ধর্ম ডেস্ক
আল কুরআন শব্দটির অর্থ পাঠ করা। অর্থাৎ যা অধিক পঠিত। পৃথিবীর সর্বাধিক পঠিত কিতাব হলো আল কুরআন। এ গ্রন্থটি অবতীর্ণ হয়েছে পাঠ করার জন্য। অবতীর্ণের দিক থেকে এর সর্বপ্রথম শব্দ হলো اقرأ 'পাঠ কর'। নিত পঠনীয়, বারবার পঠনীয় গ্রন্থ। মহান আল্লাহ বলেন,
اللَّهُ نَزَّلَ أَحْسَنَ الْحَدِيثِ كِتٰبًا مُّتَشٰبِهًا مَّثَانِىَ
আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম বাণী, সাদৃশ্যপূর্ণ একটি কিতাব (আল কুরআন), যা বারবার আবৃত্তি করা হয়। (যুমার ৩৯/২৩)
وَلَقَدْ ءَاتَيْنٰكَ سَبْعًا مِّنَ الْمَثَانِى وَالْقُرْءَانَ الْعَظِيمَ
আর আমি তো তোমাকে দিয়েছি পুনঃপুনঃ পঠিত সাতটি আয়াত ও মহান কুরআন। (হিজর ১৫/৮৭) এজন্যই এর নাম القرآن।
২) الايه- "আয়াত" অর্থ নিদর্শন। কুরআন মাজিদের শব্দ ও বাক্যসমূহ মহান আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ হিসাবে এগুলিকে আয়াত বা নিদর্শন বলা হয়। তবে "আয়াত" দ্বারা আল-কুরআন থেকে আরও কয়েকটি অর্থ বুঝা যায়, যথা-
(এক) কুরআনী বাক্য। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন,
مَا نَنسَخْ مِنْ ءَايَةٍ أَوْ نُنسِهَا نَأْتِ بِخَيْرٍ مِّنْهَآ أَوْ مِثْلِهَآ ۗ أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
আমি যে আয়াত তথা বাক্য রহিত করি কিংবা ভুলিয়ে দেই, তার চেয়ে উত্তম কিংবা তার মতো আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জানো না যে, আল্লাহ সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান? (বাকারা ২/১০৬) আরও দেখুন- নাহাল- ১৬/১০১, যাচিয়া- ৪৫/৮, মুমিনুন-২৩/৬০
(দুই) দলীল, প্রমাণ ও হুজ্জত। যেমন রব্বুল আল আমীন বলেছেন,
وَمِنْ ءَايٰتِهِۦ مَنَامُكُم بِالَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَابْتِغَآؤُكُم مِّن فَضْلِهِۦٓ ۚ إِنَّ فِى ذٰلِكَ لَءَايٰتٍ لِّقَوْمٍ يَسْمَعُونَ
আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাতে ও দিনে তোমাদের নিদ্রা এবং তাঁর অনুগ্রহ থেকে তোমাদের (জীবিকা) অন্বেষণ। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা শোনে। (রুম ৩০/২৩)
وَمِنْ ءَايٰتِهِۦٓ أَنَّكَ تَرَى الْأَرْضَ خٰشِعَةً فَإِذَآ أَنزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَآءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ ۚ إِنَّ الَّذِىٓ أَحْيَاهَا لَمُحْىِ الْمَوْتٰىٓ ۚ إِنَّهُۥ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
তাঁর আরেকটি নিদর্শন হলো এই যে, তুমি জমিনকে দেখতে পাও শুষ্ক-অনুর্বর, অতঃপর যখন আমি তার উপর পানি বর্ষণ করি তখন তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয়। নিশ্চয়ই যিনি জমিনকে জীবিত করেন তিনি মৃতদেরও জীবিতকারী। নিশ্চয় তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। (ফুসসিলত ৪১/৩৯)
(তিন) মু'জিযা তথা অলৌকিক বিষয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
فَلَمَّا جَآءَهُم مُّوسٰى بِـَٔايٰتِنَا بَيِّنٰتٍ قَالُوا مَا هٰذَآ إِلَّا سِحْرٌ مُّفْتَرًى وَمَا سَمِعْنَا بِهٰذَا فِىٓ ءَابَآئِنَا الْأَوَّلِينَ
অতঃপর মূসা যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো নিয়ে আসল, তখন তারা বলল, ‘এ তো মিথ্যা জাদু ছাড়া আর কিছুই নয় এবং এরূপ কথা আমাদের পিতৃপুরুষদের মধ্যেও শুনিনি। (কাসাস- ২৮/৩৬)
وَإِن يَرَوْا ءَايَةً يُعْرِضُوا وَيَقُولُوا سِحْرٌ مُّسْتَمِرٌّ
আর তারা কোনো নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, ‘চলমান জাদু’। (কামার- ৫৪/২)
(চার) উপদেশ বা শিক্ষা। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
قَالَ كَذٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَىَّ هَيِّنٌ ۖ وَلِنَجْعَلَهُۥٓ ءَايَةً لِّلنَّاسِ وَرَحْمَةً مِّنَّا ۚ وَكَانَ أَمْرًا مَّقْضِيًّا
সে বলল, ‘এভাবেই। তোমার রব বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজ। আর যেন আমি তাকে করে দেই মানুষের জন্য নিদর্শন এবং আমার পক্ষ থেকে রহমত। আর এটি একটি সিদ্ধান্তকৃত বিষয়’। (মারইয়াম- ২১/১৯)
وَقَوْمَ نُوحٍ لَّمَّا كَذَّبُوا الرُّسُلَ أَغْرَقْنٰهُمْ وَجَعَلْنٰهُمْ لِلنَّاسِ ءَايَةً ۖ وَأَعْتَدْنَا لِلظّٰلِمِينَ عَذَابًا أَلِيمًا
আর নূহের কওমকে, যখন তারা রাসূলদেরকে অস্বীকার করল, আমি তাদেরকে ডুবিয়ে দিলাম এবং তাদেরকে মানুষের জন্য নিদর্শন বানিয়ে দিলাম। আর আমি যালিমদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি যন্ত্রণাদায়ক আযাব। (ফুরকান- ২৫/৩৭)
فَالْيَوْمَ نُنَجِّيكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُونَ لِمَنْ خَلْفَكَ ءَايَةً ۚ وَإِنَّ كَثِيرًا مِّنَ النَّاسِ عَنْ ءَايٰتِنَا لَغٰفِلُونَ
‘সুতরাং আজ আমি তোমার দেহটি রক্ষা করব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। আর নিশ্চয় অনেক মানুষ আমার নিদর্শনসমূহের ব্যাপারে গাফেল’। (ইউনুস- ১০/৯২)
চলবে...
লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুসলিম উম্মাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড