• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর—৮

কুরবানির আগে যা জেনে রাখা প্রয়োজন

  মুনীরুল ইসলাম ইবনু যাকির

১০ আগস্ট ২০১৯, ১৪:১৪
Qurbani_8
ছবি : সংগৃহীত

কুরবানির জন্য পশু পূর্বেই নির্ধারণ করতে হবে। এই নির্ধারণকরণ প্রক্রিয়া কথা ও কাজ উভয়ভাবে হতে পারে। যেমন কুরবানির নিয়তে পশু ক্রয় করা অথবা মৌখিকভাবে বলা যে, ‘অমুক পশুটি আমি কুরবানির জন্য নির্ধারণ করলাম।’ কুরবানির জন্য পশু নির্দিষ্ট করা হলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সামনে আসে

১. কুরবানি ছাড়া এই পশু অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না, দান করা যাবে না, বিক্রি করা যাবে না। যেহেতু যা আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে তার ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নয়। তবে কুরবানি ভালোভাবে আদায় করার জন্য তার চেয়ে উত্তম পশু দ্বারা পরিবর্তন করা যাবে।

২. যদি পশুর মালিক মৃত্যুবরণ করেন তাহলে তার ওয়ারিশদের দায়িত্ব হলো এ কুরবানি বাস্তবায়ন করা। বরং তার ওয়ারিশগণ তা যবেহ করে নিজেরা খাবে, দান করবে ও উপঢৌকন দিবে।

৩. এ পশুর থেকে কোন ধরনের উপকার ভোগ করা যাবে না। যেমন দুগ্ধবতী হলে দুধ বিক্রি করা যাবে না, কৃষিকাজে ব্যবহার করা যাবে না, সওয়ারি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না, পশম বিক্রি করা যাবে না। যদি পশম আলাদা করে তবে তা সাদাকা করে দিতে হবে, তবে নিজের কোন কাজে ব্যবহার করতে পারবে, বিক্রি করে নয়।

৪. কুরবানি দাতার অবহেলা বা অযত্নের কারণে যদি পশুটি দোষযুক্ত হয়ে পড়ে (এমন ধরনের ত্রুটি যাতে কুরবানি সিদ্ধ হয় না) বা চুরি হয়ে যায় অথবা হারিয়ে যায় তাহলে তার কর্তব্য হবে অনুরূপ বা তার চেয়ে ভালো একটি পশু ক্রয় করা। আর যদি অবহেলা বা অযত্নের কারণে দোষযুক্ত না হয়ে অন্য কারণে হয়, তাহলে দোষযুক্ত পশু কুরবানি করলেও চলবে।

৫. যদি পশুটি হারিয়ে যায় অথবা চুরি হয়ে যায় আর কুরবানিদাতার ওপর পূর্ব থেকেই কুরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে সে কুরবানির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি লাভ করবে। আর যদি পূর্ব থেকে ওয়াজিব ছিল না কিন্তু সে কুরবানির নিয়তে পশু কিনে ফেলেছে তাহলে চুরি হয়ে গেলে বা মরে গেলে অথবা হারিয়ে গেলে তাকে আবার পশু কিনে কুরবানি করতে হবে।

৬. কুরবানির পশুর কোন অংশ (মাংস, চর্বি, দড়ি ইত্যাদি) বিক্রয় করা বৈধ হবে না। কারণ, তা আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদিত। ঐ পশুর কোন অংশ দ্বারা কসাইকে পারিশ্রমিক দেওয়া বৈধ নয়। যেহেতু সেটাও এক প্রকার বিনিময় যা ক্রয়-বিক্রয়ের মতো।[1]

অবশ্য কসাই গরিব হলে দান স্বরূপ অথবা গরিব না হলে হাদিয়া স্বরূপ তাকে কুরবানির গোশত দেওয়া বৈধ। যেহেতু তখন তাকে অন্য হকদারদের শামিল মনে করা হবে। বরং সেই অধিক হকদার হবে। কারণ সে ঐ কুরবানিতে কর্মযোগে শরিক হয়েছে এবং তার মনে ওর প্রতি আশা রয়েছে। তবে উত্তম হচ্ছে তার মজুরি আগেই মিটিয়ে দেবে এবং পরে কিছু দান বা হাদিয়া দেবে, যাতে কোন সন্দেহ ও গোলযোগই অবশিষ্ট না থাকে।[2]

৭. পশু ক্রয় করার পর যদি তার বাচ্চা হয়, তাহলে মায়ের সাথে তাকেও কুরবানি করতে হবে।[3]

আরও পড়ুন : কুরবানির পশু জবাই করার নিয়ম

চলবে...।


[1] বুখারি, আসসাহিহ : ১৬৩০; মুসলিম, আসসাহিহ : ১৩১৭

[2] আসকালানি, ফাতহুল বারি, ৩/৫৫৬

[3] তিরমিযি, আসসুনান : ১৫০৩

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড