• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কোথায় ছিলেন পম্পেই নগরীর বেঁচে থাকা নাগরিকরা?

  জুবায়ের আহাম্মেদ

১৭ মার্চ ২০১৯, ১১:২৫
পম্পেই নগরী
পম্পেই নগরীর একটি চিত্র (ছবি: গেটি ইমেজ)

খ্রিস্টপূর্ব ৭৯ সালে ইতালির মাউন্ট ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া পম্পেই এবং হারকুলেনিয়াম নগরী নিয়ে আজ পর্যন্ত গবেষণা, চলচ্চিত্র কিংবা লোককথার কোন শেষ নেই। আজ পর্যন্ত সবারই ধারণা সেদিন পম্পেই নগরীর ২০০০ জন অধিবাসীর সকলেরই মৃত্যু হয় গলিত লাভার কারণে। কিন্তু ক্যালেন্ডারের পাতায় প্রায় ২১০০ বছর পেরুনোর পর নতুন করে জানতে হচ্ছে পম্পেই নগরীর অধিবাসীদের ভাগ্য নিয়ে। সত্যি বলতে সেদিন পম্পেই নগরীর সকলেই কিন্তু মারা যাননি। শহরের বেশ কিছু মানুষ এই মৃত্যুর উপত্যকা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। কিন্তু তারা ছিলেন কোথায় যারা আর কখনোই তাদের নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি?

ওহাইও’র মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর স্টিভেন টাক নেমেছেন তেমনই এক গবেষণায়। তার মতে, সেদিনের সেই দুর্ঘটনায় বেঁচে থাকা নাগরিকদের হাত ধরেই উত্থান ঘটেছে আজকের ইতালির বড় আরেকটি অংশের। যেহেতু আমরা প্রাচীন ইতালির কথা বলছি, তাই দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের খুব বেশি দূরে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাদের মাঝে বেশিরভাগ অধিবাসীই ইতালির দক্ষিণে সরে আসেন। যেখান থেকেই পরে সূচনা হয় কুমে, নেপলস, অস্টিয়া কিংবা পুটেওলি’র মত ইতালির আরো কিছু বড় শহর। এ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণার কথা নিশ্চিত করেছেন আরেক ইতালিয়ান সাংবাদিক আনালেকটা রোমানা। যার গবেষণা নিবন্ধ “প্রিসারভড পম্পেই, আ সিটি ইন অ্যাশ” এ বছরই প্রকাশ হবার হবার অপেক্ষায় আছে।

স্টিভেন টাক খ্রিষ্টপূর্ব ৭৯ সালে ইতালির পম্পেইতে থাকা নাগরিকদের একটি সংঘবদ্ধ তালিকা তৈরির চেষ্টা করেন। এবং সেই সাথে ভিসুভিয়াসের সেই অগ্ন্যুৎপাত পরবর্তী সময়ে একই নামের পরিবারদের অন্য কোন শহরে পাওয়া গিয়েছে কিনা সেই ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। এখানে উল্লেখ্য সেই সময়কার নগরের প্রধান প্রশাসনিক ভবনে (টাউনহল) শহরের অধিবাসীদের নাম নিবন্ধিত থাকতো। স্টিভেন টাক গবেষণার স্বার্থে হেঁটে এসেছেন ইতিহাসের সেই পুরাতন পথে। প্রফেসর টাক এরইসাথে খুঁজে আনার চেষ্টা করেছেন পম্পেই এবং হারকুলেনিয়াম শহরের সেই সময়ের প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাসের আদ্যোপান্তটাও। যেখানে দেখা যায়, পম্পেই নগরীর বেশিরভাগ ধর্মবিশ্বাস গড়ে উঠেছে ভিসুভিয়াস, আগুন এবং নিজের শহরের নামে। অগ্ন্যুৎপাতের দেবতা, অগ্নি দেবতা এবং ভেনাস পম্পেইনা নামের দেবতাদের উপাসনা ছিলো তাদের সংস্কৃতির বড় একটি অংশ।

টাক তার দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের ধারণা অনুযায়ী পম্পেই এবং হারকুলেনিয়ামে সেই সময় ২০০০ নয় বরং ১৫ থেকে ২০ হাজার অধিবাসী ছিলেন। তেমনই একজন ছিলেন কর্নিলিয়াস ফুসকাস। যার নাম পম্পেই নগরীতে পাওয়া যায়। পরে তার আবাস ছিল নেপলসে। তার মৃত্যু সম্পর্কিত নথি পাওয়া যায় বর্তমান রোমানিয়াতে এক সামরিক ক্যাম্পে। ধারণা করা হয় কর্নিলিয়াস পম্পেই থেকে বেঁচে ফিরে আসেন, পরবর্তীতে নেপলসে গিয়ে তিনি নাম লেখান সৈন্যবাহিনীতে। সেখান থেকেই রোমানিয়াতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়।

শুধু কর্নিলিয়াস নয়, একই রকম নানা উপাত্ত পাওয়া যায় নেপলস শহরে। নেপলসে এবং পম্পেইতে একই রকম বিভিন্ন পারিবারিক চিহ্নের অস্তিত্ব পেয়েছেন মাআমি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক। এছাড়া সম্প্রতি ধ্বংসপ্রাপ্ত পম্পেই নগরীর বাইরে প্রত্নতত্ত্ববিদগণ বিশাল একটি বাক্স আবিষ্কার করেন যার পুরোটাই ঠাসা ছিল শহরের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজের বিবরণীতে। যা নিশ্চিত করে দুর্ঘটনার সময় কেউ এই বাক্স বাঁচাবার চেষ্টা করলেও এক পর্যায়ে শহরের বাইরে এসে বাক্সটি ফেলে যেতে বাধ্য হন।

তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড