• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

স্যাটেলাইট উড্ডয়নে আমেরিকার নতুন লক্ষ্য ব্রাজিল

  জুবায়ের আহাম্মেদ

২১ মার্চ ২০১৯, ১৫:২৮
 স্যাটেলাইট লঞ্চ রকেট প্যাডের ধ্বংসাবশেষ
আলকান্তারায় ব্রাজিলের স্পেস সেন্টারে স্যাটেলাইট লঞ্চ রকেট প্যাডের ধ্বংসাবশেষের সাধারণ দৃশ্য (ছবি: সিএনবিসি নিউজ)

সাম্প্রতিক সময়ে মহাকাশ গবেষণায় নতুনভাবে হালকা এক রাজনীতি মিশিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন এক চুক্তির আওতায় ব্রাজিল থেকেই এখন থেকে নিজেদের মহাকাশ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রকেট উড্ডয়ন করতে পারবে দেশটি। এবং এতে করে নিজেদের দেশের বাইরে নতুন করে আরেকটি স্টেশন পেতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যার এক সুদূর প্রসারী প্রভাব মার্কিন অর্থনীতিতে রয়েছে। কিন্তু বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে গেলেন?

মার্কিন সরকারী অধিদপ্তরের মঙ্গলবারের এক বার্তায় নতুন এই চুক্তি সম্পর্কে জানানো হয় এবং সরকারী এই দপ্তর জানিয়েছে এতে করে নতুন এক অপারেশন বেস ক্যাম্পের সন্ধান তারা পেয়েছেন যা দীর্ঘদিন সুপ্ত অবস্থায় ছিল।

ব্রাজিলের আটলান্টিক সাগরের পার্শ্ববর্তী আলকান্তারা অঞ্চলে ১৪০ মাইল বিস্তৃত বিশাল জায়গায় নিজেদের রকেট উড্ডয়ন কেন্দ্রের জন্য চুক্তি সম্পন্ন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। স্যাটেলাইট উড্ডয়ন কেন্দ্রের সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধান কেন্দ্র হিসেবে এতে প্রায় ২৬০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে, “নির্ধারিত স্থানের কল্যাণে এক বিশাল পরিমাণ আর্থিক সাশ্রয় ঘটতে যাচ্ছে।” মঙ্গলবারের প্রেস কনফারেন্সে ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোকে সাথে নিয়ে তিনি আরো বলেন “দীর্ঘ ২০ বছরের আলোচনা শেষে মার্কিন কোম্পানি গুলোর জন্য প্রযুক্তিগত এক নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্রাজিলকে বেছে নিতে সক্ষম হয়েছি।”

আলকান্তারা অঞ্চল নিয়ে মার্কিন বিভিন্ন কোম্পানির আগ্রহের শুরুটা অবশ্য হঠাৎ করে আসেনি। প্রখ্যাত সংবাদ সংস্থা সিএনবিসি নিউজের ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলকান্তারার পরিত্যক্ত এই অঞ্চলের বেস স্টেশনে বেশ কিছু মার্কিন স্যাটেলাইট কোম্পানি একইসাথে প্রথমবার পরীক্ষামূলক পরিদ্ররশন সম্পন্ন করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল – বোয়িং, লকহেড মার্টিন, স্পেস এক্স, ভেক্টর এবং মাইক্রোকোসম।

যদিও এই পাঁচ কোম্পানির মধ্যে স্পেস এক্স তাদের আগ্রহ খুব বেশি লম্বা করেনি এবং মাইক্রোকোসম এখন পর্যন্ত এব্যাপারে তাদের নিজদের মধ্যে কোনপ্রকার ঐক্যমতে এসে পৌঁছায়নি তবুও বাকি তিন প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত আলকান্তারার এই প্রকল্প নিয়ে বেশ আশাবাদী। ট্রাম্প বলেন, “ব্রাজিলের ভৌগলিক অবস্থান আমাদের যেকোন প্রকল্পের জন্য একেবারেই আদর্শ স্থান।”

নাসার ফ্লোরিডায় অবস্থিত কেনেডি স্পেস সেন্টার কিংবা ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ এয়ার ফোর্স বেইস থেকে বেশ অনেকখানি উত্তরে অবস্থিত এই অঞ্চলের জন্য রকেট উড্ডয়ন এর দিক অনেকটাই সরিয়ে আনতে হবে। যদিও এই কাজের ফলে বিশেষজ্ঞদের মতে মোট জ্বালানি খরচ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে আসবে।

বেশ দীর্ঘ সময় ধরে নিরক্ষরেখার মাত্র ৩৪৫ মাইল দূরের গুইয়ানা স্পেস সেন্টারের বেস ক্যাম্প থেকে নিজেদের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে আসছে ইউরোপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মালিকানাধীন এবং ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল এজেন্সি পরিচালিত এই বেস স্টেশনের কল্যাণে বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশ অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। ১৯৮০ সাল থেকেই গুইয়ানা বেস ক্যাম্পের কল্যাণে স্যাটেলাইট ব্যবসায় যুক্তরাষ্ট্রকে রীতিমতো ছিটকে দিয়েছে ইউরোপিয়ান বিভিন্ন দেশ।

মার্কিন ব্রাজিলিয়ান এই চুক্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা ছিল নিরাপত্তা চুক্তি। এই নিরাপত্তা চুক্তির আলোকে, ব্রাজিলের মাটিতে মার্কিন রকেট বিদ্ধস্ত হলে কি হতে পারে সে ইস্যুতে বিস্তারিত বিবরণী রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। যদিও আলকান্তারার এই স্তেশনের কল্যাণে নতুন করে স্যাটেলাইট জগতে নিজদের অস্তিত্ব ফিরে পেতে আগ্রহী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তবুও ব্রাজিল এই কাজের জন্য এখনো প্রস্তুত নয়।

২০০৩ সালের দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হবার পর থেকে এখন পর্যন্ত অচলই বলা চলে আলকান্তারা বেস স্টেশন। সেই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারান মোট ২১ জন রবং পরিত্যক্ত হয় আলকান্তারা বেস স্টেশনের সকল অবকাঠামো।

তথ্যসূত্র: সিএনবিসি নিউজ

এএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড