• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তায় নোবেল পেয়েছিলেন আইরিন কুরি

  নাবিলা বুশরা

১৭ মার্চ ২০১৯, ১১:০৮
আইরিন জোলিও-কুরি
বিখ্যাত ফরাসী বিজ্ঞানী আইরিন জোলিও-কুরি (ছবি: রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি)

কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের জন্য ১৯৩৫ সালে রসায়নশাস্ত্রে যৌথভাবে স্বামী ফ্রেডরিক জোলিও কুরির সঙ্গে নোবেল পুরস্কার পান বিখ্যাত ফরাসী বিজ্ঞানী আইরিন জোলিও-কুরি। তিনি ছিলেন নোবেল বিজয়ী দম্পতি ও পদার্থবিজ্ঞানী মেরি কুরি ও পিয়েরে কুরির মেয়ে। কুরি দম্পতির এ সাফল্যের প্রেক্ষাপটে অদ্যাবধি সফলতম নোবেল বিজয়ী পরিবার হিসেবে আসীন রয়েছে।

প্রারম্ভিক জীবন

ফ্রান্সের প্যারিসে ১৮৯৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন আইরিন কুরি। ১০ বছর বয়সে একবছর মেয়াদী সনাতনী শিক্ষাগ্রহণের পর আইরিনের বাবা-মা তাঁর মাঝে অসম্ভব গাণিতিক বুদ্ধিমত্তার ছাপ দেখতে পান। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা অর্জনে তাদের অনেক বেশি প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলা করতে হয়। মেরি কুরি বেশ কয়েকজন প্রখ্যাত ফরাসী ব্যক্তিত্বসহ পদার্থবিদ পল ল্যাঙ্গেভিনের সহায়তায় 'দ্য কোঅপারেটিভ' নামে একটি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতির সূচনা করেন যা ফ্রান্সের শিক্ষাব্যবস্থার তুলনায় একদম আলাদা ছিল।

এ পদ্ধতিতে একজন অভিভাবক অন্যের সন্তানকে পড়াশোনা করানোর জন্যে বাড়িতে গিয়ে পড়াতেন। এর শিক্ষাসূচী মানসম্পন্ন ছিল এবং বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ বিষয় হিসেবে নিজস্ব অভিব্যক্তি প্রকাশ ও খেলার ছলে চীনা ভাষা এবং ভাস্কর্যকলাও শেখানো হতো। এ শিক্ষাপদ্ধতির স্থায়িত্বকাল ছিল দুই বছর। এরপর ১৯১২-১৪ সাল পর্যন্ত তাঁকে পুণরায় অর্থোডক্সের পরিবেশে শেখার জন্যে প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কলেজ সেভিনেতে ভর্তি করানো হয়।

পরবর্তীতে সরবোনে বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি হয়ে আইরিন তাঁর ব্যাকালরেট ডিপ্লোমা অর্জন করেন। কিন্তু তাঁর পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে।

আইরিনের ব্যক্তিগত জীবন

ডি.এসসি ডিগ্রী অর্জনের শেষদিকে ১৯২৪ সালে ব্যবহারিক পরীক্ষাগারের দিক-নির্দেশনায় তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক গবেষণায় তরুণ রাসায়নিক প্রকৌশলী ফ্রেদেরিক জোলিও'র কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেন আইরিন। সে সময় ফ্রেদেরিক জোলিও রেডিয়াম ইনস্টিটিউটে বিখ্যাত মহিলা বিজ্ঞানী মেরি কুরি'র সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন।

এখানে কর্মরত থাকাকালীন ১৯২৬ সালের ৪ অক্টোবর আইরিনের সাথে ফ্রেদেরিকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর উভয়েই তাঁদের গোত্র নাম পরিবর্তন করে জোলিও-কুরি রাখেন।

এ দম্পতির দুই সন্তানের মাঝে একজন খ্যাতনামা পদার্থবিদ হেলেন এবং অপরজন জীববিজ্ঞানী পিঁয়েরে।

জোলিও তাঁর জীবনের শেষদিকে অরসেতে পরমাণু পদার্থবিদ্যা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করেছিলেন। সেখানেই তাঁর সন্তানেরা উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেন।

গবেষণা কর্ম

ফ্রেদেরিক এবং আইরিন ১৯২৮ সালে একসাথে পারমাণবিক পদার্থবিদ্যা সম্পর্কীয় গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। তাঁরা তাদের পরীক্ষায় পজিট্রন এবং নিউট্রনকে একত্রে দেখতে পান যা ফলাফলে আশানুরূপ হয়নি। তাঁদের এই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার ফলাফলকে কেন্দ্র করেই ১৯৩২ সালে নিউট্রন আবিষ্কার করেন কার্ল ডেভিড এন্ডারসন এবং জেমস চ্যাডউইক।

এ আবিষ্কারগুলো ১৮৯৭ সালে জে. জে. থমসনের ইলেকট্রন আবিষ্কারের পাশাপাশি আলোচিত হতে থাকে ও জন ডাল্টনের পরমাণু গঠন তত্ত্বের স্থলাভিষিক্ত হয়।

পরবর্তীতে ১৯৩৫ সালে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা আবিস্কারের দরুণ জোলিও-কুরি দম্পতি রসায়নশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এর ফলে স্বল্পকালীন সময়ের জন্যে বোরন, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যালুমিনিয়াম সহযোগে আলফা উপাদান থেকে রেডিওআইসোটোপ তৈরী করা সম্ভবপর হয়।

বিখ্যাত এই ফরাসী নারী বিজ্ঞানী ১৯৫৬ সালের ১৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড