তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চেয়েছে বিআইজেএফ

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থের ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চেয়েছে বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)।

আইসিটি খাতে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠনটি মনে করে, এবারের বাজেটে এই খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকলে সেটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে রবিবার (২৩ জুন) ‘২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট: তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক সভায় বাজেট আলোচনায় বিআইজেএফ এই প্রতিক্রিয়া জানায়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, ২০১০ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ ছিল ৫০০ কোটি টাকারও কম।কিন্তু মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ সালের জাতীয় বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১৫ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইসিটি বিভাগের জন্য এক হাজার ৯২০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে; যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ ২০ শতাংশ বাড়ানোরও প্রস্তাব রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এ বরাদ্দ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে এ খাতের উন্নয়নে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সভায় বক্তারা বলেন, সরকার ২০১০ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এসময় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইসিটির চারটি বিষয়কে অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে- সরকারের দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে ই-গভর্নেন্স; মানবসম্পদ উন্নয়নে ই-শিক্ষা; দেশীয়-বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে ই-বাণিজ্য এবং ই-সেবা। কিন্তু এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে ই-বাণিজ্যে ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। আবার ইন্টারনেট ব্যবহার এবং ই-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আমদানিকৃত স্মার্টফোনে ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।বক্তারা তাই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের দাবিকে যৌক্তিক মনে করে ই-বাণিজ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার এবং আমদানিকৃত স্মার্টফোনে শুল্ক আগামী দুই বছরের জন্য ১৫ শতাংশ করার পরামর্শ দেন।

পাশাপাশি আলোচনা সভা থেকে রাইড শেয়ারিং, ই-কমার্স, কম্পিউটার ও হার্ডওয়্যার খাতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সুরক্ষায় বাজেটে সুস্পষ্ট ঘোষণা কথাও বলা হয়। এছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আরও দশটি সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। বিআইজেএফ সভাপতি মোজাহেদুল ইসলাম ঢেউয়ের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক হাসান জাকির মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এসময় বক্তব্য রাখেন বিআইজেএফর সিনিয়র সদস্য পল্লব মোহাইমেন, আব্দুল হক অনু, আব্দুল ওয়াহেদ তমাল প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইজেএফ সহ-সভাপতি নাজনীন নাহার, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাছিব রহমান, কোষাধ্যক্ষ এনামুল করিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জান্নাতুল ইসলাম রাহাদ এবং নির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান সোহেল ও রাহিতুল ইসলাম রুয়েলসহ অন্য সদস্যরা।

ওডি/টিএফ