• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এবার নিঃশ্বাসেই শনাক্ত হবে ক্যানসার!

  অধিকার ডেস্ক    ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:২২

ক্যানসার
ক্যানসার শনাক্ত করা যাবে নিঃশ্বাসের সাহায্যেই (ছবি: মেডিকেল নিউজ টু ডে)

নিঃশ্বাস পরীক্ষার সাহায্যে শনাক্ত হবে ক্যানসার। এমনই নতুন এক পদ্ধতি নিয়ে এবার কাজ করছে গবেষক দল। এর কার্যকারিতা এখনও প্রাথমিক অবস্থায় থাকলেও দ্রুত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদল।

এই বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের একদল ক্যানসার গবেষক দল। তাদের পরীক্ষার বিষয়বস্তু হচ্ছে নিঃশ্বাসের অণুসমূহ পরীক্ষা করে তা থেকেই কয়েক ধরণের ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করা।

বিবিসি বাংলায় এ বিষয় নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, এই পদ্ধতি সফল হলে চিকিৎসকেরা শুরুতেই নির্ধারণ করতে পারবেন ঐ রোগীর আরো বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার আছে কি না।

গবেষকেরা এজন্য তারা ১৫০০ মানুষের নিঃশ্বাসের নমুনা সংগ্রহ করবেন, এর মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীও রয়েছেন। নিঃশ্বাস ছাড়াও এজন্য একজন ব্যক্তির রক্ত ও মূত্র পরীক্ষার মাধ্যমেও ক্যানসার প্রাথমিক ধাপেই শনাক্ত করা যাবে। এর ফলে ক্যানসারে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার অনেকটা কমে যাবে। তবে, এই পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে।

এদিকে চিকিৎসকেরা বলছেন, এই পরীক্ষা জেনারেল ফিজিশিয়ানের মত সাধারণ জায়গায় হবার সম্ভাবনা কম।

কীভাবে কাজ করবে এই পরীক্ষা

মানুষের শরীরের কোন কোষে কোন রকম প্রাণ-রসায়নিক পরিবর্তন ঘটলে সেটি নিঃশ্বাসে ভোলাটাইল অরগ্যানিক কমপাউন্ডস নামে এক ধরণের অণু নিঃসৃত হয়।

ক্যান্সার

ক্যানসার কোষ (ছবি: মেডিকেল নিউজ টু ডে)

কিন্তু যদি তাতে ক্যানসার বা অন্য কোন রোগের আভাস থাকে, তাহলে কোষের স্বাভাবিক ধরণে পরিবর্তন আসে এবং ভিন্ন ধরণের অণু তৈরি করে এবং গন্ধের মাধ্যমে ভিন্ন বার্তা পাঠায় মস্তিষ্কে।

নিঃশ্বাসের বায়োপসি করার মধ্য দিয়ে নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে মুখের গন্ধের এই প্রক্রিয়াটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন গবেষক দল।

আরও পড়ুন:

মুরগির ডিমে প্রতিরোধ করা যাবে ক্যানসার

মলের সঙ্গে রক্তপাত, পাইলস নাকি ক্যানসার?

চিনি না খেলেই উধাও ক্যানসার : সত্য নাকি গুজব?

এই পরীক্ষা সফল হবার সম্ভাবনা কতটা?

নতুন এই পদ্ধতি মাত্র পরীক্ষা করে দেখা শুরু হয়েছে। ফলে এর সফলতা নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলতে হলে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। তবে যে পদ্ধতির মাধ্যমে এই পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেটা চিকিৎসা বিজ্ঞানের জগতে নতুন নয়।

ক্যান্সার

নতুন পদ্ধতিতে ক্যানসার শনাক্তে চলছে গবেষণা (ডেইলি এক্সপ্রেস)

কয়েক বছর যাবত পৃথিবীর অনেক গবেষকই বিশেষ করে ফুসফুসের ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করছেন। ইতিমধ্যেই নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে ক্যানসারের আগের ধাপ শনাক্তে কিছুটা অগ্রগতিও দেখা যাচ্ছে।

কাদের ওপর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে?

ইতিমধ্যেই যেসব মানুষের পাকস্থলীতে ক্যানসার হবার পর প্রোস্টেট, কিডনী, ব্লাডার, লিভার এবং প্যানক্রিয়াসে তা ছড়িয়ে পড়েছে, এমন মানুষের একটি অংশ এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। তবে এদের বাইরেও সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষেরা অংশ নিচ্ছেন এই গবেষণায়।

এছাড়া ক্যামব্রিজের অ্যাডেনব্রুক হাসপাতালের ডাক্তারেরা রোগীদের একটি মুখোশের মধ্যে ১০ মিনিট ধরে নিঃশ্বাসের নমুনা দেবার অনুরোধ করেছেন, যাতে সেটা গবেষণার কাজে লাগানো যায়। গবেষকেরা বলছেন, ক্যানসার যত দ্রুত শনাক্ত করা যায় তত মঙ্গল, তাতে চিকিৎসা শুরু করা যায় তাড়াতাড়ি।

ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় কি কমবে?

এক অর্থে ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় কমবে। কারণ কারো শরীরে যদি ক্যানসারের আভাস পাওয়া যায়, আর সেটি আগে থেকে শনাক্ত করা যায়, তাহলে খুব দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু করা যাবে। এছাড়া একটি মাত্র পরীক্ষা কিংবা খুব সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে, সেটি পরবর্তী ধাপগুলোতে সাশ্রয় সম্ভব হয়।

ক্যান্সার

এর আগে গত বছর জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল, একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার শনাক্ত করে চিকিৎসা দেবার পদ্ধতি উদ্ভাবন করে। ঐ পরীক্ষায় ৫০০ ডলারের মতো খরচ হবে। কিন্তু তার তুলনায় এই পরীক্ষাতে খরচ কম হবে কি না তা এখনো জানা যায়নি।

ক্যানসারের লক্ষণ

মানুষের যত রকম ক্যানসার হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শরীর সে সম্পর্কে কোন না কোন পূর্বসংকেত দেয়। কিছু লক্ষণ দেখে আপনি সন্দেহ করতে পারবেন যে আপনার দেহে হয়তো ক্যানসার হয়ে থাকতে পারে।

চিকিৎসকেরা বলছেন সেই সংকেত মূলত সাতটি-

১। কোন বিশেষ কারণ ছাড়াই হঠাৎ শরীরের ওজন কমতে শুরু করেছে।

২। হজম ও মল-মূত্র ত্যাগের অভ্যাসে কোন ধরনের পরিবর্তন হওয়া। যেমন ডাইরিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য। যেমন আপনার হয়ত কোষ্ঠকাঠিন্য নেই কিন্তু সেটিই হচ্ছে ইদানীং। অথবা পাতলা পায়খানা।

৩। সারাক্ষণ জ্বর বা খুসখুসে কাশি যা ঠিক যাচ্ছেই না।

৪। শরীরের কোথাও কোন পিণ্ড বা চাকার উপস্থিতি।

৫। ভাঙা কণ্ঠস্বর যা কোন চিকিৎসায় ভালো হচ্ছে না।

৬। তিল বা আঁচিলের সুস্পষ্ট পরিবর্তন।

৭। শরীরের কোন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ।

মোটা দাগে এই উপসর্গ বা শরীরের সংকেতের কোন একটি যদি দু থেকে তিন সপ্তাহ ধরে থাকে আর সেগুলোর সাধারণ চিকিৎসায় না কমে যায় - তবেই 'ক্যানসার' শব্দটি মাথায় রেখে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড