• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আত্মহত্যা : কারণ ও প্রতিকার (৪র্থ পর্ব)

  মুনীরুল ইসলাম ইবনু যাকির

০৭ অক্টোবর ২০১৯, ১৫:০১
Suicide_odhikar
ছবি : প্রতীকী

আত্মহত্যার পরিসংখ্যান

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সারাবিশ্বে আত্মহত্যায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে ২০টি দেশ। গ্রীনল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, গায়ানা, কাজাখস্তান, স্লোভেনিয়া, জাপান, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, লাতভিয়া, বেলারুশ, ইউক্রেন, ক্রোয়েশিয়া, রাশিয়া, মলদোভা, পোল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বেলজিয়াম, উরুগুয়ে, ভূটান। এই প্রত্যেকটা দেশই অভাবনীয় সৌন্দর্যে ভরপুর। ভ্রমণপিপাসুদের পছন্দের শীর্ষে। অনেকের স্বপ্নের দেশ। প্রতিটা দেশই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি আর অর্থনীতিতে এগিয়ে। অনুন্নত দেশগুলো তাদেরকে মনে করে থাকে উন্নয়নের রোলমডেল। এতদসত্ত্বেও আত্মহত্যার এই ব্যাধি কেন এত মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ল দেশগুলোতে? কোন জিনিসের অভাবে দুনিয়ার ‘সবকিছু পাওয়া’ মানুষগুলোও ঝাঁপিয়ে পড়ছে আত্মহত্যার প্রতিযোগিতায়?

ঈমান বনাম বস্তুবাদ

লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, উপরোক্ত প্রায় সবগুলো দেশই বস্তুবাদী, সেক্যুলার বা কম্যুনিস্ট দেশ। প্রথম পঞ্চাশটি দেশের মধ্যে মুসলিম অধ্যুষিত দেশ মাত্র একটি। প্রথম পঁচাত্তরটি দেশের মধ্যে মাত্র চারটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ আছে। দেশগুলো হচ্ছে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই চারটি দেশই কম্যুনিস্ট শাসিত সোভিয়েত রাশিয়ার অধীনে ছিল। হয়ত কম্যুনিজমের বস্তুবাদী প্রভাব থেকে আজও সেভাবে মুক্ত হতে পারে নি দেশগুলো।

আবার দেশ চারটি মুসলিম অধ্যুষিত হলেও মুসলিমদের শতকরা হার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মতো অত বেশি না। ফলে এই দেশগুলোতে অমুসলিমদের মধ্যে হয়ত আত্মহত্যার হার বেশি, আর এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ, মুসলিম অধ্যুষিত অন্যান্য দেশে আত্মহত্যার হার খুবই কম। যেমন ইরানে প্রতি ২.৫ লাখে মাত্র একজন আত্মহত্যা করে; সিরিয়াতে প্রতি ৫ লাখে একজন; আর মিশরে প্রতি ১০ লাখে একজন।

এখান থেকেই মূল পার্থক্যটা ফুটে ওঠে। মানুষের আত্মিক প্রশান্তির যে মূল উৎস—ঈমান, সেখান থেকে দূরে সরে যাওয়াটাই আত্মহত্যার প্রধান কারণ। যখন কোনো মানুষ আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে না, আল্লাহর নির্ধারিত ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই একটা মানুষ আত্মপ্রত্যয়ী হতে পারে না। সামান্য বিপদেই ভেঙে পড়ে। ডিপ্রেশনে ভোগে। এক পর্যায়ে আত্মহত্যা করে। বিপরীতে শত অবক্ষয়ের পরও এখনও আল্লাহর প্রতি ঈমানের ফলে, তাকদিরের ভালো-মন্দ এবং আল্লাহর ওপর আস্থার কারণেই মুসলিম সমাজে আত্মহত্যার হার এখনও এত কম।

বস্তুবাদ সবকিছুকে বস্তুকেন্দ্রিক হিসেব করতে শেখায়। চাওয়া-পাওয়া, পাওয়া-না পাওয়ার সব হিসেব আবির্ভূত হয় সংকীর্ণ ইহজগতকে ঘিরে। পরজগতের বিশালতায় বিশ্বাস না থাকায় সংকীর্ণ ইহজগতের সুখ-শান্তিকেই পরম আরাধ্য মনে হয়। তাই না পাওয়ার বেদনা ক্রমশ কুঁড়ে কুঁড়ে খায় ব্যক্তিকে। যা থেকে মুক্তির জন্য বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। বিপরীতে ঈমান শিক্ষা দেয়—ইহজগতই শেষ নয়। পরজগত বলতে একটা বিষয় আছে। সেটাই আসল জীবন। সেটাই প্রকৃত সুখ ও শান্তির জায়গা। ইহজগত খুবই সংকীর্ণ। এখানকার সুখগুলো যেমন অস্থায়ী, দুঃখগুলোই তেমনই। এখানে শোকে-দুঃখে ক’টা দিন কাটিয়ে দিতে পারলেই হলো। প্রকৃত সুখ তো পরজীবনেই।

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড