• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ফাইভজি আমাদের জন্য কতটা ক্ষতিকর?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৭
৫জি
ছবি : প্রতীকী

ফাইভজি সেবা ধীরে ধীরে আমাদের প্রযুক্তিক্ষেত্রকে প্রভাবিত করছে। ৩জি, ৪জির পর নতুন কিছু আসায় মানুষ এ ব্যাপারে আগ্রহও দেখাচ্ছে অনেক বেশি। কিন্তু এই ফাইভজি নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবটাও কিন্তু কম তৈরি হয়নি। ‘রোবট ২’ চলচ্চিত্রে অক্ষয় কুমার ৫জি সেবার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। এই তরঙ্গ নাকি মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের জন্য অসম্ভব ক্ষতিকর। আসলেও কি ব্যাপারটি সত্যি? দেখে নিন এক নজরে-

ফাইভজি কী?

ফাইভজি হলো মোবাইল নেটওয়ার্কের ৫ম জেনারেশন বা প্রজন্ম। মোবাইল প্রযুক্তি ধীরে ধীরে আরও উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য নানারকম পরিবর্তন নিয়ে আসছে। আর প্রতিটি প্রজন্মে নতুন সব দিক যোগ হচ্ছে মোবাইল সেবার সাথে। দ্রুত ডাউনলোড, সর্বোচ্চ গতিসহ আরও নানাবিধ ইতিবাচক দিক রয়েছে এই ফাইভজিতে। একটি যন্ত্রের সাথে অন্য যন্ত্রের যোগাযোগকে আরও সহজ করে দেওয়া হয়েছে এই সেবায়।

তবে একইসাথে এই ফাইভজি সেবাকে ঘিরে আছে বিতর্কও। বিশেষ করে আমাদের শরীরে এই সেবার কারণে তৈরি হওয়া ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রিঅ্যাকশন নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সবচাইতে বেশি।

ফাইভজি সেবা কতটা ক্ষতিকর?

ইএমএফ বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড হলো ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের কারণে তৈরি হওয়া এক ধরনের অবস্থা, যেটি মূলত বিদ্যুৎ তরঙ্গের মাধ্যমে তৈরি হওয়া শক্তির প্রকাশ। যেসব স্থানে পাওয়ার লাইন বা আউটলেট থাকে, সেখানে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হোক বা না হোক, ইলেকট্রিক ফিল্ড তৈরি হয়। আর অন্যদিকে, ম্যাগনেটিক ফিল্ড শুধু যেসব স্থানে ইলেকট্রিক কারেন্ট থাকে সেসব জায়গাতেই তৈরি হয়। এই দুটো জিনিস একত্রে মিলে ইএমএফ তৈরি করে।

ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গের দৈর্ঘ্য এবং মাত্রার উপরে ভিত্তি করে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন উৎপন্ন হয়, যাকে হার্টজের মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়। প্রতি সেকেন্ডে সাইকেলের পরিমাণের উপরে ভিত্তি করে এই গণনা করা হয়।

এ ক্ষেত্রে পাওয়ার লাইনের সর্বনিম্ন মাত্রা হলো ৫০ এবং ৬০ হার্টজ। এই নিম্ন-মাত্রার তরঙ্গ রেডিও তরঙ্গ, মাইক্রোওয়েভস, ইনফ্র্যারেড রেডিয়েশন, ভিজিবল লাইট এবং আলট্রাভায়োলেট স্পেকট্রামের সাথে মিশ্রিত হয়ে ননআয়োনাইজিং রেডিয়েশন তৈরি করে।

এতে করে পেটাহার্টজ এবং এক্সাহার্টজ স্পেকট্রা তৈরি হয়, যেগুলোর মধ্যে এক্স-রে এবং গামা রশ্মিও অন্তর্ভুক্ত। এগুলো হলো আয়োনাইজিং রেডিয়েশন, যেগুলোর মলিকিউল ভেঙে মানব শরীরে বড় রকমের ক্ষতি তৈরি করার সামর্থ্য আছে।

জনসাধারণ মূলত টেলিভিশন, মোবাইল ইত্যাদির মাধ্যমেই এই আরএফ-ইএমএফ এর সংস্পর্শে আসে। এর সবচাইতে সহজ উদাহরণটি হলো তাপমাত্রা। যন্ত্রে আরএফ-ইএমএফ-এর মাধ্যমে তৈরি হওয়া তাপমাত্রা আমাদের শরীরের কোষগুলোকে নষ্ট করে দেয়।

এ দিক দিয়ে দেখতে গেলে, এত দিন মোবাইলকে এই সমস্যা তৈরি করার ক্ষেত্রে একেবারেই নিচের দিকে রাখা হতো। ফাইভজি সেবার মাধ্যমে এই পরিমাণ এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১১ সালে এ এই রশ্মি ক্যানসারের জন্য ক্ষতিকর কি না তা জানতে মোট ৩০ জন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী একসাথে গবেষণা করেন।

ফলাফলে জানা যায় যে, ফাইভজির কারণে অ্যাকুয়েস্টিক নিউরোমা নামক ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও অন্যান্য ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে- এখন পর্যন্ত ফাইভজি মোবাইল প্রযুক্তির কোনো ভয়াবহ বা ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ করা যায়নি।

তবে সুইডেনের অরেব্রো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলজিস্ট ডক্টর লেনার্ট হারডেল এই তথ্যের বিরোধিতা করেন। তিনি নিজের গবেষণায় জানান যে, ৫জি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ডিএনএ নষ্ট করে দেওয়া, মানসিক চাপ প্রদান, নিউরোটক্সিসিটি, সন্তান জন্মদানে সমস্যা ইত্যাদি নানারকম দেখা দিতে পারে এ ক্ষেত্রে।

ফোরজি থেকে ফাইভজিতে যাওয়ার মূল কারণ হলো আর দ্রুতগতির এবং উন্নত রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করা। এটি কি আসলেই আমাদের জন্য ক্ষতিকর? সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সঠিক তথ্যটি কেউ জানেন না। সেটি জানতে হলে মানুষকে এখনো আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।

সূত্র- মেডিকেলনিউজটুডে।

ওডি/এনএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড