• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কোমল পানীয় আর ফলের রসেও ক্যানসার ঝুঁকি!

  জুবায়ের আহাম্মেদ

২৪ জুলাই ২০১৯, ১২:০৮
ফলের জুস
ফলের জুসেও মিলছে ক্যানসারের ঝুঁকি! (ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস)

সম্প্রতি ফ্রান্সের একদল গবেষকের দাবি অনুযায়ী, ফলের রসের কারণে মানব শরীরে বাড়তে পারে ক্যানসারের ঝুঁকি। এতদিন পর্যন্ত ফলের রস বিভিন্ন উপায়ে স্বাস্থ্যের উপকার সাধন করে এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হলেও ফ্রেঞ্চ একদল গবেষক এবার দাবি করেছেন ভিন্ন কিছু। আর এরই মাঝে তা নজরে এসেছে বিশ্বের অন্যান্য গবেষকদেরও। আর নতুন এই দাবির পিছনে তর্ক বিতর্কও এখন তুঙ্গে।

বুধবার সরবোন প্যারিস সিত বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে জানানো হয়, কোমল পানীয় গ্রহণ করার মাধ্যমে ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ ফলের রস যেমন অরেঞ্জ জুস, ম্যাংগো জুস কিংবা লেমোনেড অন্তর্ভুক্ত শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত চিনির প্রবেশ হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের দাবি এমন মিষ্টি পানীয় শরীরের যে কোনো ধরনের ক্যানসারের উৎপত্তি এবং বিকাশের জন্য অন্যতম প্রধান কারণ। তবে মজার ব্যাপার হলো, কৃত্রিম উপায়ে চিনিযুক্ত যে কোনো পানীয় যেমন, ডায়েট কোক ক্যানসার ঝুঁকির ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব রাখে না বলে দাবি করেছেন এই গবেষক দল।

অবশ্য এই গবেষণার পিছনে যথেষ্ট কারণ এবং তথ্য প্রমাণও হাজির করেছেন ফ্রান্সের ওই গবেষক দল। বিগত পাঁচ বছরে প্রায় ১০১,২৫৭ জনের উপর পরিচালিত জরিপে তাদের শরীরে কোমল পানীয়ের মাধ্যমে গৃহীত চিনির মাত্রা এবং এর প্রভাব নিয়ে ব্যাপক গবেষণা শেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন এই গবেষক দল।

৫ শতাংশ বা তার বেশি চিনিযুক্ত বেভারেজ এবং কৃত্রিমভাবে মিশ্রিত চিনিবিহীন ফলের রসকে এই গবেষণায় কোমল পানীয় হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গবেষণা চলাকালীন সময়ে ২১৯৩ জনের উপর ক্যানসার শনাক্তকরণ পরীক্ষা চালানো হয় যা গড় অনুপাতের হিসাবে প্রতি এক হাজারে বাইশ জনের সমান। মূলত এই হিসাবটি করা হয় যারা নিয়মিত এবং উচ্চমাত্রায় কোমল পানীয় গ্রহণ করেন তাদের উপর।

যদিও গবেষকরা জানিয়েছেন বিষয়টির পূর্ণ সত্যতা নির্ণয়ের জন্য তাদের আরও বিস্তারিত গবেষণা এবং সময়ের প্রয়োজন। প্রকাশিত প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ‘এই ফলাফলের আরও বড় পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। পশ্চিমা বিশ্বে কোমল পানীয়ের ব্যাপক চাহিদা এবং গ্রহণের পরিমাণ ক্যানসারের শঙ্কা বৃদ্ধির পরিপূরক’।

গবেষকদের বিশ্বাস তাদের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল কোমল পানীয়ের গ্রহণ মাত্রার পাশাপাশি এর নীতিমালা এবং কর ও বাণিজ্যিকরণের ব্যাপারেও বিশদ ভূমিকা রাখবে। আমেরিকান বেভারেজ এসোসিয়েশনের এক পদস্থ কর্মকর্তা এই গবেষণা প্রকাশের পরপরই এক ই-মেইল বার্তায় মার্কিন সংবাদপত্র সিএনবিসিকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কোম্পানি নীতিগতভাবে তাদের কোমল পানীয়ে চিনির মাত্রা কমাবার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোমল পানীয়ে চিনির ব্যবহার হার্ট, কিডনি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানাবিধ সমস্যার জন্য আগে থেকেই দায়ী হিসেবে চিহ্নিত ছিল। নতুন করে ক্যানসারের ঝুঁকি নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ার কারণে এই নিয়ে সতর্কতার মাত্রাও তাই বেড়েছে অনেকখানি। ই-মেইল বার্তায় আমেরিকান বেভারেজ অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানানো হয়, ‘গ্রাহকদের জানা গুরুত্বপূর্ণ যে, সকল প্রকার বেভারেজ পণ্য তা চিনিযুক্ত থাকুক কিংবা চিনিবিহীন তা গ্রহণ করা তাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা উপকারী কিংবা হানিকর’।

ব্রিটিশ সফট ড্রিঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনের ডিরেক্টর জেনারেল গাভিন প্যাটিনটন এই ব্যাপারে আমেরিকান বেভারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। যার মাধ্যমে কোকাকোলা এবং পেপসি কোম্পানির সকল প্রকার পানীয়তে চিনির পরিমাণ কমানোর প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ কোমল পানীয়র উপর বিভিন্ন মাত্রার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা চলে, মেক্সিকো প্রতি লিটার কোমল পানীয়তে ৮ সেন্ট এবং ব্রিটেন ৫ শতাংশের উপর চিনিযুক্ত সকল পানীয়তে কর বসিয়েছে।

তথ্যসূত্র: সিএনবিসি নিউজ

ওডি/এএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড