অধিকার ডেস্ক ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৫৫
মানুষের প্রস্রাব ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরিতে সাফল্য অর্জন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার শিক্ষার্থীরা। তারা প্রস্রাবের সাথে এমন পদ্ধতিতে বালি ও ব্যাকটেরিয়া মেশায় যেন এটা শক্ত ইটে পরিণত হয়। এজন্য আলাদা তাপ দিতে হয় না, নিজ কক্ষের তাপমাত্রাতেই এ ধরনের ইট তৈরি হবে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির কেপ টাউন ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থী প্রস্রাব দিয়ে এ ধরনের ইট তৈরিতে সক্ষম হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পোস্ট গ্র্যজুয়েট পড়ুয়া সুজান ল্যাম্বার্ট। যে ব্যাক্টেরিয়ার মাধ্যমে ‘ইউরেজ’ নামক এনজাইম তৈরি হয়, সেই ব্যাক্টেরিয়াই বালিকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এক জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রস্রাব থেকে ইউরিয়ার কণা ভেঙে দেয় ইউরেজ। একই সঙ্গে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট তৈরি করে এটি।
এই প্রক্রিয়াতেই প্রস্রাব থেকে বালি জমাট বাঁধিয়ে তৈরি হয় ইট। যদি কেউ লাইমস্টোন ইটের থেকে ৪০ শতাংশ বেশি শক্ত করতে চায় এই ইটকে, তা হলে আরও একটু বেশি সময় দিতে হবে জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে। এই পদ্ধতির থেকে আলাদা করে নাইট্রোজেন ও পটাসিয়াম তৈরি হয়। যেগুলো ব্যবসায়িক সার তৈরির কাজে লাগে।
ল্যাম্বার্ট বলছেন, ”গত দেড় বছর ধরে এই প্রকল্প আমার জীবনের একটি বড় অংশ হয়ে ছিল। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ইট তৈরি করা যাবে সাধারণের ব্যবহারের জন্যও।”
কয়েক বছর আগে আমেরিকাতে ইউরিয়া থেকে ইট তৈরির কাজ চলছিল। তবে সেটি সিন্থেটিক ইউরিয়ার মাধ্যমে করা হচ্ছিল। ল্যাম্বার্ট প্রথম মানুষের প্রস্রাব ব্যবহার করে ইট তৈরি করলেন বলে দাবি করেছে কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়।
সুজানের সুপারভাইজর ডিলোঁ র্যান্ডাল জানাচ্ছেন এক সুইস ছাত্রও চার মাস এই নিয়ে কাজ করেছিলেন ২০১৭ সালে। তার পরে সেই গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যান ল্যাম্বার্ট। তিনি জানাচ্ছেন, রাসায়নিকভাবে মানুষের প্রস্রাব ‘তরল সোনা’। প্রস্রাবের জলে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাসিয়াম থাকে।
গবেষকদের দাবি, মানুষের প্রস্রাবকে পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়। এই বর্জ্যের কোনও অংশই ফেলা যায় না। পরিবেশের পক্ষেও এই বায়ো-ইট একটি সুখবর। কারণ এটি সাধারণ ঘরের তাপমাত্রাতেই তৈরি করা যায়। ইটভাটাতে ইট তৈরি করতে ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ব্যবহার করা হয়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড