• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রমজান মাস তাকওয়া অর্জনের সময়

  সুলতান মাহমুদ বান্না

২৪ মে ২০১৯, ২০:৪১

আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি (রমজান মাসের) সিয়াম ফরজ করা হলো, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।” (সূরা বাক্বারাহ- ১৮৩)। তাকওয়া শব্দটি পবিত্র কুরআনে বহুল পরিচিত ও ব্যবহৃত শব্দ। এর অর্থ হলো- আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। সকল ইবাদতের মৌলিক বৈশিষ্ট্যই হলো তাকওয়া তথা আল্লাহ ভীতি মেনে চলা। উক্ত আয়াতের মর্ম অনুযায়ী রমজানের সিয়ামের মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশ মতো যাবতীয় ইবাদত পালন করা সহজ হয়। কারণ ইবাদত কবুল বা যথার্থ হওয়ার অন্যতম বাধা হলো জড়বাদী ভোগের লালসা। আর সিয়াম নামের ইবাদতের মাধ্যমে এই ভোগের লালসা বা প্রবৃত্তি নিবারণের প্রশিক্ষণ হয়, অর্জন হয় তাকওয়া।

মানুষেরা আত্মার চাহিদা হলো ইবাদত, আর দৈহিক চাহিদা পূরণের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে, জিহ্বা আর লজ্জাস্থান। প্রধানত এ দুটি অঙ্গের অবাধ চাহিদা পূরণের জন্যেই মানুষ পরকাল সম্পর্কে উদাসীন হয়ে আত্মার চাহিদা তথা ইবাদত বর্জন করে। এ প্রসঙ্গেই রাসূল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি এ দুটি অঙ্গের জিম্মাদার হতে পারবে, আমি তাকে জান্নাতে পৌঁছাবার জিম্মাদার হতে পারব।”

জিহ্বার চাহিদা হচ্ছে খাদ্য গ্রহণ, আর লজ্জাস্থানের চাহিদা হচ্ছে যৌন ক্ষুধা নিবারণ। রমজান ব্যতীত বাকি এগারোটি মাস হালাল উপায়ে এ দুটি অঙ্গের চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য কোনো ধরাবাধা নিয়ম বা সময় নেই। বরং রাতদিন নির্বিশেষে যখন ইচ্ছা তখনই খেতে পারে, যখন ইচ্ছা তখনই সহবাসে লিপ্ত হতে পারে। এ কারণে মানুষ যতই উন্নত মানের খাদ্য বা জীবনযাপন করতে চাই, ততই আরও উন্নত মানের খাদ্য বা জীবনযাপন চাহিদা বাড়তে থাকে। এ ক্রমবর্ধমান লালসা মিটাতে হালাল-হারাম যাচাইয়ের উপায় থাকে না। একমাত্র কারণ ভোগের লালসা মানুষকে পর্যায়ে হালালের সীমা পেরিয়ে হারাম অর্জনে উদ্বুদ্ধ করে। অপরদিকে যৌন উপভোগের অবস্থাও তদ্রুপ। বৈধ ও অবৈধ বিবেচনা না করে যৌন আচরণের লালসা জাগে। এ নিজের লালসা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হারাম উপায় অবলম্বন করে।

এসবের মূলে একমাত্র কারণ হচ্ছে, মানুষের দুটি অঙ্গের অবাধ ভোগের লালসা। এগুলোকে দমন করার জন্য রমজানের রোজার কোনো বিকল্প নেই। এগারোটি মাস পর্যন্ত দেহের খাদ্য দিন রাত নির্বিশেষে অবাধে দেওয়ার সুযোগ পাওয়ায় তার মধ্যে ক্রমান্বয়ে দৈহিক ভোগের লালসা বাড়তে থাকে। এ লালসার তাড়নায় কেউ আত্মার খাদ্য ইবাদত বন্ধ করে দিয়ে অবৈধ উপায়ে দৈহিক ভোগে লিপ্ত হয়। আর কেউ ইবাদত বন্ধ করে না দিলেও তাতে অলসতা এবং দৈহিক অবৈধ ভোগে লিপ্ত না হলেও তার প্রবৃত্তি সে দিকে উঁকি মারতে থাকে। কিন্তু কীভাবে আমাদের এই ভোগের লালসা থেকে মুক্তি হতে পারে তার একটাই মাধ্যম, রমজানে তাকওয়া অর্জন। প্রকৃত তাকওয়া অর্জনের লক্ষ্যে রমজানের সিয়ামকে সঠিকভাবে পালন করতে হবে। এর ফলে মানুষ জাগতিক লোভ লালসা, সম্পদ, টাকাপয়সা, বাড়ি-গাড়ি অর্জনের ধ্বংসকারী ব্যাধি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সুযোগ লাভ করে মুত্তাকি হতে পারবে এবং পরকালীন মুক্তি লাভ করবে।

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড