• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সামর্থ্যহীনদের জন্য ফ্রি যে ফাইভ স্টার হোটেল

  ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:৩৭
dubai_odhikar
ছবি : খালিজ টাইমস

ক্ষুধা পেয়েছে, কিন্তু পকেটে টাকা নেই? দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, পাশে আছে দুবাইয়ের বিখ্যাত ‘ফুল ও হুমুস’ রেস্টুরেন্ট। বিনামূল্যে যা ইচ্ছা খেতে পারেন, বিনিময়ে আপনাকে কেবল উপহার দিতে হবে একটি হাসি।

হোটেলটির মালিক জর্ডানি নাগরিক ফাদি আইয়াদ খালিজ টাইমসকে বলেন, ‘বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার আইডিয়াটি এই নৈতিকতা থেকে উত্পন্ন হয়েছিল যে, যেন কেউ ক্ষুধার্ত না থাকে। বিশেষত শ্রমিক এবং চাকরিপ্রার্থীরা।’

আল-বার্সাতে অবস্থিত হোটেলটির দেয়ালে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে আরবি ও ইংলিশে লেখা আছে : ‘আপনি যদি খাবার কিনতে সমর্থ্য না হন, তবে এটি আপনার জন্য সম্পূর্ণ ফ্রি। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার স্বরূপ।’

‘এটি কোনো প্রচারণামূলক সাইনবোর্ড না। আমরা এই সাইনবোর্ডটি লাগিয়েছি যাতে মানুষ এখানে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। মানুষ আমাদের হোটেলের পাশ দিয়ে চলে যায়। অনেকে ক্ষুধার্ত থাকে। কিন্তু টাকা না থাকার কারণে আসে না। এমন লোকেরা যখন এই সাইনবোর্ড দেখেন, যেন আমাদের হোটেলে চলে আসেন। তাদের জন্যে সব ধরনের খাবার ফ্রি। যে কেউউ হোটেলে প্রবেশ করে অর্ডার করতে পারেন আরবের বিখ্যাতসব খাবার। চা-কফিও বিনামূল্যে।’ বলছিলেন হোটেল মালিক ফাদি আইয়াদ।

ফাদি আরও জানান, তারা প্রায় প্রতিদিন তারা ৩০-৩৫ জনকে ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পর্যন্ত বিনামূল্যে পরিবেশন করে থাকেন। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত, সপ্তাহের সাতদিনই খোলা থাকে হোটেলটি।

‘ভারতীয়, পাকিস্তানি, আফ্রিকান, ইউরোপীয়সহ বিভিন্ন দেশীয় লোকেরা আমাদের হোটেলে আসেন। একজন অস্ট্রেলিয়ান মহিলা আছেন, তিনি আমাদের এখানে নিয়মিত খেতে আসেন। আমরা জানি তার কিছু সমস্যা আছে, আমরা তাকে খাবারের জন্য কখনই চার্জ করিনি।’ ফাদি বলছিলেন।

এভাবে ফ্রি খাইয়ে তার লোকসান হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ফাদি জানান, বরং এটি তার দায়িত্ব, যা তিনি তিন বছর আগে শুরু করেছিলেন। আর এটি তার ব্যবসা বাড়াতেই সহায়তা করেছে। ২০১১ সালে ‘ফল ও হুমুসে’র প্রথম শাখা খোলা হয়। এখন আল-বার্সায় তার মোট তিনটি শাখা রয়েছে। শারজার শেখ জায়েদ রোডে আরও একটি শাখা শীঘ্রই চালু হবে।

‘আমাদের ব্যবসাটা খাবার নিয়ে। অবশ্যই আমরা আর্থিক লাভের জন্য হোটেলটি চালু করেছিলাম। কিন্তু আমাদের তো কিছু নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে যাদের সামর্থ্য নেই তাদের জন্য। খাদ্য সবার মৌলিক অধিকার। আমরা চাই, কেউ ক্ষুধার্ত না থাকুক। আমরা যখন ক্ষুধার্ত ও অভাবী লোকদের খাবার খাওয়াই, আর খাবার শেষে তাদের চেহারায় যে হাসি ফুটে ওঠে, এতে আমরাও আনন্দ অনুভব করি। যা টাকা-পয়সা দিয়ে কেনা যায় না।’ বলছিলেন ফাদি।

ফাদি ১৯৯৯ সালে দুবাইয়ে প্রথম এসে হোটেল ব্যবসার দিকে নজর দেন। এর আগে তিনি ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করেছিলেন।

ফাদি বলেন, ‘আমাদের এখন অনেক বন্ধু-বান্ধব আছে। এখানে যারা খেয়ে যান, তারা আবার আমাদের কাছেই আসেন। আমরা তাদেরকে এধরণের মহৎ কাজের প্রেরণা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যে উৎসাহিত করি।’

খালিজ টাইমস থেকে অনূদিত

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড