• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইউএন বাংলা ফন্টের নির্মাতা মুহিববুর রহমান 

  প্রযুক্তি ডেস্ক

২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:০৩
ইউএন বাংলা ফন্ট
মুহিববুর রহমান রাজন, (ছবি : দৈনিক অধিকার)

জাতিসংঘের জন্য তৈরি ইউএন বাংলা ফন্ট উদ্বোধনের খবর দেশজুড়ে সাড়া ফেলেছে। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এই ফন্টের উদ্বোধন করে জাতিসংঘ। পরবর্তীতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) আসকি (ASCII) লে-আউটের রেগুলার ফন্টটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে নিজেদের ওয়েবসাইটে ।

জাতিসংঘ কর্তৃক ইউএন বাংলা ফন্ট উদ্বোধন বাংলাদেশের জন্য বড় একটি অর্জন। এই অর্জনের পেছনে যারা কাজ করেছেনে, তাদের একজন মুহিববুর রহমান রাজন। মূলত তিনিই ইউএন বাংলা ফন্টের ডিজাইনার। নতুন এই ফন্ট তৈরি করতে রাজনের লেগেছে প্রায় চার মাস। যদিও কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। পুরো কাজটি শেষ করতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে তার।

ফন্ট তৈরি সম্পর্কে মুহিববুর রহমান রাজন বলেন, কী কাজে ব্যবহার করা হবে তার ওপর নির্ভর করেই একটি ফন্টের নকশা নির্ধারিত হয়। ইউএন বাংলা ফন্ট ডিজাইনের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকজনের একটি টিম কাজ করেছে এবং এই ফন্টটি ফাইনাল করার আগে বেশ কয়েকটি ফন্ট ডিজাইনও করা হয়েছে। মূলত ৪-৫টি ফন্ট স্টাইল থেকে আমার এই ফন্টটি সিলেক্ট করার পর এ নিয়ে আমার কাজ শুরু হয়।

ফন্ট তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, একটি বর্ণমালার সৌন্দর্য এবং ব্যবহার উপযোগিতা নির্ভর করে এর স্ট্রোক ও স্পেসের ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবহারের ওপর। স্ট্রোক ও স্পেসের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রথমে একটি ফন্টের রূপ কল্পনা করে স্কেচবুকে পেন্সিলের সাহায্যে বিভিন্ন অক্ষরের অনেক স্কেচ তৈরি করি। তারপর একটি অক্ষরের আদলে অন্য অক্ষরগুলো তৈরি করে নিই।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তী পর্যায়ে স্কেচবুক বা কাগজে আঁকা অক্ষরগুলো স্ক্যান করে কম্পিউটারে নিয়ে সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভেক্টর গ্রাফিক্স তৈরি করি। ডিজিটালে নিয়ে যাওয়ার পর কখনো মনে হয়েছে, কোনো একটি অক্ষরের আকার অন্যগুলোর সঙ্গে যাচ্ছে না। ফলে আবার নতুন করে ওই অক্ষরটির স্কেচ তৈরি করে ভেক্টর করতে হয়েছে। অবশেষে ফন্ট তৈরির সফটওয়্যারে ভেক্টর করা হরফগুলোকে বসিয়ে বিভিন্ন পরিবর্তন ও পরিমার্জনের পর ব্যবহার উপযোগী করে আউটপুট দেই।

বাংলা ফন্টের অপ্রতুলতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর অনেক কারণই রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলা ফন্ট তৈরির প্রক্রিয়া ইংরেজি বা অন্যান্য ফন্ট থেকে অনেকটা জটিল ও সময়সাপেক্ষ। ফলে অনেক ডিজাইনার বাংলা ফন্ট নিয়ে কাজ শুরু করে কিছুদিন পর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। আর এই আগ্রহ হারিয়ে ফেরার কারণ হতে পারে পৃষ্ঠপোষকতার অভাব।

ফন্ট তৈরির জগতে যাত্রা শুরু সম্পর্কে মুহিববুর রহমান রাজন বলেন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ বাংলা ফন্ট নিয়ে গবেষণা ও চর্চা করে থাকে। বর্তমানে যে কয়েকজন বাংলা ফন্ট চর্চা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শ্রদ্ধেয় মাকসুদুর রহমান স্যার। মূলত উনার হাত ধরেই আমার বর্ণমালা চর্চা শুরু।

শুধু ইউএন বাংলা ফন্টই নয়, আরও কয়েকটি ফন্টের জনক মুহিববুর রহমান রাজন। এর মধ্যে রাজন শৈলী, রাজন প্রাংশু নামে দুটি ফন্ট সবার জন্য উন্মুক্ত করেন তিনি, যা সবার কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এই ফন্ট দুটি ডাউনলোড করতে পারবেন তার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে।

এছাড়া দেশের শীর্ষ একটি সংবাদপত্রের ফন্টও তার তৈরি করা। ভবিষ্যতে বাংলা ফন্ট নিয়ে আরও অনেক বড় পরিসরে কাজ করতে চান তিনি। সঙ্গে বাংলা ভাষাকে দেখতে চান জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে।

ওডি/ডিএইচ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড