অধিকার ডেস্ক ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ১২:০৪
বর্তমান প্রজন্মের কিশোরদের মাঝে বাড়ছে মাদক গ্রহণের প্রবণতা। আর এ মাদকের মাঝে প্রধান গাঁজা। যে সকল কিশোর অ্যালকোহল পান করে তাদের চাইতে গাঁজাসেবী কিশোরদের চিন্তা করার ক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি এবং আচরণে অনেক বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন দাবি করছে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব মন্ট্রিলের একদল গবেষক। তাদের এ গবেষণা পত্রটি প্রকাশ পেয়েছে আমেরিকান জার্নাল অব সাইক্রিয়াটিতে।
তাদের দাবি, গাঁজা সেবন কিশোরদের বিকাশমান গঠনকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এ গবেষণায় ৩ হাজার ৮শ কিশোরের ওপর প্রায় ৪ বছর যাবত নানাভাবে পরীক্ষা চালানো হয় এবং তাদের ওপর নজর রাখা হয়। কিশোরদের সবার বয়স ১৩-১৭ এর মাঝে।
গবেষণায় দেখা যায়, অ্যালকোহল পান এবং মাদক বিশেষ করে গাঁজা এই অল্প বয়সী কিশোরদের যে কোনো নতুন কিছু শেখার জন্য এবং মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো জ্ঞানগত ক্ষমতায় বেশ বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই সমস্যাগুলো বেশ দীর্ঘস্থায়ী হয় অ্যালকোহল পানের বিপরীতে।
গাঁজা সেবন কিশোরদের বিকাশমান গঠনকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে
গাঁজা সেবনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি:
এ গবেষণার জন্য কানাডার ৩১টি স্কুলের কিশোর বয়সী শিশুদের এক বছরের অ্যালকোহল পান এবং মাদক সেবনের অভ্যাসের বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ করা হয়।
এরপর কম্পিউটার ভিত্তিক ‘কগনেটিভ টেস্টের মাধ্যমে তাদের মস্তিষ্কের দক্ষতা প্রতি বছর স্কুলে পরীক্ষা করা হয়।
কিশোরদের মস্তিষ্কের বিকাশ সম্পর্কে যে তথ্য পাওয়া যায়:
মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের প্রফেসর প্যাট্রিসিয়া জে কোনরডের নেতৃত্বে এই কিশোর-কিশোরীদের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়।
গবেষণায় অ্যালকোহল বা মদের ব্যবহারের তুলনায় গাঁজা ব্যবহারের মাত্রা কম থাকলেও ২৮% কিশোর-কিশোরী এই ব্যবহারের সাথে অভ্যস্ত ছিল। এই তুলনাটি অন্তত ৭৫ শতাংশ কিশোর বয়সীদের সাথে ছিল যারা মাঝে মধ্যেই মদ্যপান করে থাকে।
বিশ্বের কিছু দেশ গাঁজার ব্যবহার বৈধ ঘোষণা করলেও, চিকিৎসকদের মাঝে এখনও মতবিরোধ রয়েছে
প্রফেসর শুরুতে ভেবেছিলেন, কৈশোরে অ্যালকোহল সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে মস্তিষ্কে। কিন্তু তার ধারণাকে বদলে দিয়ে দেখা গেল, সেই সব কিশোর-কিশোরীদের কগনেটিভ টেস্ট বা জ্ঞানীয় পরীক্ষায় ত্রুটির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে যারা কিনা গাঁজা সেবন করে, এমন কী এই মাদকটি ছেড়ে দেবার পরেও প্রভাব থেকেই যায়।
আর এই প্রভাব থেকে যায় তাদের স্মৃতিশক্তি, যুক্তি প্রয়োগের ক্ষমতা এবং আচরণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও!
প্রফেসর কোনরড বলেন, "যাদের মস্তিষ্কের গঠন প্রক্রিয়া এখনো চলছে, গাঁজা তাতে ক্ষতিকর প্রভাব রেখে চলেছে।"
তিনি বলেন, এই মাদক যতদূর বয়স পর্যন্ত পারা যায় গ্রহণ না করাই ভালো। গবেষণাটির প্রাপ্ত ফলাফল মাদক প্রতিরোধমূলক কর্মকাণ্ডকে গুরুত্ব দিয়েছে। মাদক
যুক্তরাজ্যে গাঁজাকে সবচেয়ে অবৈধ মাদক হিসেবে জানা হয়। এটির আসক্তি এবং ব্যবহার অন্য যে কোনো বয়সের তুলনায় কৈশোরে নানাধরনের মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাঁজা সেবন থেকে দূরে থাকলে মুক্তি মিলবে অনেক সমস্যা থেকে। যেমন, ঘুম না হওয়া, মেজাজ নিয়ন্ত্রণে না থাকা।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড