• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রথম ব্ল্যাকহোলের ছবি

আবারও আইনস্টাইনের জয়

  রাকিব রওনক

১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১০:১৯
ব্ল্যাকহোল
প্রথম ব্ল্যাকহোলের ছবি (ছবি : সংগৃহীত)

এই ঝাপসা ছবি নিয়ে কেন বিজ্ঞানীমহলে এত মাতামাতি? কারণ, এটিই হচ্ছে আমাদের দেখা সরাসরি প্রথম ব্ল্যাকহোল যার ভবিষ্যদ্বাণী পাওয়া যায় আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি তত্ত্বে। দুই বছর ধরে নিরলস তথ্য সংগ্রহ এবং পর্যবেক্ষণ শেষে গেল ১০ এপ্রিল এই ছবি প্রকাশ করা হয়। ছবিটি অস্পষ্ট হবার কারণ এটি পৃথিবী থেকে ৫৩.৫ মিলিয়ন আলোক বর্ষ দূরে এবং পৃথিবীর সঙ্গে মাত্র ৪০ মাইক্রো আর্কসেকেন্ড কৌণিক অবস্থায় রয়েছে।

ব্ল্যাকহোল কি?

ব্ল্যাকহোল হলো অদৃশ্য বস্তু। এটি অদৃশ্য হওয়ার কারণ এর মাধ্যাকর্ষণ বল থেকে আলো বেরিয়ে আসতে পারে না। আলো না আসায় আমরা এটিকে দেখতে পাব না। এই কারণে এটি প্রমাণ করা অনেক দুরূহ হয়ে পড়ে, কিন্তু বিজ্ঞানী হকিং বলেন, ব্ল্যাকহোল যদিও সব গ্রাস করে তথাপি এর থেকে এক ধরনের বিকিরণ নির্গত হয় যার নাম হকিং বিকিরণ। ব্ল্যাকহোলের একটি সীমা আছে। কেন্দ্র হতে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের পর মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব যথেষ্ট কম থাকায় সে পৃষ্ঠ থেকে আলো নির্গত হতে পারে এবং তাই সেই অবধি দেখা যেতে পারে।

এই নূন্যতম পৃষ্ঠটিকে বলা হয় ইভেন্ট হরাইজন। এই ইভেন্ট হরাইজনের বাইরে যেসব ধুলিকণা রয়েছে তা প্রচণ্ডবেগে ব্ল্যাকহোলটির দিকে ছুটে আসার ফলে তা প্লাজমায় পরিণত হয়েছে। ব্ল্যাকহোলটির চারপাশের এই প্লাজমার আলোই আমরা দেখতে পেয়েছি।

এই ব্ল্যাকহোলটি ‘M87’ নামের ভার্গো -এ গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থান করছে। ছবিতে ব্ল্যাক হোলের চারপাশের রিংটি অসমভাবে বিন্যাস্ত মনে হচ্ছে। এর কারণ হলো ব্ল্যাক হোলের শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণ আলোকে এর চারপাশে বাঁকিয়ে দেয়। ফলে এই ঘূর্ণনরত ব্ল্যাকহোলের যে অংশটি ঘুরে আমাদের দিকে আসে তা অপেক্ষাকৃত উজ্জ্বল দেখায় আর যে অংশটি আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে থাকে তা অনুজ্জ্বল দেখায়।

ব্ল্যাকহোলটির ভর প্রকাণ্ড। ব্ল্যাকহোলটি আমাদের সূর্যের তুলনায় ৬৫০ কোটিগুণ ভারী! এই সম্পূর্ণ ভরটি অতিমাত্রায় সংকুচিত হয়ে একটি বিন্দুর মতো অবস্থায় আছে।

ব্ল্যাকহোলের ছবি তোলার স্বপ্নদ্রষ্টা নেদারল্যান্ডের র‌্যাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেইনো ফ্যালকে। এই ধারণা তার মাথায় আসে ১৯৯৩ সালে যখন তিনি পিএইচডি গবেষক ছিলেন। পরবর্তীতে হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার অব এস্ট্রোফিজিক্সের অধ্যাপক শেফার্ড ডোয়েলম্যানের নেতৃত্বে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা আটটি টেলিস্কোপের একটি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়। গবেষকদের এই দলটি আমাদের নিজেদের গ্যালাক্সি মিল্কি ওয়ের কেন্দ্রের সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলটিরও ছবি তোলার চেষ্টা করছে। তবে এত কাছে থাকা সত্ত্বেও ব্ল্যাকহোলটি তুলনামূলক ছোট হওয়ার চতুর্দিকের আলোর উজ্জ্বলতা অপেক্ষাকৃত কম।

ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও একবার আইনস্টাইন সঠিক প্রমাণিত হলেন। তবে ব্ল্যাকহোলের ভেতরের অবস্থা এখনও আমরা জানিনা। তাত্ত্বিকভাবে ব্ল্যাকহোলের ভেতর স্থান এবং সময়ের অস্তিত্ব লোপ পায়।

ভাবুন তো একবার, ব্ল্যাকহোলের মধ্যে আপনার কী হতে পারে? উত্তর পেলে জানাতে ভুলবেন না।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড