্গা নেই। সেখানে ফুলকপি, বাধাকপি, লালশাক ও মুলাসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করে লোকসানে পড়ি। পরে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বৈশাখ মাসের শুরুতে পুরো এক একর জমিতে বেগুন চাষ করলে ৩০ শতক জমির বেগুন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। বাকি জমিতে বেগুনের বাম্পার ফলন হয়। এতে আমি লোকসানের ঘাটতি পূরণ করে লাভবান হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, সব মিলিয়ে আমার মোট খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত বেগুন বিক্রি করেছি দুই লাখ টাকা। এছাড়া ক্ষেতে যা বেগুন আছে তা বিক্রি করলে আরও কিছু টাকা পাওয়া যাবে।
স্থানীয়রা জানান, শালবাহান ইউনিয়নের এ অঞ্চলটি অপেক্ষাকৃত উঁচু। এসব জমিতে আমন চাষ হয় না। অন্য ফসলের আবাদ তেমন হয় না। উপজেলার পাশে হওয়ায় বিক্রি করার সুবিধা থাকায় এলাকার কৃষকেরা প্রতি বছর বেগুন চাষ করেন। বাজার ভালো থাকলে বেশি লাভ হয় আর দাম কমে গেলে ক্ষতি হয়। এরপরও প্রতি বছরই তারা বেগুন চাষ করেন।
উপজেলার শালবাহান, উত্তর-দক্ষিণ দর্জিপাড়ায় উঁচু এলাকায় বেগুন চাষ করেছেন কৃষকরা। এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে গোটা এলাকায় চলছে ব্যাপক কর্মব্যস্ততা। বেগুন ক্ষেত থেকে বেগুন সংগ্রহে ব্যস্ত কৃষকরা। এসব কাজে নিয়োজিত রয়েছে স্থানীয় শ্রমিকরা।
ঢাকা থেকে বেগুন ক্রয় করতে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুল বারেক বলেন, আমি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে বিভিন্ন সবজি ক্রয় করে ঢাকা পাঠাই। এ বছর আশরাফুলের কাছ থেকে দরে বেগুন কিনে ঢাকা পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলায় চা চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন শাক সবজির চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। আশরাফুল ইসলাম বেগুন চাষে লাভবান হয়েছে। এটা আমাদের গর্ব। তাকে আমরা প্রয়োজনীয় সবধরনের সেবা প্রদান করব।
ওডি/এমবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড