ধর্ম ডেস্ক
সর্বপ্রথম শিরকের সূচনা হয় নূহ (আ:) এর জাতির মধ্যে। আল্লাহ্ তাআলা নূহ (আ:) কে তাদের মাঝে নবী হিসেবে প্রেরণ করলেন। তিনি তাদেরকে আল্লাহ্র সাথে শিরক করতে নিষেধ করলেন। যে ব্যক্তি তার আনুগত্য করে আল্লাহ্র একত্বকে মেনে নিল, সে মুক্তি পেল। আর যে শিরকের উপর প্রতিষ্ঠিত রইল, আল্লাহ্ তাকে মহাপ্লাবনের মাধ্যমে ধ্বংস করে দিলেন।
নূহ (আ:) এর পর মানুষ বহুকাল তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। তারপর ইবলিস আবার তাওহীদ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠল। ফলে মানুষের মাঝে আবার শিরক ছড়িয়ে পড়ল। আল্লাহ্ যুগে যুগে নবী-রাসূল প্রেরণ করতে থাকলেন। তাঁরা মানুষকে জান্নাতের সুসংবাদ দিলেন এবং জাহান্নামের ভয় দেখালেন। শেষ পর্যন্ত মুহাম্মাদ (সর্বশেষ নবী হিসেবে প্রেরণ করা হলো। তিনি মানুষকে তাওহীদের প্রতি আহ্বান জানালেন। মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করলেন। মূর্তি ভেঙ্গে চুরমার করলেন।
রাসূল ওফাতের পর মানুষ তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে চলতে থাকল। এরপর কিছু লোকের মধ্যে আবার শিরকের প্রকাশ ঘটল। যার মূল কারণ ছিল ওলী-আওলিয়া এবং নেক লোকদের প্রতি সম্মান ও ভালবাসার ক্ষেত্রে অতিরঞ্জন। ফলে তাদের কবরসমূহে ঘর তৈরি হলো, বানানো হলো, বিবেক বর্জিতভাবে কবরে মোমবাতি-আগরবাতি জ্বালানো হলো।
কবরকে পাকা করেই শেষ নয়, তাকে লাল/সবুজ কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হলো, ওপরে টানানো হলো মশারী (কি হাঁস্যকর ব্যাপার!) এবং শেষে শুরু হলো সে সমস্ত কবরে প্রকাশ্য শিরক। মানুষ তাদের কাছে দোয়া চায়। তাদের কাছে বিপদ-আপদে উদ্ধার কামনা করে, সন্তান পাওয়ার আশায় তাদের মাজারে ধর্ণা দেয়, তাদের মাজারকে উদ্দেশ্য করে নযর-মানত করে।
তারা এ শিরকের নাম রাখল নেক লোকদের ওসীলা বা মধ্যস্থতা। তাদের ধারণা অনুযায়ী এ হলো নেক লোকদের প্রতি ভালোবাসা। তারা মনে করল, এভাবে তাদেরকে ভালবাসলে এবং তাদের কবর সমূহকে সম্মান করলে আল্লাহ্র নৈকট্য পাওয়া যাবে। তারা ভুলে গেল ঠিক এ কথাই ছিল প্রথম যুগের মুশরিকদের। মূর্তী পূজা সম্পর্কে তারা বলেছিল,
( مَا نَعْبُدُهُمْ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَا إِلَى اللَّهِ زُلْفَى)
আমরা তো তাদের ইবাদত এজন্যই করি যে, তারা (এ মূর্তিগুলো) আমাদেরকে আল্লাহ্র নৈকট্য দান করবে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো আপনি যদি বর্তমান যুগের কবর পূজারী এ মুশরিকদের কর্যাবলীর প্রতিবাদ করতে যান, তারা আপনাকে বলবে, আমরা তো তাওহীদ পন্থী, আমাদের পালনকর্তার ইবাদত করি। তারা ভাবে তাওহীদ অর্থ একথা দেওয়া যে, আল্লাহ্র অস্তিত্ব আছে, তিনি স্রষ্টা, হায়াত-মওতের মালিক, আর তিনিই ইবাদত পাওয়ার বেশী হকদার অন্যরা নয়।
তাওহীদ সম্পর্কে এটি একটি ভুল ধারণা। কেননা এ অর্থ অনুযায়ী আবু জাহাল, আবু লাহাবও ছিল তাওহীদপন্থী। কেননা তারা বিশ্বাস করত যে, আল্লাহ্ই সবচেয়ে বড় মাবুদ। তিনি সব ইবাদতের হকদার। কিন্তু তারা আল্লাহ্র সাথে অন্য মাবুদকে শরীক করত, এই বিশ্বাসে যে, তারা (ঐ মাবুদগণ) তাদেরকে আল্লাহ্র কাছে পৌঁছিয়ে দিবে, তাদের জন্য আল্লাহ্র কাছে সুপারিশ করবে।
লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুসলিম উম্মাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড