সাইবার অস্ত্র তৈরি করছে জাপান

এবার নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য সাইবার অস্ত্র তৈরি করার উদ্যোগ নিচ্ছে জাপান। আর এ সাইবার অস্ত্র ম্যালওয়্যার ঘরানার হতে পারে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে।

জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ম্যালওয়ারটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহার করা হবে। আর এ ভাইরাস ও ব্যাকডোরবিশিষ্ট ম্যালওয়্যার তৈরি হয়ে গেলে এটিই হবে জাপানের তৈরি প্রথম কোনো সাইবার অস্ত্র।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি ঠিকাদারের মাধ্যমে চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ ম্যালওয়্যারটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে। তবে এখন পর্যন্ত যন্ত্রটির সক্ষমতা কেমন এবং কোন কোন পরিস্থিতিতে সরকার তা ব্যবহার করবে, আনুষ্ঠানিকভাবে সেসব বিষয়ে কিছুই জানা যায় নি।

এক লেখচিত্র থেকে অনুমান করা হচ্ছে, দেশটির কোনো প্রতিষ্ঠান সাইবার হামলার শিকার হলেই শুধু হামলাকারীর বিরুদ্ধে এ অস্ত্র প্রয়োগ করা হবে।

অন্যদিকে টোকিওর একটি সূত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, তারা এ অস্ত্র মূলত কৌশল প্রয়োগের জন্য ব্যবহার করবে। কেননা তাদের কাছে সাইবার অস্ত্র রয়েছে, এটি জেনেই বাইরের শক্তি হামলা করার আগে দ্বিতীয়বার ভাববে।

জাপান দিন দিন নিজেদের সামরিক বাহিনীকে আরও বর্ধিত ও আধুনিক করে তুলছে । চীনের অব্যাহত বর্ধনশীল সামরিক হুমকি মোকাবিলায় অনেক দিন ধরেই এ প্রক্রিয়া শুরু করেছে জাপান। তারই ধারাবাহিকতায় সাইবার জগতে সেনাবাহিনীর পদচারণা আরও সম্প্রসারণের উদ্যোগ চলছে। এর আগে ২০১৬ সালের জুনে এক ঘোষণায় ন্যাটো জোট বলে, আকাশ, ভূমি ও সমুদ্রের পর সাইবার জগতই হবে কঠিন যুদ্ধক্ষেত্র।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ অনেক দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে সাইবার অস্ত্রের মালিকানা দাবি করেছে। পাশাপাশি তারা এগুলোর উন্নয়নও অব্যাহত রেখেছে। এ তালিকায় এবার জাপানের নামও যুক্ত হলো।

অনানুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইল, চীন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরানের কাছে সাইবার অস্ত্র রয়েছে। তারা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিকবার এ অস্ত্র ব্যবহারও করেছে। শুধু তাই নয়, সবচেয়ে শক্তিশালী সাইবার অস্ত্র থাকার পরও যুক্তরাষ্ট্র বারবার এসব দেশের আক্রমণের শিকার হয়েছে। ফলে বিশেষজ্ঞরা জাপানের এ উদ্যোগ নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

এছাড়া জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ইয়োশিতাকা সাকুরাদার প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা নিয়েও নানা গুঞ্জন রয়েছে। আর সাইবার অস্ত্র তৈরির কাজ তার বিভাগের অধীনেই চলছে ।

জাপান এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সাইবার অস্ত্র তৈরির উদ্যোগ নিল। দেশটির সরকার ২০১২ সালে সম্ভাব্য হামলার উৎস খুঁজে বের করে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ম্যালওয়্যার তৈরির জন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ফুজিতসুকে কাজ দেয়। কিন্তু পরে প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ায় সেটি বাতিল হয়।