ধর্ম ডেস্ক
কুরবানির পশুর দোষ অর্থাৎ কুরবানীর ক্ষেত্রে যা নিষিদ্ধ। এ সম্পর্কে রব্বুল আলামীন বলেন,
ذٰلِكَ وَمَن يُعَظِّمْ حُرُمٰتِ اللَّهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُۥ عِندَ رَبِّهِۦ ۗ وَأُحِلَّتْ لَكُمُ الْأَنْعٰمُ إِلَّا مَا يُتْلٰى عَلَيْكُمْ ۖ فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثٰنِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ
এটাই বিধান এবং কেহ আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত বিধানাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তার রবের নিকট তা উত্তম। তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে চতুস্পদ পশু, ঐগুলি ব্যতীত যা তোমাদেরকে বলা হয়েছে। সুতরাং তোমরা বর্জন কর মূর্তি পূজার অপবিত্রতা এবং দূরে থাক মিথ্যা বলা হতে। (২২হজ ৩০)
حُنَفَآءَ لِلَّهِ غَيْرَ مُشْرِكِينَ بِهِۦ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَآءِ فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِى بِهِ الرِّيحُ فِى مَكَانٍ سَحِيقٍ
আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে এবং তাঁর কোনো শরীক না করে। আর যে আল্লাহর শরীক করে সে যেন আকাশ হতে পড়ল, অতঃপর পাখী তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল, কিংবা বায়ু তাকে উড়িয়ে নিয়ে দূরবর্তী এক স্থানে নিক্ষেপ করল। (২২ হজ ৩১)
ذَٰلِكَ وَمَن يُعَظِّمْ شَعَٰٓئِرَ ٱللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقْوَى ٱلْقُلُوبِ
অর্থ- এটা শ্রবণযোগ্য কেউ আল্লাহর নামযুক্ত বস্তুসমুহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত। (সূরা আল হজ (الحجّ), আয়াত: ৩২)
لَكُمْ فِيهَا مَنَٰفِعُ إِلَىٰٓ أَجَلٍ مُّسَمًّى ثُمَّ مَحِلُّهَآ إِلَى ٱلْبَيْتِ ٱلْعَتِيقِ
অর্থ- চতুস্পদ জন্তুসমূহের মধ্যে তোমাদের জন্যে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত উপকার রয়েছে। অতঃপর এগুলোকে পৌছাতে হবে মুক্ত গৃহ পর্যন্ত।(সূরা আল হজ (الحجّ), আয়াত: ৩৩)
وَالْبُدْنَ جَعَلْنٰهَا لَكُم مِّن شَعٰٓئِرِ اللَّهِ لَكُمْ فِيهَا خَيْرٌ ۖ فَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهَا صَوَآفَّ ۖ فَإِذَا وَجَبَتْ جُنُوبُهَا فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْقَانِعَ وَالْمُعْتَرَّ ۚ كَذٰلِكَ سَخَّرْنٰهَا لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
এবং উৎসর্গীকৃত উষ্ট্রকে করেছি আল্লাহর নিদর্শনগুলির অন্যতম; তোমাদের জন্য তাতে মঙ্গল রয়েছে; সুতরাং সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান অবস্থায় ওগুলির ওপর তোমরা আল্লাহর নাম নাও। যখন ওরা কাত হয়ে পড়ে যায় তখন তোমরা তা হতে আহার কর এবং আহার করাও ধৈর্যশীল অভাবগ্রস্তকে ও যাঞ্চাকারী অভাবগ্রস্তকে। এভাবে আমি ওদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। (২২ হজ ৩৬)
لَن يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَآؤُهَا وَلٰكِن يَنَالُهُ التَّقْوٰى مِنكُمْ ۚ كَذٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلٰى مَا هَدٰىكُمْ ۗ وَبَشِّرِ الْمُحْسِنِينَ
আল্লাহর কাছে পৌঁছে না ওগুলির গোশত এবং রক্ত, বরং পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবে তিনি ওগুলিকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এ জন্য যে, তিনি তোমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং তুমি সুসংবাদ দাও সৎকর্মশীলদেরকে। (২২ হজ ৩৭)
আগের পর্ব পড়তে- আল কুরআনের দৃষ্টিতে হজ, ওমরা ও কুরবানির বিধান (পর্ব- ৩)
وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ ۚ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْىِ ۖ وَلَا تَحْلِقُوا رُءُوسَكُمْ حَتّٰى يَبْلُغَ الْهَدْىُ مَحِلَّهُۥ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ بِهِۦٓ أَذًى مِّن رَّأْسِهِۦ فَفِدْيَةٌ مِّن صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ ۚ فَإِذَآ أَمِنتُمْ فَمَن تَمَتَّعَ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْىِ ۚ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلٰثَةِ أَيَّامٍ فِى الْحَجِّ وَسَبْعَةٍ إِذَا رَجَعْتُمْ ۗ تِلْكَ عَشَرَةٌ كَامِلَةٌ ۗ ذٰلِكَ لِمَن لَّمْ يَكُنْ أَهْلُهُۥ حَاضِرِى الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوٓا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে হজ ও ওমরাহ সম্পূর্ণ কর; কিন্তু তোমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তাহলে যা সহজ প্রাপ্র তাই উৎসর্গ কর এবং কুরবানীর জন্তুগুলি স্বস্থানে না পৌঁছা পর্যন্ত তোমাদের মস্তক মুন্ডন কোরো না। কিন্তু কেহ যদি তোমাদের মধ্যে পীড়িত হয়, অথবা তার মস্তিস্ক যন্ত্রনাগ্রস্ত হয় তাহলে সে সিয়াম কিংবা সাদাকাহ অথবা কুরবানী দ্বারা ওর বিনিময় করবে, অতঃপর যখন তোমরা শান্তিতে থাকো তখন যে ব্যক্তি ওমরাহ্ ও হজ একত্রে কামনা করে তাহলে যা সহজ প্রাপ্য তা’ই উৎসর্গ করবে।
কিন্তু কেহ যদি তা প্রাপ্ত না হয় তাহলে হাজ্জের সময় তিন দিন এবং যখন তোমরা প্রত্যাবর্তিত হও তখন সাত দিন- এই পূর্ণ দশ দিন সিয়াম পালন করবে; এটা তারই জন্য- যার পরিজন পবিত্রতম মাসজিদে উপস্থিত না থাকে এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, আল্লাহ কঠিন শাস্তি দাতা। (২ বকারাহ ১৯৫)
সফর ছাড়া ভাগে কোরবানী করা যাবে কি ও কোরবানি সম্পর্কে চলমান কিছু ভুল-
عن جابر بن عبدالله قال نحرنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم عام الحديبية البدنة عن سبعة والبقرة عن سبعة
জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা হুদায়বিয়ার সনে উট সাতজনের পক্ষ থেকে এবং গরুও সাত জনের পক্ষ থেকে কোরবানী করেছিলাম। (সহীই মুসলিম হা- ২৩২২, আবুদাউদ হা- ২৮০৯, তিরমিযী হা- ১৪২২, ইবনু মাজাহ হা- ৩১৩২)
বর্তমানে আমাদের দেশে কেউ কেউ এজাতীয় বিশুদ্ধ হাদিস ও আসারকে তাদের মতের পক্ষে না হওয়ার কারণে ব্যাখ্যাবিহীন হাদিস বলে উড়িয়ে দিতে চান! আমরা বলতে চাই হাদিসইতো ব্যাখ্যা তার আবার ব্যাখ্যা কিসের?
তাছাড়া হাদীস বিশারদ মুহাদ্দিসগণ ও সাড়ে চৌদ্দ শত বছরের কোনো সালাফগণ ভাগা কুরবানীর সাথে সফরকে খাস করেছেন বলে আমরা জানতে পারি নাই। যেমন- ইমাম লাইস শরীকে কোরবানীকে সফরের সাথে খাস গণ্য করার প্রতিবাদে ইবনু হাযম বলেন, এই খাসকরণ একেবারেই অনর্থক। (আল-মোহাল্লা ৭/৩৮৫)
এ বিষয়ে কিছু লেখার ইচ্ছা ছিল না কারণ এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা মানে গৌন বিষয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বৈ কিছুই না। তথাপি কিছু ভাইয়ের অনুরোধে এতটুকু লিখলাম।
লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুসলিম উম্মাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড